Skip to content

সাইলেজ কি? সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি বা কাঁচা ঘাস সংরক্ষণের পদ্ধতি

সাইলেজ কি, সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি বা কাঁচা ঘাস সংরক্ষণের পদ্ধতি

(১) সাইলেজ কি? কাঁচা ঘাস সংরক্ষণের পদ্ধতি

শুকনা মৌসুমে গো-খাদ্যের অভাব ঘটে। তাই বর্ষাকালে যখন ঘাস প্রচুর জন্মে, তখনই শুকনা মৌসুমের জন্য গো-খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হয়। এ জন্য কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

সাইলেজ কি: কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতিকে সাইলেজ বলা হয়। এতে ঘাসের পুষ্টিমানের কোনো পরিবর্তন হয় না। যে নির্দিষ্ট স্থানে বা গর্তে ঘাস সংরক্ষণ করা হয়, তাকে বলা হয় সাইলোপিট। সাইলোপিটে বায়ুরোধক অবস্থা তৈরি করতে হয়। বায়ুরোধক অবস্থায় ঘাসে ল্যাকটিক এসিড তৈরি হয়। এই ল্যাকটিক এসিড কাঁচা ঘাস সংরক্ষণে কাজ করে।

  • কাঁচা ঘাসের গুরুত্ব অনেক। শীতকালে অনেক স্থানেই ঘাসের অভাব দেখা দেয়। তখন পশুকে মানসম্মত খাবার প্রদান কষ্টকর হয়। তাই বর্ষাকালে কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ করে গবাদি পশুর খাদ্যের অভাব পূরণ করা যায়।
  • সাইলেজের গুণাগুণ কাঁচা ঘাসের মতো। কাঁচা ঘাসের গুণসম্পন্ন সাইলেজে গবাদি পশুর দুধ উৎপাদন বাড়ে।
  • যেসব ঘাসে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে, সেসব ঘাস সাইলেজের জন্য ভালো। কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ বা সাইলেজের জন্য উন্নত জাতের কাঁচা ঘাস যেমন: প্যারা, নেপিয়ার, জার্মান, গিনি, ভুট্টা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তবে ভুট্টার সাইলেজ অনেক ভালো।
  • কাঁচা ধানের খড় ও কাঁচা ঘাস ১:৫ অনুপাতে মিশিয়ে সাইলেজ তৈরি করা যেতে পারে।
  • সাইলোপিট তৈরির স্থান নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমন স্থানে সাইলোপিট তৈরি করতে হবে, যেখানে বৃষ্টির পানি জমে থাকে না এবং ঘাসের অভাব হয় না। সাইলোপিট কাঁচা-পাকা দুই-ই হতে পারে।

(২) সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি

চিত্র- কাঁচা পিটে (গর্তে) সাইলেজ তৈরির পক্রিয়া চলছে
চিত্র- কাঁচা পিটে (গর্তে) সাইলেজ তৈরির পক্রিয়া চলছে

নিচে কাঁচা পিটে (গর্তে) সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি আলোচনা করা হলো-

  1. কাঁচা ঘাস সংরক্ষণের জন্য প্রথমেই শুকনা ও উঁচু জায়গা নির্ধারণ করতে হবে।
  2. নির্ধারিত স্থানে ১ মিটার গভীর, ১ মিটার প্রস্থ এবং ১ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি গর্ত তৈরি করতে হবে।
  3. ১ ঘন মিটার একটি গর্ভে প্রায় ৭০০ কেজি কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ করা যায়।
  4. কাঁচা ঘাসের শতকরা ৩-৪ ভাগ চিটাগুড় মেপে একটি চাড়িতে নিতে হবে।
  5. এরপর চিটাগুড়ের সাথে সমপরিমাণ পানি মিশাতে হবে।
  6. গর্ভের তলায় পলিথিন বিছালে ভালো হয়। পলিথিন না বিছালে পুরু করে খড় বিছাতে হবে এবং চারপাশে ঘাস সাজানোর সাথে সাথে খড়ের আস্তরণ দিতে হবে।
  7. এরপর ধাপে ধাপে ৭০০ কেজি কাঁচা ঘাস দিয়ে ২০-৩০ কেজি শুকনা খড় দিতে হবে।
  8. প্রতিটি ঘাসের ধাপে ১৫ থেকে ২০ কেজি চিটাগুড়-পানির মিশ্রণ সমভাবে ছিটাতে হবে।
  9. এভাবে ধাপে ধাপে ঘাস ও খড় বিছিয়ে ভালোভাবে পা দিয়ে পাড়াতে হবে, যাতে বাতাস বেরিয়ে যায়।
  10. ঘাস সাজানো শেষ হলে খড়ের আস্তরণ দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
  11. সর্বশেষে পলিথিনের উপর ৭.৫ ১০ সেমি মাটি পুরু করে দিতে হবে।
  12. আকালের সময় (অক্টোবর-নভেম্বর) সংরক্ষিত কাঁচা ঘাস বা সাইলেজ গরুকে খেতে দিতে হবে। পিটের একদিক থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে ঘাস বের করতে হবে। এর স্বাদ ও গন্ধ ভালো হওয়ায় গবাদি পশুরা এভাবে সংরক্ষিত কাঁচা ঘাস খেতে খুবই পছন্দ করে।
See also  সাইলেজ কি? সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য? সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি ও সাইলেজ তৈরিতে সাবধানতা

কৃষি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট কৃষি’ (inbangla.net/krisi) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts