Skip to content

 

রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য ও রজনীগন্ধা ফুল চাষ পদ্ধতি এবং পরিচর্যা

রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য ও রজনীগন্ধা ফুল চাষ পদ্ধতি এবং পরিচর্যা

সানা ও সুবাসিত রজনীগন্ধা ফুলটি আমাদের সকলের প্রিয় একটি ফুল। রাতের বেলা এ ফুল সুগন্ধ ছড়ায় বলে একে রজনীগন্ধা বলে। রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য সমূহ ভালো হওয়াই উৎসব, অনুষ্ঠান, গৃহসজ্জা, তোড়া, মালা, অঙ্গসজ্জার ফুলটি বেশি ব্যবহৃত হয়। সারা বছর রজনীগন্ধা ফুলের মালা পাওয়া যায়। তবে শীতে একটু কম পাওয়া যায়। এছাড়া এই ফুল থেকে সুগন্ধী তৈরী হয়।

ফুলের পাপড়ির সারি অনুসারে রজনীপথাকে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। যেসব জাতে পাপড়ি এক সারিতে থাকে তাকে সিঙ্গেল বলে। পাপড়ি দুই বা ততোধিক সারিতে থাকলে ডাবল বলে।

এখানে রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য ও রজনীগন্ধা ফুল চাষ পদ্ধতি এবং পরিচর্যা সমূহ সহজভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

(১) রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য

চিত্র- ফুলসহ রজনীগন্ধা গাছ
চিত্র- ফুলসহ রজনীগন্ধা গাছ

রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য হলো-

  • সাধারণত ফুল সতেজ থাকে  ৪-৫ দিন পর্যন্ত।
  • এর উন্নত মানের কন্দ।
  • এই ফুল রাতে ফোঁটে।
  • রজনীগন্ধা একটি কন্দাল ফুল।
  • প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে।
  • রজনীগন্ধা ফুলের পাপড়ি একটি কিংবা দুই/তিন সারিতে বিস্তৃত হয়। এর রং সাদা হয়। তবে কিছু কিছু ফুলে সাদার সাথে হাল্কা বাদামী রং এর একটা শেড দেখা যায়।
  • রজনীগন্ধার কয়েকটি জাত বা শ্রেণী বর্তমান। যেমন-
    সিঙ্গল: এই রজনীগন্ধা ফুলের পাঁপড়ি একটি সারিতে থাকে।
    সেমি-ডবল: এই রজনীগন্ধা জাতের ফুলের পাঁপড়ি দুই বা তিন সারিতে থাকে। ডবল: এই রজনীগন্ধা ফুলের তিন-এর অধিক পাঁপড়ির সারি থাকে।
    ভ্যারিগেটেড জাত: এই রজনীগন্ধা ফুলের পাতায় হলুদাভ রেখা দেখা যায়৷
  • রজনীগন্ধা গাছের চাষের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া প্রয়োজন। গড় তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রী থেকে ৩০ ডিগ্রী হলে ভাল।
  • সারাবছর রজনীগন্ধা চাষ করা যায়। তবে শীতকালে রজনীগন্ধা ফুলের উৎপাদন কমে যায়। গ্রীষ্মকাল ও বর্ষাকালে এর ভাল চাষ হয়।
  • কন্দ লাগাবার উত্তম সময় অক্টোবর হতে মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত। মার্চের মধ্য থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত।
  • রজনীগন্ধাফুল চাষের জন্য মাঝারি ও বড় আকারের টব যে কোনো হলেই চলবে। একটি টবে ২টি কন্দ লাগানো যায়।
See also  রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি

(২) রজনীগন্ধা ফুল চাষ পদ্ধতি এবং পরিচর্যা

ক) বংশবিস্তার:

  • বাংলাদেশে কদ থেকে রজনীগন্ধার বংশবিস্তার করা হয়।
  • কন্দগুলো দেখতে পেঁয়াজের মতো। শীতকালে এগুলো মাটির নিচে সুপ্ত অবস্থায় থাকে।শীতের শেষে কন্দের ঝাড়গুলো বের করে কন্দ আলাদা করা হয়।
  • রোপণের জন্য ২-৩ সেমি আকারের কদ হলেই চলে।

খ) কন্দ রোপণ:

চিত্র- কন্দ
চিত্র- কন্দ
  • রজনীগন্ধার জন্য পর্যাপ্ত আলো-বাতাসযুক্ত জমি নির্বাচন করা উচিত।
  • দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটিতে রজনীগদ্ধা ভালো জন্মে।
  • ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে কন্দ রোপণ করা হয়।
  • সারি থেকে সারির দূরত্ব ২৫-৩০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১০-১৫ সেমি হিসেবে কন্দগুলো ৪-৫ সেমি গভীরতায় বসাতে হবে।
  • কন্দ বসানোর ৩-৪ মাস পর গাছ ফুল দেয়।

গ) সার প্রয়োগ: ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। জমি তৈরির সময় হেক্টর প্রতি ১০ টন পচা গোবর, ২০০ কেজি ইউরিয়া, ৩০০ কেজি টিএসপি, ৩৫০ কেজি এমওপি সার ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। কন্দ রোপণের ৩০-৪৫ দিন পর আবার ১২৫ কেজি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করে সেচ দিতে হবে।

ঘ) আন্তঃপরিচর্যা:

  • রজনীগন্ধার জমিতে সব সময় পর্যাপ্ত রস থাকা দরকার। আবার পানি জমাও উচিত নয়, পানি জমলে কন্দগুলো পচে যেতে পারে। সেজন্য জমির অবস্থা বুঝে সেচ দেওয়া দরকার।
  • কন্দ রোপণে ঠিক পরে একবার, গাছ গজানোর পরে একবার ও গাছের উচ্চতা ১০-১৫ সেমি হলে আরেকবার সেচ নিতে হবে।
  • এছাড়া ফুল ফোটা শুরু হলে, দুই-একবার সেচ দিলে বেশি করে ফুল ফোটে এবং ফুল ঝরাও কমে যায়।
  • প্রতিবার সেচের পর, জমিতে জো এলে নিড়ানি দিয়ে মাটির চটা ভেঙ্গে দিতে হবে।
  • রজনীগন্ধা গাছে ক্ষতিকারক পোকামাকড় তেমন দেখা যায় না। তবে বর্ষাকালে ছত্রাকজনিত গোড়া পচা রোগ অনেক সময় বেশ ক্ষতি করে। এ রোগের কারণে গাছের নিচের দিকে মাটির কাছে পচন ধরে ও গাছ শুকিয়ে মারা যায়। এ রোগ সমনের জন্য জমিতে যাতে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আক্রান্ত গাছের গোড়ার মাটিতে শতক প্রতি টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করে নিতে হবে।
See also  রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য ও চাষ পদ্ধতি

ঙ) ফুল কাটা:

চিত্র- রজনীগন্ধা
চিত্র- রজনীগন্ধা
  • বাজারে রজনীগন্দা বিক্রি হয় মূলত লম্বা পুষ্পদণ্ড বা ডাঁটাসহ অথবা ডাঁটা ছাড়া করা ফুল হিসেবে। ঝরা ফুল মালা তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • ফুল ফোটার পূর্বে ফুলের ডাঁটাসহ কেটে ফুল সংগ্রহ করা হয়।
  • সন্ধ্যা বা ভোরের দিকে ফুল কাটা ভালো।
  • কাটার পর ডাঁটার নিচের অংশ পানিতে ডুবিয়ে রাখা উচিত। এতে ফুলের সতেজতা ও উজ্জ্বলতা বজায় থাকে।
  • ডাঁটাসহ ফুল আঁটি বেঁধে কালো পলিথিনে জড়িয়ে বাজারে পাঠানো উচিত।

আজকের এই আলোচনাটি এখানেই সমাপ্ত হচ্ছে। আশা করি আমরা রজনীগন্ধা ফুলের বৈশিষ্ট্য ও রজনীগন্ধা ফুল চাষ পদ্ধতি এবং পরিচর্যা সমূহ জানতে ও বুঝতে পেরেছি। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ফুল, ফুল, সবড়ি, শস্য, গাছ, পশু, পাখি ইত্যাদি পালন ও চাষ সম্পর্কি সকল তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিট ভিজিট করুন। পোষ্ট ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট ও স্যোসাল মিডিয়াতে শেয়ার করে দিবেন। শেষ অবধি সাথেই থাকার জন্য ধন্যবাদ।

[সূত্র: এনসিটিবি]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts

You cannot copy content of this page