বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ তাদের জীবন ও জীবিকার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। শুধু মানুষ নয়, সমস্ত গবাদি পশুর খাদ্য আসে কৃষি থেকে। জাতীয় আয়ের প্রায় ১৬ ভাগ আসে কৃষি থেকে। দেশের বৃহত্তর শিল্পগুলোও কৃষির উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। ফসল, গবাদি পশু, পোল্ট্রি, মৎস্য ও বনরাজি ইত্যাদি ক্ষেত্র নিয়ে বিস্তৃত বাংলাদেশের কৃষি।
এ আলোচনাটির মাধ্যমে আমরা- কৃষি কী, কৃষি বলতে কি বুঝায় তা সম্পর্ক অবগত হতে পারবেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব, বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান, বাংলাদেশে কৃষির গুরুত্ব ও ক্ষেত্রসমূহ সম্পর্কে জানতে পারবেন। সর্বপরি, বাংলাদেশের কৃষি সম্পরেক একটা সম্পষ্ট ধারণা অর্জন করতে পারবেন।
(১) কৃষি কী? কৃষি বলতে কি বুঝায়?
কৃষি কী: প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসল, ডিম, মাছ ও মাংসের উৎপাদন, প্রতিরক্ষা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ এবং উৎপাদিত ফসল ও পণ্যর গুণগত মান উন্নয়নের জন্য জ্ঞানের ব্যবহারকে কৃষি বলে।
কৃষি বলতে কি বুঝায়: মূলত, কৃষি বলতে ফসল, ডিম, মাছ ও মাংস উৎপাদনের উদ্দেশ্যে চাষাবাদকে বুঝায়। অর্থসামাজিক উন্নয়নের মূল উপাদান হল কৃষি।
কৃষি শিক্ষা কাকে বলে: বিজ্ঞানের যে শাখায় কৃষির উৎপাদন প্রযুক্তি ও কৃষি বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়াদি জানা যায় তাকে কৃষি শিক্ষা বলে। ফসল, পশু পাখি, বন ও মাছ প্রভৃতি কৃষি শিক্ষার প্রধান বিষয়।
কৃষির প্রধান উপাদান কি: কৃষির প্রধান উপাদান হল মাটি। অর্থাৎ মাটিকে ব্যবহার করে যে কোন উৎপাদনকে কৃষি বলে অবহিত করা যায়। যেমন- মাছ চাষ। মাছ চাষের জন্য পুকুরের প্রয়োজন, আর পুকুরের গুণগত মান মাটির গুণগত মানের উপর নির্ভর করে। অতএব, মাছ চাষকেও কৃষি বলা যাবে।
কৃষি বিপ্লবের বিভিন্ন ধাপ: আজকে কৃষি যে অবস্থায় আছে তা একসময় এমন ছিল না। কৃষি কয়েকটা ধাপ অতিক্রম করে আজকের অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। যেমন-
- আদি ধাপ।
- পশু শিকার ধাপ।
- আগুন ও লোহার হাতিয়ারের ব্যবহার ধাপ।
- পশুপালন ধাপ।
- ফসল উৎপাদন ধাপ
- আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি।
(২) বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব
নিচে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরা হলো-
ক) কর্মসংস্থান
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ তাদের কর্মসংস্থানের জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল। নিচে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কৃষির গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।
- বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেকের বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রধান উৎস কৃষিকাজ।
- দেশের প্রায় ৪৭% শ্রমিক কৃষিকাজে নিয়োজিত (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, ২০১৬)।
- দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০-৮০% লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল।
- কৃষিপণ্য নির্ভর বিভিন্ন শিল্প কারখানায় অনেক লোকের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে।
- আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়। আর এক্ষেত্রে কৃষির বিভিন্ন শাখা যেমন গবাদি পশু পালন, ফুল ফল চাষ, মুরগি পালন, মাছ চাষ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ আত্মকর্মসংস্থানের জন্য কৃষির ভূমিকা অনস্বিকার্য।
- দক্ষ ও অদক্ষ উভয় প্রকার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের উৎস হল কৃষি।
খ) শিল্প ও বাণিজ্য
শিল্পক্ষেত্রে কৃষির বহুমুখী ব্যবহার আছে। নিচে তা আলোচনা করা হলো।
- বাংলাদেশের অনেক শিল্পের কাঁচামাল আসে কৃষিজাত পণ্য হতে। যেমন পাট, চা, বস্ত্র, কাগজ, চিনি, চামড়া, খাদ্য ইত্যাদি।
- শিল্পজাত কৃষি পণ্য বেশি উৎপাদনের মাধ্যমে শিল্প কারখানার উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। ফলে শিল্পের তথা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ফলশ্রুতিতে বেকার সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে।
- কৃষিপণ্যের উপর নির্ভরশীল শিল্প কারখানার পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
(৩) বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান
নিচের সারণিতে বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান তুলে ধরা হলো-
খাত | ২০১৩-২০১৪: জিডিপিতে কৃষির অবদান (%) | ২০১৪-২০১৫: জিডিপিতে কৃষির অবদান (%) | ২০১৫-২০১৬: জিডিপিতে কৃষির অবদান (%) |
১. কৃষি ও বনজ | ১২.৮১ | ১২.৩২ | ১১.৬৮ |
ক. শস্য ও শাকসবজি | ৯.২৮ | ৮.৮৭ | ৮.৩২ |
খ. প্রাণি সম্পদ | ১.৭৮ | ১.৭৩ | ১.৬৬ |
গ. বনজ সম্পদ | ১.৭৪ | ১.৭২ | ১.৬৯ |
২. মৎস্য সম্পদ | ৩.৬৯ | ৩.৬৯ | ৩.৬৫ |
মোট = | ১৬.৫ | ১৬.০১ | ১৫.৩৩ |
(৪) বাংলাদেশে কৃষির গুরুত্ব
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে দেশজ অর্থনীতি। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের মুল উপাদান হল কৃষি।
বাংলাদেশের প্রায় শতকরা ৭০-৮০ ভাগ লোক গ্রামে বাস করে এবং তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে যুক্ত। ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ছিল শতকরা ১৫.৩৩ ভাগ (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা, ২০১৬)।
দেশের মোট শ্রমশক্তির শতকরা প্রায় ৪৭ ভাগ সরাসরি এবং ৮০ ভাগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষি খাতে নিয়োজিত। দেশের মোট রপ্তানিতে কৃষি জাত পণ্য যেমন- কাঁচাপাট, পাটজাত দ্রব্য, চিংড়ি চামড়া ও চা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নিচে বাংলাদেশের কৃষির গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
মানুষের মৌলিক চাহিদা বলতে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, ও শিক্ষাকে বুঝায়। এছাড়াও অন্যান্য চাহিদার মধ্যে রয়েছে আসবাবপত্র, জ্বালানি, চিত্তবিনোদন ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণে কৃষি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ক) মৌলিক চাহিদা পূরণ
নিচে মৌলিক চাহিদা পূরণে কৃষির ভূমিকা আলোচনা করা হলো-
- খাদ্য: মানুষের প্রথম মৌলিক চাহিদা হল খাদ্য। আর খাদ্যের জন্য আমরা সম্পূর্ণরূপে কৃষির উপর নির্ভরশীল। খাদ্যের বেশিরভাগ আসে কৃষি হতে। যেমন চাল, ডাল, গম, ভুট্টা, মাছ, শাকসবজি, মাংস ইত্যাদি। সুতরাং আমরা বেঁচে থাকার জন্য সম্পূর্ণরূপে কৃষির উপর নির্ভরশীল।
- বস্ত্র: বস্ত্র মানুষের দ্বিতীয় মৌলিক চাহিদা। লজ্জা ও শীত নিবারণের জন্য মানুষ বস্ত্র পরিধান করে। বস্ত্র তৈরি মুল উপাদান বা কাঁচামাল সুতা আসে কৃষি হতে। যেমন, পাট, তুলা, রেশম ইত্যাদি।
- বাসস্থান: মানুষের তৃতীয় মৌলিক চাহিদা হল বাসস্থান। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করতে হলে সর্ব প্রথম তার একটা স্থায়ী বাসস্থান দরকার। আর বাসস্থান তৈরির প্রধান উপকরণ যেমন বাঁশ, কাঠ, ছন, খড় ইত্যাদি আসে কৃষি খাত হতে।
- ঔষধ: আদিকাল হতেই বিভিন্ন উদ্ভিদ বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হোমিওপ্যাথিক, ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরির বেশিরভাগ কাঁচামাল হচ্ছে কৃষিজাত পণ্য। যেমন: পেনিসিলিন নামক জীবন রক্ষাকারী ঔষধ পেনিসিলিয়াম নামক ছত্রাক হতে তৈরি হয়।
- জ্বালানি: গ্রামে অধিকাংশ মানুষ জ্বালানি হিসাবে লাকড়ি, লতাপাতা, বাঁশ ইত্যাদি ব্যবহার করে। এছাড়া গোবর, খড়, পাটকাঠি গ্রামা লের জ্বালানির একটা গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র শিল্পে জ্বালানি হিসাবে কাঠের লাকড়ি ব্যবহার করা হয়। যেমন বেকারী শিল্প।
- আসবাবপত্র: আমাদের বাসস্থানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র প্রয়োজন হয়। যেমন-খাট, আলনা, চেয়ার, টেবিল, আলমারি, দরজা, জানালা ইত্যাদি। এগুলো বেশিরভাগই তৈরি হয় কাঠ ও বাঁশ দিয়ে।
- শিক্ষা: শিক্ষার প্রধান উপকরণ হল কাগজ। আর এই কাগজ তৈরি হয় বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য থেকে। যেমন-বাঁশ, আখের ছোবড়া ইত্যাদি। এছাড়া শিক্ষার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল পেন্সিল। পেন্সিল তৈরিতে কাঠ ব্যবহৃত হয়। অতএব শিক্ষাও কৃষির উপর নির্ভরশীল।
- চিত্তবিনোদন: একজন মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চিত্তবিনোদনের প্রয়োজন আছে। বন ও শিশু পার্কে লাগানো বিভিন্ন ধরনের ফুল ও সৌন্দর্যবর্ধক গাছগাছালি চিত্তবিনোদনের জন্য একটা ভাল মাধ্যম হিসাবে কাজ করে। এই কারণে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চল ও সুন্দরবন দেখতে যায়।
ঘ) অন্যান্য গুরুত্ব
মানব জীবনে কৃষির বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। নিচে সেগুলো বর্ণনা করা হলো-
- কৃষি পণ্যের উৎপাদনের সাথে কোন এলাকার যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কৃষির ভূমিকা অনস্বীকার্য।
- কৃষিজাতপণ্য রপ্তানি করার মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সাথে একটা ভাল সম্পর্ক তৈরি হয় যা একটা দেশের উন্নতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা হতে সহজেই বুঝা যায় যে, বাংলাদেশে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম।
(৫) বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রসমূহ ও পরিসংখ্যান
ফসল, পশু পাখি, বন ও মাছ প্রভৃতি কৃষির প্রধান ক্ষেত্র। এসব বিষয়সমূহ একে অপরের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। এসব বিষয় একত্রে কোন এলাকার সামগ্রিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলে। অর্থাৎ কৃষি শিক্ষার জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে ফসল, পশুপাখি, বন, মাছ প্রভৃতি চাষাবাদে আধুনিক কলাকৌশল সম্পর্কে জানা যাবে।
ক) বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্র
নিম্নে বাংলাদেশের কৃষির ক্ষেত্রসমূহের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো-
খ) বাংলাদেশের কৃষি পরিসংখ্যান
নিম্নে বাংলাদেশের কৃষির সামগ্রিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো-
i) বাংলাদেশের কৃষি জমির পরিমাণ
পরিমাণ | তথ্য সূত্র | ||
মোট পরিবার/খানা | : | ৩,৫৫,৫২,২৯৬ | কৃষি শুমারি-২০০৯(বিবিএস, ২০২২) |
মোট কৃষি পরিবার/খানা | : | ১,৬৮,৮১,৭৫৭ | |
কৃষি বর্হিভূত পরিবার/খানা | : | ১,৮৬,৭০,৫৩৯ | |
মোট আবাদযোগ্য জমি | : | ৮৮.২৯ লক্ষ হেক্টর | কৃষি বর্ষগ্রন্থ-২০২২/ ভূমি ব্যবহার জরিপ (২০১৯-২০২০) |
মোট সেচকৃত জমি | : | ৭৮.৭৯ লক্ষ হেক্টর | কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ-২০২১ (বিবিএস, ২০২২) |
হালে পতিত | : | ৪.৩১ লক্ষ হেক্টর | |
ফসলের নিবিড়তা | : | ২১৪% | কৃষি শুমারি-২০০৯ (বিবিএস, ২০২২) |
এক ফসলি জমি | : | ২১.১০ লক্ষ হেক্টর | কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ-২০২১ (বিবিএস, ২০২২) |
দুই ফসলি জমি | : | ৪১.২৫ লক্ষ হেক্টর | |
তিন ফসলি জমি | : | ১৮.৬৭ লক্ষ হেক্টর | |
চার ফসলি জমি | : | ০.২৩ লক্ষ হেক্টর | |
নিট ফসলি জমি | : | ৮১.২৬ লক্ষ হেক্টর | |
মোট ফসলি জমি | : | ১৬০.৫৭ লক্ষ হেক্টর | |
জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান | : | ১১.৩৮ (স্থির মূল্যে) ২০২২-২৩ | বিবিএস, ২০২৪ |
জিডিপিতে শস্য খাতের অবদান | : | ৫.৫১ (স্থির মূল্যে) ২০২২-২৩ | |
কৃষিতে নিয়োজিত জনশক্তি | : | ৪৫.৪% | শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২(বিবিএস) |
ii) খাদ্যশস্যের আবাদ ও উৎপাদন (সাল ২০২২-২৩)
খাদ্য শস্য | আবাদ (লক্ষ হেক্টর) | উৎপাদন (লক্ষ মেট্রিক টন) |
আউশ | ১০.৬১ | ২৯.০১ |
আমন | ৫৭.২৫ | ১৫৪.৩৩ |
বোরো | ৪৮.৫২ | ২০৭.৬৮ |
মোট (চাল) | ১১৬.৩৮ | ৩৯১.০২ |
গম | ৩.১৯ | ১২.০৬ |
ভুট্টা | ৬.০৬ | ৬৪.৩১ |
মোট খাদ্যশস্য (চাল+গম+ভুট্টা) | ১২৫.৬৩ | ৪৬৭.৩৯ |
iii) অন্যান্য ফসলে আবাদ ও উৎপাদন (সাল ২০২১-২২)
খাদ্য শস্য | আবাদ (লক্ষ হেক্টর) | উৎপাদন (লক্ষ মেট্রিক টন) |
আলু | ৪.৫৫ | ১০৪.৩২ |
শাক-সবজি | ১১.১৩ | ২২৫.৪১ |
তৈল ফসল | ১০.৬৯ | ১৬.০৩ |
ডাল ফসল | ৭.০৯ | ১০.০৮ |
পেঁয়াজ | ২.৫ | ৩৪.৫৬ |
প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা কৃষি কী, কৃষি বলতে কি বুঝায়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব, বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান, বাংলাদেশে কৃষির গুরুত্ব, বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রসমূহ প্রভুতি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলাম।
সাল ২০২৪ এর এসেও, বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশে শতকরা ৭৫ ভাগ লোক গ্রামে বাস করে। বাংলাদেশের গ্রাম এলাকায় প্রায় ৮০% লোকের এবং শহর এলাকায় প্রায় ১০% লোকের কৃষিখামার রয়েছে। মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান প্রায় ১৬% এবং কৃষিখাতের মাধ্যমে ৪৫% মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।
বেশিরভাগ কৃষক এখনও ফসল উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ উপর নির্ভরশীল। তবে কৃষকদের অনেকেই এখন বিভিন্ন আধুনিক কৃষি-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পূর্বের তুলনায় ফলন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। ধরী ধরী কৃষকগণ উন্নত জান ও পদ্ধতি ব্যবহার শিখছেন ও অভ্যস্থ হচ্ছেন। ধান ও পাট বাংলাদেশের প্রধান ফসল হলেও গম,চা,আখ,আলু এবং বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি এদেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উৎপাদিত হয়।
কৃষি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট কৃষি’ (inbangla.net/krisi) এর সাথেই থাকুন।