গৃহপালিত প্রাণি বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। ফলে প্রতি বছর বহু গৃহপালিত প্রাণি মারা যায়। তাই গবাদি প্রাণি সম্পদ সংরক্ষন করতে হলে এদের রোগব্যাধি প্রতিরোধ করতে হবে।
রোগ ব্যাধি প্রতিরোধে গবাদি প্রাণি চিকিৎসকদের ভূমিকা থাকলেও গবাদি প্রাণির মালিককে এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। সুস্থ গবাদি প্রাণির লক্ষনগুলো জানা থাকলে গবাদি প্রাণি অসুস্থ হলে সহজেই বুঝা যাবে। রোগের ইতিহাস, গবাদি প্রাণির বিভিন্ন লক্ষন দেখে অসুস্থ গবাদি প্রাণি চেনা যায়।
গবাদি প্রাণির কিছু বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীন পরীক্ষা দ্বারা নির্ণয় করা যায় গবাদি প্রাণি সুস্থ না অসুস্থ। অসুস্থ গবাদি প্রাণির চিকিৎসার জন্য গবাদি প্রাণি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসা শাস্ত্রে একটি কথা প্রচলিত আছে “চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়”। অর্থাৎ রোগ হলে চিকিৎসা করা হবে সে আশায় না থেকে আগে থেকেই এমন কতগুলো ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে যেন রোগই না হয়। তাহলেই রোগ দমন সহজ হবে।
গবাদি প্রাণির রোগব্যাধি সঠিক ভাবে দমন করতে পারলে দেশে গবাদিপ্রাণির সংখ্যা ও উৎপাদন উভয় বৃদ্ধি পাবে। গবাদিপ্রাণির বিভিন্ন ধরনের রোগ দমনে জাতীয়ভিত্তিক কার্যক্রমের পাশাপাশি পালনকারিকে কিছু ব্যক্তিগত কার্যক্রমও গ্রহন করতে হবে। এসব পদক্ষেপ সুষ্ঠুভাবে গ্রহন ও সম্পাদন করতে পারলে গবাদিপ্রাণির রোগব্যাধি দমন সহজতর হবে।
এ পাঠ শেষে আপনি- গবাদি প্রাণি বা গরু-ছাগলের রোগ কি, কাকে বলে তা জানতে পারবেন। গবাদি প্রাণি বা গরু-ছাগলের রোগ কত প্রকার ও কি কি অর্থ্যাৎ রোগের শ্রেণীবিন্যাস সম্পর্কে জানতে পারবেন।
(১) গরু-ছাগলের রোগ কি/কাকে বলে?
সাধারণভাবে গবাদি প্রাণির রোগ বলতে স্বাভাবিক অবস্থার ব্যতিক্রমকেই বোঝায়। সুস্থ পশুর কতকগুলো বাহ্যিক লক্ষণ রয়েছে। এ লক্ষণগুলোর কোনো ব্যতিক্রম ঘটলেই বুঝা যাবে গবাদি প্রাণি অসুস্থ বা রোগে আক্রান্ত।
গবাদি প্রাণির দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা তন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যাবলির বিচ্যুতিকে রোগ বলে।
অথবা বলা যায়,
পর্যাপ্ত পুষ্টি ও প্রয়োজনীয় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বজায় রাখার পর দেহ স্বাভাবিক কার্যসম্পাদন করতে ব্যর্থ হলে সে অবস্থাকে রোগ বলা হয়।
বিভিন্ন কারণে গবাদি প্রাণি অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে। গৃহপালিত প্রাণির রোগ প্রতিকারের প্রথম শর্ত এদের স্বাস্থ্যসম্মত লালন-পালন। গবাদি প্রাণির ঘর স্যাঁতসেঁতে অপরিস্কার হলেই রোগ ব্যাধি হওয়ার সহায়ক হয়।
(২) গরু-ছাগলের রোগ কত প্রকার ও কি কি?
গবাদি প্রাণির রোগকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- সংক্রামক রোগ ও অসংক্রামক রোগ।
ক) সংক্রামক রোগ
সংক্রামক রোগ ৪ প্রকার। যথা-
- ভাইরাসজনিত রোগ
- ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ
- ছত্রাকজনিত রোগ
- পরজীবীজনিত রোগ
পরজীবীজনিত রোগকে আবার দুই বাগে ভাগ করা যায়। যথা-
i) অভ্যন্তরীণ পরজীবীজনিত রোগ
- কৃমিজনিত রোগ
- প্রোটোজোয়াজনিত রোগ
ii) বহিঃ দেহের পরজীবীজনিত রোগ
খ) অসংক্রামক রোগ
অসংক্রামক রোগ ৩ প্রকার। যথা-
- সাধারণ রোগ
- বিপাকীয় রোগ
- অপুষ্টিজনিত রোগ
উপরোক্ত পাঠে আমরা গবাদি প্রাণি বা গরু-ছাগলের রোগ কি/কাকে বলে? এবং গরু-ছাগলের রোগ কত প্রকার ও কি কি? তা জানলাম।
সুস্থ অবস্থায় গবাদি প্রাণির শরীরে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়, যদি কোন কারনবশত ঐ সকল স্বাভাবিক লক্ষনের কোন পরিবর্তন ঘটে তবে তাকে আমরা রোগ বলি। গবাদি প্রাণির শরীরের স্বাভাবিক অবস্থার যে কোন বিচ্যুতিই হল রোগ।
মানুষের মতই গবাদি প্রাণি বিবিধ রোগে আক্রান্ত হয়। গবাদি প্রাণির শরীরের বিভিন্ন লক্ষণ দেখে সুস্থ ও অসুস্থ গবাদি প্রাণিকে চেনা যায়।
কৃষি সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট কৃষি’ (inbangla.net/krisi) এর সাথেই থাকুন।