Skip to content

 

গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য, উপকারিতা ও অপকারিতা

গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য, উপকারিতা ও অপকারিতা

(১) গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য

গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য

গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য হলো-

  • বর্ণ, গন্ধ, কমনিয়তা ও সৌন্দর্যের বিচারে গোলাপকে ফুলের রানী বলা হয়। .
  • সৌন্দর্য্য ও লাবন্যের প্রতীক গোলাপ। গোলাপ ফুলগুলোতে মৃদু সুগন্ধ থাকে।
  • গোলাপ গাছে একটিমাত্র ফুল আসা দুর্লভ। সাধারণত, চার থেকে পাঁচটি ফুল একসাথে ফোটে।
  • গোলাপ ফুল সাধারণত সাদা, লাল ও হলুদ রঙের গোলাপ বেশি দেখা গেলেও গোলাপি, নীল, কমলা, কালো, এমনকি রংধনু রঙের গোলাপও আছে।
  • গোলাপের ডালপালা গুলি প্রায়শই তীক্ষ্ণ কাটা দিয়ে সজ্জিত থাকে। এই কাটা গুলি জন্তু এবং কীটপতঙ্গ হাত থেকে ফুল ও ফুলের গাছকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
  • গোলাপ ফুলের পাতাগুলো দৈর্ঘ্যে ৫ থেকে ১১ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। গোলাপ ফুলের পাতাগুলো প্রায় অনাবৃত এবং এদের উপরিভাগ চকচকে গাঢ় সবুজ রঙের।
  • গোলাপ একটি সম্পূর্ণ ফুল অর্থাৎ এতে বৃতি, দল, পুংকেশর, গর্ভকেশর প্রভৃতি ফুলের সবকটি অংশই নির্দিষ্ট সংখ্যায় আছে। বৃতির সংখ্যা ৫ এবং দলের সংখ্যা ৫ বা পাঁচের গুণিতক।
  • পৃথিবী জুড়ে গোলাপের অসংখ্য জাত রয়েছে। জাতগুলোর কোনোটির গাছ বড়, কোনোটি ঝোপালো, কোনোটি লতানো। ফুলের রং, আকার এবং আকৃতি প্রজাতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।
  • গোলাপ গুলি সাধারণত গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ, তবে কিছু প্রজাতি গাছ হিসেবে বৃদ্ধি পায়। গোলাপ ফুলের গাছ ১–২ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এটি অত্যন্ত কাঁটাযুক্ত ঘন ঝোপের গাছ।
  • এটি একটি শীতকালীন মৌসুমী ফুল হলেও, গোলাপ ফুল সারা বছরই ফোটে। এটি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জলবায়ুতে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারে বলে পৃথিবীর সব দেশেই সারাবছর কমবেশি গোলাপের চাষ হয়।

(২) গোলাপ ফুলের উপকারিতা

গোলাপ ফুলের উপকারিতা

গোলাপের বিভিন্ন অংশ যেমন ফল, ফুল, পাতা এবং বাকল প্রসাধনী, খাদ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস সহ বিভিন্ন পণ্যের বিকাশে ব্যবহার করা যেতে পারে।

See also  গোলাপ গাছের পরিচর্যা

গোলাপ ফুল দিয়ে অনেক রোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে। গোলাপের চিকিৎসা সুবিধার মধ্যে রয়েছে প্রদাহ, ডায়াবেটিস, ডিসমেনোরিয়া, বিষণ্নতা, মানসিক চাপ, খিঁচুনি এবং বার্ধক্যের চিকিৎসা।

ত্বকের যত্নের পাশাপাশি খাদ্য হিসেবে গোলাপ ফুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ত্বকের যত্নে গোলাপ ফুলের ফেসপ্যাক খুবই কার্যকরী। এটি ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।

ইদানিং গোলাপ ফুলের চা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।  

গোলাপ ফুলের উপকারিতা হলো-

  • স্ট্রেস কমাতে: গোলাপের সৌরভে মন ভালো করে থাকে। যা আয়ুর্বেদ মতে এ সুগন্ধ ভালো কাজ করে অ্যারোমা থেরাপি হিসেবে। গোলাপ ফুল খাওয়ার ফলে আপনার ভিতর থেকে সতেজ করে তুলবে। অতএব আপনি যদি স্ট্রেস মানসিক চাপ অনুভব করে থাকেন, তবে গোলাপের গন্ধ আপনাকে, হালকা করে তুলবে।আপনি অন্যকে গোলাপ ফুল উপহার দেয়ার পাশাপাশি , আপনার ঘরেও রাখতে পারেন এতে সুফল পাবেন।
  • কোমল ত্বক পেতে: ত্বক কোমল করতে গোলাপের পাপড়ি বেশ কার্যকরী। দুই কাপ পানিতে একটি তাজা গোলাপ ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে উঠে সেই গোলাপ ভিজিয়ে রাখা পানিতে মুখ ধুয়ে নিবেন। এটি ছাড়াও আরেক উপায়ে ত্বক কোমল করতে পারবেন। গোলাপের শুকনা পাপড়ি, ও দুধ মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রনের জায়গায় লাগিয়ে নিন। সকালে উঠে ধুয়ে নেবেন। এতে ব্রণ দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকও হবে কোমল।
  • গলা ব্যথা: তুষার তৈরি করে গোলাপ ফুল দিয়ে গার্গাল করলে মুখের ফোলাভাব, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ এবং গলা ব্যথার চিকিৎসা সাহায্য করে। এছাড়া গোলাপ পাতা চিবিয়ে খেলে মুখ ও ঠোঁটের ফোলা ভাব কমে যায়।
  • মাথায় ফোড়া নিরাময়ে: গোলাপ পাতা পিষে লাগালে মাথার ক্ষত, চক্ষু রোগ বা ছানি, দাঁতের রোগ এবং অশ্ব বা পাইলস রোগে উপকার পাওয়া যায়।
  • চোখের পাতার প্রদাহ থেকে মুক্তি পেতে: গোলাপ ফুল পিষে লাগালে চোখের পাতার ফোলাভাব কমে যায়। এটি দাঁতে মালিশ করলে দাঁতের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া ২-২ ফোঁটা গোলাপের নির্যাস চোখে লাগালে চোখের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • যক্ষা নিরাময়ে: ফুসফুসের রোগ টিবি নিরাময়ে এই রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধে গোলাপ ফুল ব্যবহৃত হয়।
  • পেটের রোগে: গোলাপ ফুলের গুঁড়া ২-৪ গ্রাম মধুর সাথে খেলে কষ্টকাঠিন্য, পেট ফোলাভাব এবং ডায়রিয়ায় উপকার পাওয়া যায়।
  • লিভারের রোগে: রক্তের ব্যাধি এবং লিভার সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় লাল গোলাপ ফুল ব্যবহার করা হয়।
  • কুষ্ঠ রোগের: সাদা রঙের গোলাপ ফুল কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। সাদা গোলাপ ফুলের গুড়া লাগালে কুষ্ঠ ও অন্যান্য পিত্তজ ব্যাধি নাশ হয়।
  • জ্বরে: জ্বর নামতে না থাকলে গোলাপের তৈর গুলকন্দ খেলে পিত্তজ্বরে উপকার পাওয়া যায়।
  • গোলাপ ফুলের চা: গোলাপ ফুলের পাপড়ি গরম পানিতে সেদ্ধ করে চা তৈরি করা যায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ চায়ের গুড়ার সাথে শুকনো পাপড়ি যোগে চা বানানো যায়।
See also  গোলাপ ও বেলি ফুল চাষ পদ্ধতি

গোলাপ সাধারণত কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, বাগান, লন, কেয়ারী, বারান্দা সাজাতে গোলাপের জুড়ি নাই। আতর ও সুগন্ধি শিল্পেও গোলাপের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

(৩) গোলাপ ফুলের অপকারিতা

গোলাপ ফুলের অপকারিতা

গোলাপের প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। গোলাপের অনেক উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার অপকারিতাও আছে। অনেকের গোলাপের সংস্পর্শে আসলে অ্যালার্জির সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই তাদেরকে গোলাপের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত।

গোলাপ ফুলের অপকারিতা হলো-

  • অ্যালার্জি: গোলাপ ফুলের পরাগ ও সুগন্ধে কিছু লোকের অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চোখ ও নাক চুলকানি। হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ত্বকে ফুসকুড়ি।
  • ত্বকের সমস্যা: গোলাপ ফুলের তেল ও নির্যাস ত্বকের জন্য কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিকর হতে পারে। এগুলি ত্বকে অ্যালার্জি চুলকানি ফুসকুড়ি ও জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।
  • চোখের সমস্যা: গোলাপ ফুলের পাপড়ি বা তেল চোখে গেলে চোখ জ্বালা করতে পারে। এছাড়াও গোলাপ ফুলের সুগন্ধ চোখের জালা ও পানি পড়ার কারণ হতে পারে।
  • খাদ্যে অ্যালার্জি: গোলাপ ফুলের নির্যাস বা তেল যুক্ত খাবার খেলে কিছু লোকের অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, বমি, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট।

[সূত্র: সাফান বিডি; ইন্টারনেট]

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট কৃষি

পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts