নিম্নে সহজ ও সংক্ষিপ্তাকারে ‘পুইশাক চাষের পদ্ধতি’ তুলে ধরা হলো-
ভূমিকা
পুঁইশাক পুঁইশাকের ইংরেজি নাম হলো- মালাবার স্পিনাচ (Malabar spinach)। পুঁইশাক গ্রীষ্মকালীন পাতা জাতীয় সবজির মধ্যে অন্যতম।
পুঁইশাক যদিও গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে জন্মে তবে সারা বছর ধরেই পাওয়া যায়। এর স্বাদ উৎকৃষ্ট ও এর পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম ও লৌহ থাকে। এখানে আমরা পুইশাক চাষের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।
জলমায়ু ও মাটি
পুঁইশাক উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে ভালো জন্মে। এটি যে কোন জায়গায় জন্মাতে পারে। বন্যামুক্ত অর্থাৎ পানি জন্মে না এরকম জমিতেও পুঁইশাকের চাষ করা যেতে পারে।
জাত
স্থানীয় সবুজ ও লাল সাধারণত দুটি জাত দেখা যায়। লাল জাতের তুলনায় সবুজ জাত দ্রুত বাড়ে এবং ফলন বেশি। তবে লাল জাতের স্বাদ ও পুষ্টিমান বেশি।
বংশ বিস্তার
বীজ বা কান্ডের সাহায্যে বংশ বিস্তার করে থাকে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করার জন্য বীজের মাধ্যমে চাষাবাদ করে থাকে।
বীজের পরিমাণ
সারিতে বীজ বপনের জন্য প্রতি হেক্টরে ১.৫-৩ কেজি বীজ প্রয়োজন। তবে ছিটিয়ে বপনের জন্য বেশি বীজের প্রয়োজন। বীজ লাগানোর সময় পুঁইশাক সাধারণত এপ্রিল-মে পর্যন্ত চাষাবাদ করা হয়। সেচের ব্যবস্থা করা গেলে রবি মৌসুমেও করা যায়।
জমি তৈরি ও সার প্রয়োগ
- বীজ বা চারা রোপনের পূর্বে জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।
- চাষের সময় গোবর সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
- মাঝারি উর্বর জমির জন্য শতক প্রতি গোবর সার ৫০ কেজি, টিএসপি ও এমওপি ৫০০ গ্রাম করে শেষ চাষের সময় মিশিয়ে দিতে হবে।
- ইউরিয়া সার ১ কেজি চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর থেকে ২-৩ কিস্তিতে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
বীজ ও চারা রোপন
- পুঁইশাক দু’ভাবে চাষ করা যায়। প্রতি বেডে ৭৫ সে.মি. দূরে দূরে ২টি সারিতে ৪৫ সে.মি.পরপর ২-৩ সে.মি. গভীরে ২-৩টি বীজ বা ১ টি চারা রোপন করতে হবে।
- বর্ষার সময় পুঁইশাকের লতা কিছু অংশ কেটেও রোপন করে চাষ করা যায়।
পরিচর্যা
- প্রয়োজনে আগাছা তুলে ফেলতে হবে। আগাছা দমন, সারের উপরি প্রয়োগ এবং গাছের গোড়ায় মাটি দেয়ার কাজ একই সময়ে করা যেতে পারে।
- বেড ও নালা পদ্ধতিতে চাষ করলে জমিতে সমভাবে সেচ দেয়া যায়।
- পুঁইশাকে তেমন মারাত্মক কোন রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা যায় না। তবে বিছা পোকা পাতা ও কান্ড খেয়ে ক্ষতি করে।
- পাতা পঁচা রোগ হলে ছত্রাক নাশক স্প্রে করা যেতে পারে।
ফসল সংগ্রহ ও ফলন
পূুঁইশাকের ডগা ২৫-৩০ সে.মি. লম্বা হলেই ডগা কেটে সংগ্রহ করতে হবে। এভাবে ডগা কাটলে নতুন নতুন ডগা গজাবে। এভাবে কয়েকবার ডগা কাটা যায়। প্রতি হেক্টরে ৬০-৭৫ টন ফলন পাওয়া যায়।
সারসংক্ষেপ
পুঁইশাক অত্যন্ত পুষ্টিকর পাতাজাতীয় সবজি। পুঁইশাক গ্রীষ্মকালে চাষ করা হয়। পুঁইশাকের লাল ও সবুজ দুই ধরণের জাত রয়েছে। উপরোক্ত আলেচনার মাধ্যমে আমরা পুইশাক চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করলাম।
[সূত্র: ওপেন স্কুল; ইন বাংলা নেট কৃষি (in bangla net krisi)]