নিম্নে গরুর টিকা দেওয়ার নিয়ম, ছাগলের টিকা দেওয়ার নিয়ম, পদ্ধতি ও সতর্কতাগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
গবাদি পশুর ভ্যাক্সিনেশন বা টিকা কি?
রোগ নিরাময়ের চেয়ে রোগ প্রতিরোধ উত্তম| রোগ প্রতিরোধের একটি গুরুতৃপূর্ণ হাতিয়ার হচ্ছে ভ্যাক্সিন বা প্রতিষেধক টিকা | কোন সুস্থ প্রানীকে রোগ হওয়ার পূর্বেই একটি নির্দিষ্ট রোগের টিকা প্রদানের মাধ্যমে উক্ত রোগহতে মুক্ত রাখার পদ্ধতিকে ভ্যাক্সিনেশন বলে।
ভ্যাক্সিনে কার্যকারীতা কত দিন থাকে?
এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট সময়েরজন্য গড়ে ওঠে। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কখনও কয়েক মাসেরজন্য গড়ে ওঠে, আবার কখনও কয়েক বছর হতে আজীবনকাল হতে পারে।
অসুস্থপ্রাণীকেভ্যাক্সিন দেওয়া যাবে কি?
না, সুস্থসবল প্রাণীকে ভ্যাক্সিন প্রদান করতে হবে। অসুস্থ প্রাণীকে ভ্যাক্সিন প্রদান করা নিরাপদ নয়।
ভ্যাক্সিনপ্রয়োগেরপূর্বেপ্রাণীকে কি অন্য কোন ঔষধ প্রযোগ করতে হয়?
পরজীবি আক্রান্ত প্রাণীতে ভ্যাক্সিন ভাল কাজ করেনা। তাই ভ্যাক্সিন প্রয়োগের পূর্বে প্রাণীকে পরভীবিমুক্ত করে নিতে হবে|
ভ্যাক্সিন কোথা থেকে সংগ্রহ করতে হবে?
সরকারীপ্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনভাল কোম্পানী হতে ভ্যাক্সিন সংঘহকরে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করতে হবে। মেয়াদোতীর্ণ ভ্যাক্সিন কোন কাজে আসেনা বরং তা ক্ষতিকর।
ভ্যাক্সিন জন্য কিসের পানি ব্যবহার করতে হবে?
ভ্যাক্সিনগুলানোর জন্য ডিস্টিন্ড ওয়াটার বা পাতিত পানি ব্যবহার করতেহবে। পুকুর, নদীনালা, ট্যাপ ও নলকুপের পানি ব্যবহার করলে ভ্যাক্সিনের কার্যকারীতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সাধারণত ভ্যাক্সিনেশনের পদ্ধতি সমূহ কি কি?
→ মাংস পেশীতে ইনজেকশন।
→ চামড়ার নিচে ইনজেকশন।
→ শিরায় ইনজেকশন।
→ খাদ্য বা পানির সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ।
→ স্প্রে বা এারোসলের মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে।
→ চোখে ড্রপ।
→ মুখে খাওয়ানো। ইত্যাদি।
ভ্যাক্সিনের কার্যকারীতাকমে যাওয়া বা নষ্টহওয়ার কারণগুলো কি কি?
→ ভ্যাক্সিনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে।
→ অসুস্থ প্রানীকে ভ্যাক্সিন প্রদান করলে।
→ প্রোটিন ডেফিসিয়েন্সিতে ভূগছে কিংবা রক্তশুন্যতায় ভূগছে এমন প্রাণীতে ভ্যাক্সিন করলে।
→ জীবিত জীবানু দ্বারা তৈরী ভ্যাক্সিনের জীবানুগুলোমারা গেলে।
→ ভ্যাক্সিন গুলানোর জন্য ডিস্টিম্ড ওয়াটারব্যবহার না করে অনিরাপদ পানি ব্যবহার করলে।
→ ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করার যন্ত্রপাতি পরিস্কার ও জীবানুমুক্ত না হলে।
→ যে জীবানুর বিরূদ্ধে ভ্যাক্সিন দেওয়া হলো ভ্যাক্সিন এ জীবানুর এন্টিজেন দ্বারা তৈরী না হলে।
→ প্রস্ততকারকের নির্দেশিত মাত্রায় ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করা না হলে।
ভ্যাক্সিনেশনেরসতর্কতাগুলো কি কি?
→ অসুস্থ প্রাণীকে কোন অবস্থাতেই ভ্যাক্সিনপ্রদান করা যাবে না।
→ প্রয়োগের পূর্বে প্রস্ততকারকের নির্দেশনা ভালমত পড়ে নিতে হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত মাত্রায় নির্দেশিত স্থানে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করতে হবে।
→ দুটি ভ্যাক্সিন প্রয়োগের মধ্যবর্তী বিরতিকাল কমপক্ষে ২ সপ্তাহ হবে।
→ গর্ভবতী ছাগলকে জিটিভি দেয়া যাবে না।
→ ভ্যাক্সিন নির্দেশনানুযায়ী যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবহনের সময় থার্মোফ্লাক্সে পরিবহন করতে হবে।
→ পানিতে গুলানো ভ্যাক্সিন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করে ফেলতে হবে, গুলানো ভ্যাক্সিন সর্বোচ্চ এক ঘন্টার মাঝে ভ্যাক্সিন ব্যবহার করতে হবে।
→ প্রস্ততকারকের নির্দেশনামতে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করতে হবে, ভ্যাক্সিন প্রয়োগ পদ্ধতি বিভিন্ন ধরণের টিকা প্রস্ততকারকের নির্দেশনানুযায়ী শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রয়োগ করতে হয়।
পশু-পাখি পালন ও চাষাবাদ সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট কৃষি’ (inbangla.net/krisi) এর সাথেই থাকুন।