Skip to content

 

মোটিভেশনাল কথাঃ ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর উপায় (motivational speech in bangla ‍about mind’s desire)

মোটিভেশনাল কথাঃ ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর উপায় (motivational speech in bangla ‍about mind's desire)

নিম্নে মানুষের মনের একাগ্রতা ও ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে একটি মোটিভেশনাল কথা/বক্তব্য উপস্থাপন করা হলো-

(১) মানুষের ইতিবাচক ইচ্ছা

যে সমস্ত ইচ্ছার দ্বারা নিজের সর্বাঙ্গীন উন্নতি এবং সমাজ ও বিশ্বের উন্নতি হয় সেগুলি ইতিবাচক ইচ্ছা।

অপরের ক্ষতি করেও নিজের উন্নতি করা যায় আবার অপরের ক্ষতির কথা না ভেবেও নিজের উন্নতি করা যায়। কিন্তু অনেক লোকই ভাবে যে অপরের ক্ষতি না করে নিজের উন্নতি সম্ভব নয়। অথবা অনেকে অকারণে অপরের ক্ষতি করতে চান। যেমন অনেক হত রাণী আছে যারা নিরামিশাষী তবু মানুষ মারে।

সেজন্যই ইতিবাচক ইচ্ছা জাগিয়ে রাখার জন্য একটা বিশেষ উদ্যমের দরকার হয়। কতগুলি নিয়ম নীতি মেনে চলার দরকার হয়।

মোটিভেশনাল কথাঃ মানুষের ইতিবাচক ইচ্ছা

এক.

সবার আগে দরকার মনোবল অটুট রাখা।

মনোবল অটুট রাখতে গেলে সৎ সাহিত্য পড়তে হবে। নাটক সাহিত্য, ছবি জীকা প্রভৃতি সৃজনশীল নান্দনিক কাজকর্মের মধ্যে জড়িয়ে থাকতে হবে। অথবা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সাংগঠনিক কাজের সঙ্গে লিপ্ত থাকতে হবে। সবার আগে দেখবে এই সব কাজের ছারা মানুষের উপকার হবে কিনা অথবা তোমার মনের প্রশস্ততা পড়বে কিনা।

সমাজসেবা তথা গঠনমূলক কাজের মধ্যে থাকলে মনের প্রশস্ততা বাড়ে অথবা মাঝে মাঝে প্রকৃতির কোলে নির্জনে বাস করলে মন শান্ত হয়। প্রসন্ন হয়। এই অবস্থায় মনে ইতিবাচক ইচ্ছাশক্তি প্রবল হয়। 

মানুষের মনের একাগ্রতা ও ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে একটি মোটিভেশনাল কথা-বক্তব্য

দুই.

তথাকথিত ব্যর্থতা থেকে মনের জোর কমে যায়। ইতিবাচক ইচ্ছা শক্তিও হ্রাস পায়।

তখাকথিত ব্যর্থতা বলছি এই কারণে, কারণ আমিশ্ব্যর্থতা শব্দ ব্যবহার করিনা। এটি একটি নেতিবাচক শব্দ। আমি বলি প্রতিটি চেষ্টাই একটি পরীক্ষা experiment। কোনও experiment সুফল দেয়। কোনটি তাৎক্ষনিক ফল দেয় না কিন্তু শুধু অভিজ্ঞতা দেয়। অভিজ্ঞতার মূল্য সাফল্যের মূল্য থেকে কম নয়। শিশু যখন হাটতে শেখে তখন সে বার বার পড়ে যায়।

এই পড়ে যাওয়াটা অভিজ্ঞতা, ব্যর্থতা নয়।

কারণ এই অভিজ্ঞতাগুলি তার পরবর্তীকালে হাটার পূর্বশর্ত। সুতরাং তথাকথিত ব্যর্থতাও অভিজ্ঞতা।

আমি যেমন সফল হয়েছি। তেমনি অসফলও হয়েছি। বরং বলতে দ্বিধা নেই আমার বেশীরভাগ প্রচেষ্টা়ই অসফল। কিন্তু আমি এগুলিকে ব্যর্থতা বলব না। এগুলো আমার অভিজ্ঞতা।

ঐ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমার যাবার দরকার ছিল। কারণ তা না হলে আমি দশ শতাংশ সাফল্যের মুখ দেখতে পারতাম না।

তাছাড়া সাধারণ মানুষ যাকে ব্যর্থতা বলে সেই ব্যর্থতাও প্রচেষ্টার একটা পরিণতি। চেষ্টা না করলে সাফল্যও আসে না বা ব্যর্থতাও আসে না। যেমন যে কাজ করে না তাকে সমালোচনা শুনতে হয় না।

নিষ্ক্রিয় মানুষের চেয়ে সক্রিয় তবু বার বার ‘ব্যর্থ’ মানুষের দাম অনেক বেশী। তাই অ-সাফল্যকে ব্যর্থতা বলে গণ্য করে নিজেই নিজেকে দণ্ডিত করা ঠিক নয়।

আমি দেখেছি, পড়াশোনার ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে কোন ছাত্র বা ছাত্রী একবার দুবার বা তিনবার অসফল হলে অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দেয় কিংবা তাদের অভিভাবকরা তাকে অন্য কাজে নিযুক্ত করে ফেলে। মেয়ে হলে তার বিয়ের ব্যবস্থা করে অথবা ঘরে বসিয়ে রাখে।

আমার পরিচিত এক বান্ধবী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পিএইচডি করছিল।

কোন কারণে তার পিএইচডি থিসিসকে সংশোধন করে আবার পেশ করার জন্য বলা হয়।

কিন্তু সে সেটি আর করল না। তার ফলে এত খেটেও সে আর পিএইচডি পেল না। এই তথাকথিত ব্যর্থতায় মুহ্যমান হয়ে অনেক ছেলেমেয়ে ড্রপ আউট হয়ে যায়।

ব্যর্থতা বা অকৃতকার্যতা বলে পৃথিবীতে কিছু নেই। যাকে তুমি ব্যর্থতা বলবে, আমি তাকে বলি আরও ভাল করার জন্য নির্দেশ বা সাজেশান। তুমি যদি পরীক্ষায় ফেল করো তাহলে তার মানে দীড়াল, আবার চেষ্টা করো।

এই পৃথিবী কত বার ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে। কত সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে।

See also  ৫টি পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

কত প্রজাতি লুপ্ত হয়ে গেছে। এই বইটি ছাপার জন্য কতবার প্রুফ দেখতে হয়েছে। এক একবারে ভুল সংশোধনের পরও ভুল থেকে যায়। তাহলে মানুষের সমস্ত পদক্ষেপ নির্ভুল হতে পারে কীভাবে?

নিজেকে কখনও পরাজিত মনে করবে না। ভুল মানুষ মাত্রেরই হয়। বার বার ভূল সংশোধনের মধ্য দিয়েই সঠিক পথে পৌছতে হয়। অতীতের জন্য অনুশোচনা এবং ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগই অধিকাংশ মানুষের মনের জোর কমিয়ে দেয়।

আমাদের সব ইচ্ছাপূরণ হয় না। কিন্তু চাইবার মত করে চাইলে ও ইচ্ছার মত নিজেকে যোগ্য করে তুললে কিছু না কিছু ইচ্ছা পূর্ণ হবেই।

তবে মানুষের ইচ্ছা যাকে বাসনা বলা হয় তা অনন্ত।

তা কোনদিনই পূরণ হবার নয়। বাসনা এমন হলে চলবে না যেটা পূরণ হলে খারাপ হবে। যেটুকু আমি সামলাতে পারব না তেমন বাসনা করা উচিত নয়। বামন হয়ে টাদে হাত দেবার বাসনা কখনও পূর্ণ হবার নয়।

যখন বাসনা করবে তখন দেখবে তা যেন তোমার ভবিষ্যৎ জীবনজীবিকা ও উন্নয়নের সহায়ক হয়। অসম্ভব কোন বাসনা পূর্ণ হবার নয়। নিশ্চেষ্ট বাসনাও পূর্ণ হয় না।

তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখেছি কোন চেষ্টা না করা সত্তেও কারও কারও বাসনা পূর্ণ হয়েছে। তবে তারা ভাগ্যবান।

এখানে বিধিবদ্ধ সতর্কবাণীর মত একটা কথা মনে রাখতে হবে। যেসব কাজে চেষ্টা, পরিশ্রম ও মেধার দরকার হয় সেখানে শুধু ইচ্ছা শক্তি দিয়ে সরাসরি ভাগ্য পরিবর্তন ঘটানো যায় না।

ইচ্ছা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে প্রতিকূল পরিস্থিতি বদলে অনুকূল পরিস্থিতি এনে দিতে পারে। কিন্তু শুধু মাত্র ইচ্ছা আছে বলে ভিখারি-লাখপতি বনে যেতে পারে না।

ইচ্ছা ভিখারির মধ্যে নতুন প্রেরণা জাগাতে পারে। সে ভিক্ষা করা পয়সা জমিয়ে একটা ছোট ব্যবসা, ছোট ব্যবসা থেকে আর একটু বড় ব্যবসা।

আর একটু বড় ব্যবসা থেকে আরও বড় ব্যবসায়ে নিয়ে যেতে পারে। এখানে ইচ্ছ: তাকে সরাসরি লাখপতি করছে না- তাকে প্রেরণা যোগাচ্ছে। প্রেরণা থেকে সে পাচ্ছে কর্মশক্তি।

ইচ্ছাশক্তি ফেল করা ছাত্রকে পরের বছর অথবা কোন না কোন বার পাশ করাতে পারে।

এমনকি সাত আটবার পরীক্ষা দিয়েও ইচ্ছাশক্তির বলে আমি একাধিক ব্যক্তিকে গ্রাজুয়েট হতে দেখেছি। কিন্তু ইচ্ছাশক্তিরও কতগুলি ধাপ আছে। ব্যাঙের মত তা লাফ দিয়ে চলে না। দ্বিতীয়ত ইচ্ছাটাও বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া চাই।

আমার বন্ধু অনেক আগে একটা খবরের কাগজে চাকরি করত, তখন তার ইচ্ছা ছিল এডিটর হবার।

পরবর্তীতে সে এডিটর হয়ে তারপর বিদেশ যাবার সুযোগ পেয়ে উক্ত চাকরিটা দিয়েছে। কিন্তু সে যদি ইচ্ছা করত মন্ত্রী হবো। তাহলে ইচ্ছার যাদুবলে তা হতে পারত না। তাহলে তাকে কাগজের চাকরির সঙ্গে সঙ্গে পলিটিক্স করতে হত।

ইচ্ছাকে ধাপে ধাপে প্রয়োগ করতে হয়। গাছে না উঠতেই এক কাঁদি সফল হয় না।

কোন পরিশ্রম না করে, যোগ্য না হয়ে বড় কিছু পাবার ইচ্ছা করলে সে ইচ্ছা ফলবতী হয়না। হলেও অন্যদিকে বিরাট ক্ষতি হয়ে যায়। কারণ এটা মনে রাখতে হবে প্রকৃতির নিয়মের বিরোধিতা করে কৃত্রিম উপায়ে কিছু করতে  চাইলে প্রকৃতি অন্যভাবে প্রতিশোধ নেয়।

যেমন উচ্চফলনশীল ধান জমিতে ক্রমাগত ধান বুনে গেলে জমিতে প্রচুর মাত্রায় রাসায়নিক সার লাগে।

আবার বেশী রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়। নদীতে ড্যাম তৈরি করলে ভূমিক্ষয় হয়। বন্যা হতে পারে যেজন্য যত্রতত্র ড্যাম তৈরির বিরোধিতা হচ্ছে।

বিখ্যাত বানরের হাড় গল্পটি অনেকে পড়েছেন। এই বানরের হাড় হাতে নিয়ে যে কোন তিনটি ইচ্ছা করা যেত।

সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছা ফলবতী হত। একজন সেই হাড় হাতে করে প্রবল ইচ্ছা প্রকাশ করল কিছু টাকা যেন সে হাতে পায়। তার কিছু দিন পরে একটা টেলিগ্রাম এল।

See also  ছাত্রদের জন্য নসিহতঃ নির্দেশনার বাস্তব প্রয়োগ ও আত্নবিশ্বাসী হওয়া প্রয়োজন কেন? আত্ন বিশ্বাস কিভাবে কাজ করে?

তার ছেলে দুর্ঘটনায় মারা গেছে আর জীবন বিমার দরুন ক্ষতিপূরণের মোটা টাকা সে পেতে চলেছে।

যদি ইচ্ছাপ্রকাশ করতে হয় তাহলে এমন ইচ্ছা প্রকাশ করো যাতে তুমি আকাঙ্খিত বস্তু লাভের যোগ্য হয়ে উঠতে পারো। তারপর ধাপে ধাপে এগোও।

প্রথমে ইচ্ছা প্রকাশ করো, নীরোগ দেহের।

কল্পনায় দেখো তুমি সুঠাম নীরোগ দেহের অধিকারী হয়েছো। কিন্তু তার জন্য তোমাকে সুস্থ থাকার জন্যে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

খাদ্যতালিকা সতর্কতার সঙ্গে বাছাই করতে হবে। দৈববশে তুমি ভাল স্বাস্থ্যের অধিকারী। কিন্তু স্বাস্থ্য ভাল হলেই হবে না তাকে উপযুক্ত পরিচর্যা করতে হবে।

নিজেকে যোগ্য করে তুলে, ঈপ্সিত বস্তুর জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করলে ইচ্ছাপূরণ হবে কিন্তু তাই বলে তুমি যা চাইছো হুবহু তাই-ই হতে পারবে তার কোন গ্যারান্টি নেই।

তোমার ইচ্ছা তুমি লেখাপড়া শিখবে, এর জন্য খুব খাটলে। পাশ করবেই।

কিন্তু পরীক্ষায় প্রথম হবার বাসনা যদি থাকে তাহলে প্রথম হতে পারবে কিনা তা বলা যায় না।

তুমি যদি খুব ব্রিলিয়ান্টও হও তাহলে একদম প্রথম হবার গ্যারা্টি কেউ দিতে পারবে না। এজন্য দেখবে প্রতি বছর মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে যে সব ছেলেমেয়ে প্রথম হয়েছে, তারা বলে আমরা স্ট্যান্ড করবো ভেবেছি। কিন্তু প্রথম হবো ভাবিনি।

ইচ্ছাশক্তি তোমাকে গিরিলংঘন করাবে, কিন্তু কোন গিরি? হয়তো একটা সামান্য টিলা- কিন্তু এভারেস্ট নয়। যারা এভারেস্ট অভিযান করেছেন তাদের অনেকে এভারেস্টের কাছাকাছি উঠেও ব্যর্থ হয়েছেন।

কিন্তু ইচ্ছাশক্তি তাদের উঠিয়েছিল। এইটুকুই বড় কথা। ইচ্ছা অনুসারে চূড়ান্ত বিজয়লাভ অনেক ঘটনার ওপর নির্ভরশীল। একে বলে বেৃসডে। জীবনে ঘটার প্রবণতা। ওভাবে নির্দিষ্ট করে অমুক দিন অমুক ঘটনা ঘটবেই তা বলা যায়না।

ইচ্ছাশক্তির দ্বারা ইন্দ্রিয়কে জয় করা যায়। ইচ্ছাশক্তি দিয়ে লোভ জয় করা যায়।

ইচ্ছা শক্তি প্রয়োগ করে যে কোন নেশা ছাড়তে পারা যায়। সিগারেটের নেশা, মদের নেশা, এমনকী ড্রাগের নেশাও বহু লোক ছেড়ে দিয়ে সুস্থ জীবন যাপন করছে।

প্রবল হচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে তুমি তোমার প্রিয়জনের মঙ্গল করতে পারো। স্বসময় যার মঙ্গলকামনা করবে তার কিছু না কিছু ভাল হবেই। তবে এই কামনা আন্তরিক হওয়া চাই। শুধু মৌখিক হলে ফলবে না।

অন্যের উপর নিজের ইচ্ছাশক্তিকে প্রয়োগ করতে হলে নিজেকে মানুষ হিসাবে সৎ ও পবিত্র হতে হবে।

ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে মনে জোর আনতে হয়। আসক্তি ও লোভ থাকলে মনের জোর কমে যায়।

বুদ্ধদেব, শ্রীচৈতন্য, যখন গৃহত্যাগ করেছিলেন, তখনও যদি তাদের সংসারে আসক্তি থেকে যেত তাহলে কিছুতেই সন্যাসীর কঠোর জীবন তীরা বরণ করতে পারতেন না।

ভোগের মোহ ত্যাগ না করলে কোন বড় কাজে আত্মনিয়োগ করা যায় না। তেমনি মৃত্যুভয় কাটিয়ে উঠতে না পারল সাহসিকতার কাজ দেখানো যায় না।

যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে ঝুঁকি আছে।

ঝুঁকি মানে প্রাণ হানিও ঘটতে পারে। কিন্তু গ্রাণের মায়া করলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যায় না।

সবসময় লোকের ভাল করার মন মানসিকতা বজায় রাখো। সৎপথে থাকো, সৎটিন্তা করো। মনের জোর বাড়বে। কারণ নৈতিকবলই সবচেয়ে বড় বল।

মনে মনে অহংকার রাখো। কারণ অহংকার আত্মবলের কাজ করে। অহংকার আত্মমর্যাদাবোধের জন্ম দেয়।

কিন্তু বংশের অহংকার করো না কারণ তোমার জন্ম উচ্চ বংশে হয়েছে। সেখানে তোমার কোন হাত নেই। অহংকার করো তোমার সততার, কঠোর পরিশ্রমের, আত্যন্তিক নিষ্ঠার আর মানবিকতার।

কোন কিছুর ভয়ে সৎ হওয়ার চেষ্টা করো না। এতে করে নিজের সাথে নিজেরই বেইমানি হয়ে যাবে। এইসবগুলোই পরবতীতে তোমার পেশাগত জীবনে অবদান রাখবে বা ছাপ ফেলবে। এমন সৎ সবাই হতে পারে। সং হবার জন্যই সৎ হন। প্রতিদানের আশায় লোকের বা বন্ধুদের উপকার করো না।

এদের উপকার করার পর দেখবে এদের সাহায্য করার সঙ্গে সঙ্গে তোমার মনের জোর বাড়ছে।

(২) মনের একাগ্রতা ও ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর উপায়

ইচ্ছাশক্তি বাড়ানোর উপায়

এই মুহূর্তে তোমার আর কিছু করতে ইচ্ছা করছে না। হয় তুমি পড়তে পড়তে এমন একটা জায়গায় পৌছে গেছো যে তোমার মনে হচ্ছে এই পড়ার আর তেমন দরকার নেই। অথবা তুমি দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ে বোঝার চেষ্টা করে করে হয়রান হয়ে গেছো, তাই এখন আর পড়তে বা অন্য কিছুতে মন বসাতে ইচ্ছে করছে না। এক্ষেত্রে তোমার ভেতরের সুপ্ত ইচ্ছা কী জাগানো সম্ভব?

See also  শিক্ষার্থী জন্য মোটিভেশনাল কথাঃ প্রতিবন্ধকতা কোন বাঁধা নয়

এই ধরণের ইচ্ছা নেতিবাচক ইচ্ছা। নেতিবাচক ইচ্ছার মধ্যে অন্যের ক্ষতি করে নিজের ভাল করার ইচ্ছাও পড়ে।

এই নেতিবাচক ইচ্ছাকে কী প্রশমিত করা যায়?

নেতিবাচক ইচ্ছা কিন্তু জীবনের স্বাভাবিক ঘটনা। মনের মধ্যে সব সময় শুম্ভ-নিশুস্তর লড়াই চলছে। নেতিবাচক ইচ্ছাকে সব সময় ইতিবাচক ইচ্ছা দিয়ে পরাভূত করতে হয়। আবার ইতিবাচক ইচ্ছাকে জাগাতে হয় সদচিন্তা ও মনঃসংযমের সাহায্যে। মনকে বশে রাখতে পাররেই কেল্লাফতে।

প্রশ্নটা হলো মনকে বশে রাখব কীভাবে? কীভাবেই বা ইতিবাচক ইচ্ছা জাগাব আর নেতিবাচক ইচ্ছাকে নিবৃত্ত করব?

ইংরেজিতে একটি কথা আছে Where there is a will there iss a way অর্থাৎ ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। এই ক্ষেত্রে আমার একটি কথা আছে সেটা হলো, শুধু ইচ্ছা থাকলেই হবে না। সেই সাথে প্রয়োজন ইচ্ছাপূরণের মতো দৃঢ় অঙ্গিকার। তবে অবশ্যই সেটা হতে হবে সৎ ইচ্ছা।

ছাত্রজীবনের সবচাইতে সৎ ইচ্ছা হলো অধ্যয়ন সংক্রান্ত। সুতরাং প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর সেই ইচ্ছাপূরণের অঙ্গিকার থাকা উচিত- যেটা কিনা তার অধ্যয়ন সংক্রান্ত।

ইচ্ছাপূরণ চিন্তা হলো wishful thinking।

মনে করো, তুমি ভাবলে এটা হলে খুব ভাল হয়, সেটাই হল। আবার কোন ব্যাপারে আশংকা প্রকাশ করলে, পরবর্তীতে দেখলে যা আশংকা করেছিলে তাই ঘটল। এজন্য ভূতের রাজার নেয় মা তোরা তারিন লনা ই মি নিভে ইচ্ছাপূরণে সক্রিয় ভূমিকা নাও, তাহলে ইচ্ছাপূর্ণ হতে পারে।

অনেক সময় সুপ্ত ইচ্ছা বা সক্রিয় ইচ্ছার স্বপ্নের দেখি। এগুলি সবই ইচ্ছাপূরণ ৷ অথবা অবচেতন মনের ভীতি। যেমন অনেকে স্বপ্ন দেখে পরীক্ষা দিতে বসেছে, লিখতে পারছে না। অথবা খুব ভাল লিখেছে, একেবারে প্রথম বলে ঘোষিত হয়েছে। আনন্দে ঘুম ভেঙে দেখবে, সব অলীক মায়া।

মনের একাগ্র অবস্থা হলো চিন্তাকে এলোমেলো হতে না দিয়ে যে কোন একটি বিষয়ের ওপর স্থাপন করা। একাগ্রতাকে আমরা অনেক সময় তন্ময় অবস্থা বলি।

গায়ক তন্ময় হয়ে গান গাইতে পারেন, শ্রোতা তন্ময় হয়ে শোনেন। আমি যখন লিখি তখন কোথা থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যায়। তন্ময় অবস্থায় মন একটা বিষয়ের ওপর আবদ্ধ থাকে। তখন স্মৃতি ও সত্তা এক হয়ে যায়। যখন লিখছি তখন স্রোতের ধারার মত চিন্তা আসছে মগজে। সেখান থেকে তা প্রবাহিত হচ্ছে কলমে।

মুহূর্তের মধ্যে প্রয়োজনীয় স্মৃতিগুলি মনে পড়ে যাচ্ছে। এই যে এখন যে বিষয় সম্পর্কে সম্পর্কে লিখছি এখন কীভাবে লিখছি, আমার তো এই বিষয় সম্পর্কে তেমন কোন অভিজ্ঞতা নেই।

আমি অন্যদের অভিজ্ঞতা ধার করছি। অন্যদের অভিজ্ঞতার কথা জানতে পেরেছি তাদের লেখা বইতে।

তুমি তোমার একাগ্রতা আনতে পার তোমার পাঠ্য বিষয়ের ওপরে। যদি সত্যিই তুমি একাগ্র হতে পারো তাহলে মনে করতে হবে তুমি সফল হতে পারবে।

একাথতা এক রকমের ধ্যান। এর জন্যও অনুশীলন দরকার। প্রাথমিকভাবে দরকার নিরিবিলি পরিবেশ যেখানে শব্দ নেই। কিন্তু ক্রমাগত অনুশীলনের ফলে গোলমালের মধ্যেও একাগ্রতা আনা যায়।

কিন্তু যদি মানুষ বুঝতে পারে যে মান অপমান শোক দুঃখ যা কিছু তা ওই বাইরের আমিতে পর্যন্ত তাকে স্পর্শ করে না।

বাইরের সমস্ত বিধ্বংসী প্রভাব থেকে মনকে বিচ্ছিন্ন রাখাই এক ধরনের একাগ্রতা।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট মোটিভেশন

আত্ম-উন্নয়ন ও মোটিভেশন সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts