দেশি মুরগি পালন পদ্ধতিতে, দেশী মুরগির ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি করে বাজারে বিক্রি করার চেয়ে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা তৈরী করে ৮-১২ সপ্তাহ বয়সে বিক্রি করলে লাভ বেশী হয়। এক সংঙ্গে ১০-১২ টি মুরগি নিয়ে পালন শূরু করতে হবে। শুরুতে মুরগি গুলোকে কৃমি নাষক ঔষধ খাওয়ানোর পরে রানীক্ষেত রোগের টীকা দিতে হবে। মুরগির গায়ে উকুন থাRead more
দেশি মুরগি পালন পদ্ধতিতে, দেশী মুরগির ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি করে বাজারে বিক্রি করার চেয়ে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা তৈরী করে ৮-১২ সপ্তাহ বয়সে বিক্রি করলে লাভ বেশী হয়। এক সংঙ্গে ১০-১২ টি মুরগি নিয়ে পালন শূরু করতে হবে।
শুরুতে মুরগি গুলোকে কৃমি নাষক ঔষধ খাওয়ানোর পরে রানীক্ষেত রোগের টীকা দিতে হবে। মুরগির গায়ে উকুন থাকলে তাও মেরে নিতে হবে। প্রতিটি মুরগিকে দিনে ৫০-৬০ গ্রাম হারে সুষম খাদ্য দিতে হবে। আজকাল বাজারে লেয়ার মুরগির সুষম খাদ্য পাওয়া যায় । তা ছাড়া আধা আবদ্ধ এ পদ্ধতিতে পালন করলে লাভ বেশী হয়।
মুরগির সাথে অবশ্যই একটি বড় আকারের মোরগ থাকতে হবে। তা না হলে ডিম ফুটানো যাবে না । ডিম পাড়া শেষ হলে মুরগি উমে আসবে । তখন ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটানোর ব্যবস্থা নিতে হয়। এক সঙ্গে একটি মুরগির নীচে ১২-১৪ টি ডিম বসানো যাবে। খামারের আদলে বাঁশ, কাঠ খড়, বিচলী তাল নারকেল সুপারির পাতা দিয়ে যত কম খরচে স্থানান্তর যোগ্য ঘর তৈরী করা সম্ভব তা করা যায়।
দেশী মুরগি পালন কৌশলের বিশেষ নজর দেয়ার ধাপ সমূহঃ
উমে বসানো মুরগির পরিচর্যা করতে হবে। মুরগির সামনে পাত্রে সবসময় খাবার ও পানি দিয়ে রাখতে হবে যাতে সে ইচ্ছে করলেই খেতে পারে । তাহলে মুরগির ওজন হ্রাস পাবেনা এতে বাচ্চা তোলার পর আবার তাড়াতাড়ি ডিম পাড়া আরম্ভ করবে।
▣ ডিম বসানোর ৭-৮ দিন পর আলোতে রাতের বেলা ডিম পরীক্ষা করলে বাচ্চা হয় নাই এমন ডিমগুলো চেনা যাবে এবং বের করে অনতে হবে। বাচ্চা হওয়া ডিমগুলো সুন্দর করে সাজিয়ে দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন মুরগি বিরক্ত না হয়।
▣ প্রতিটি ডিমের গায়ে সমভাবে তাপ লাগার জন্য দিনে কমপেক্ষ ৫-৬ বার ওলট পালট করে দিতে হবে।
▣ বাতাসের আর্দ্রতা কম হলে বিশেষ করে খুব গরম ও শীতের সময় ডিম উমে বসানোর ১৮-২০দিন পর্যন্ত কুসুম গরম পানিতে হাতের আঙ্গুল ভিজিয়ে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
▣ ডিম ফোটার পর ৫-৬ ঘন্টা পর্যন্ত মাকে দিয়ে বাচ্চাকে উম দিতে হবে। তাতে বাচ্চা শুকিয়ে ঝরঝরে হবে।
বাচ্চা ফুটার পর বাচ্চার পরিচর্যা ও ডিম পাড়া মুরগির পরিচর্যাঃ
গরম কালে বাচ্চার বয়স ৩-৪ দিন এবং শীত কালে ১০-১২ দিন পর্যন্ত বাচ্চার সাথে মাকে থাকতে দিতে হবে। তখন মুরগি নিজেই বাচ্চাকে উম দিবে। এতে কৃত্রিম উমের (ব্রুডিং) প্রয়োজন হবে না। এ সময় মা মুরগিকে খাবার দিতে হবে। মা মুরগির খাবারের সাথে বাচ্চার খাবার ও কিছু আলাদা করে দিতে হবে। বাচ্চা গুলো মায়ের সাথে খাবার খাওয়া শিখবে।
উপরোক্ত বর্নিত সময়ের পর মুরগিকে বাচ্চা থেকে আলাদা করতে হবে। এ অবস্থায় বাচ্চাকে কৃত্রিম ভাবে ব্রুডিং ও খাবার দিতে হবে। তখন থেকেই বাচ্চা পালনের মত বাচ্চা পালন পদ্ধতির সব কিছুই পালন করতে হবে। মা মুরগিকে আলাদা করে লেয়ার খাদ্য দিতে হবে। এ সময় মা মুরগিকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়ার জন্য পানিতে দ্রবনীয় ভিটামিন দিতে হবে।
মা মুরগি ও বাচ্চা এমনভাবে আলাদা করতে হবে যেন তারা দৃষ্টির বাহিরে থাকে। এমন কি বাচ্চার চিচি শব্দ যেন মা মুরগি শুনতে না পায়। তা না হলে মা ও বাচ্চার ডাকা ডাকিতে কেউ কোন খাবার বা পানি কিছুই খাবে না। আলাদা করার পর অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে গেলে আর কোন সমস্য থাকে না।
প্রতিটি মুরগিকে এ সময় ৮০-৯০ গ্রাম লেয়ার খাবার দিতে হবে। সাথে সাথে ৫-৭ ঘন্টা চড়ে বেড়াতে দিতে হবে। প্রতি ৩-৪ মাস পর পর কৃমির ঔষধ এবং ৪-৫ মাস পর পর আর.ডি.ভি. টীকা দিতে হবে। দেশে একটি মুরগি ডিম পাড়ার জন্য ২০-২৪ দিন সময় নেয়। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ২১ দিন সময় নেয়। বাচ্চা লালন পালন করে বড় করে তোলার জন্য ৯০-১১০ দিন সময় নেয় ।
ডিম থেকে এ ভাবে (৯০-১১০ দিন ) বাচ্চা বড় করা পর্যন্ত একটি দেশী মুরগির উৎপাদন চক্র শেষ করতে স্বাভাবিক অবস্থায় ১২০- ১৩০ দিন সময় লাগে। কিন্তু মাকে বাচ্চা থেকে আলাদা করার ফলে এই উৎপাদন চক্র ৬০-৬২ দিনের মধ্যে সমাপ্ত হয়। বাকি সময় মুরগিকে ডিম পাড়ার কাজে ব্যবহার করা যায়। এই পালন পদ্ধতিকে ক্রিপ ফিডিং বলে।
ক্রিপ ফিডিং পদ্ধতিতে বাচ্চা পালন করলে মুরগিকে বাচ্চা পালনে বেশী সময় ব্যায় করতে হয় না। ফলে ডিম পাড়ার জন্য মুরগি বেশী সময় দিতে পারে। এই পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটার সংখ্যা বেশী হয়। দেখা গেছে বাচ্চার মৃত্যুহারও অনেক কম থাকে। মোট কথা অনেক দিক দিয়েই লাভবান হওয়া যায়। এই পদ্ধতি বর্তমানে অনেকে ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছেন।
দেশীয় পদ্ধতিতে দেশি মোরগ পালনঃ
দেশি মোরগ আবদ্ধ ও ছেড়ে পালন করা যায়। তবে ছেড়ে পালন করলে বেশি লাভবান হওয়া যায় কারন মোরগ নিজের খাদ্য নিজে কুড়িয়ে খায়।এরা মুক্ত আলো বাতাস বিশেষ করে প্রচুর সূর্য কিরণে বেড়ে উঠে যা তাদের শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি করতে সাহায্য করে। এদের খাবারের জন্য তেমন কোন খরচ করতে হয় না।
মোরগ নির্বাচনঃ
দেখে শুনে সুস্থ সবল ও নিরোগ মোরগ সংগ্রহ করতে হবে। মূলত ৪০০-৬০০ গ্রামের মোরগ দিয়ে শুরু করলে ভাল ফলাফল আশা করা যায়। কারন ঐ সময়ের পর মোরগ গুলো দ্রুত বাড়ে এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যা পেলে ২ মাস পর মোরগ গুলোর গড় ওজন ২ কেজির উপর হবে। প্রতি কিলো দেশি মোরগের মূল্য কেমন আছে সেটা নাই বা বললাম। আপনারা নিজেরা লাভ-ক্ষতি বের করে নিন।
মুরগির ঘর তৈরির নিয়মঃ
মোরগের জন্য খোলামেলা ঘর হতে হবে। ১.৫ মিটার (৫ ফুট) লম্বা X১.২ মিটার (৪ ফুট) চওড়া এবং ১ মিটার (৩.৫ ফুট) উঁচু ঘর তৈরি করতে হবে। ঘরের বেড়া বাঁশের দরজা বা কাঠের তক্তা দিয়ে তৈরি করতে হবে। এছাড়া মাটির দেয়ালও তৈরি করা যাবে। বেড়া বা দেওয়ালে আলো বাতাস চলাচলের জন্য ছিদ্র থাকতে হবে। ঘরের চাল খড়, টিন বা বাঁশের দরজার সাথে পলিথিন ব্যবহার করে তৈরি করা যাবে। এরকম ঘরে ১০-১৫টি মোরগ পালন করা যায়।
মুরগীর খাবারঃ
বাড়ির প্রতিদিনের বাড়তি বা বাসী খাদ্য যেমন ফেলে দেওয়া এঁটোভাত, তরকারি,ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গম, ধান, পোকামাকড়, শাক সবজির ফেলে দেওয়া অংশ, ঘাস, লতা পাতা, কাঁকর, পাথর কুচি ইত্যাদি মুরগি কুড়িয়ে খায়।
দেশী মুরগীর পরিচর্যাঃ
ছেড়ে পালন পদ্ধতিতে মুরগি পরিচর্যার জন্য সময় বা লোকজনের তেমন দরকার পড়ে না। তারপরও কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। সকালে মুরগির ঘর খুলে কিছু খাবার দিতে হবে। সন্ধ্যায় মুরগি ঘরে ওঠার আগে আবার কিছু খাবার দিতে হবে। ঘরে উঠলে দরজা বন্ধ করে দিতে হবে।
মুরগির পায়খানা ঘরের মেঝেতে যেন লেপ্টে না যায় সেজন্য ঘরের মেঝেতে ধানের তুষ, করাতের গুঁড়া ২.৫ সে.মি. (১ ইঞ্চি) পুরু করে বিছাতে হবে। পায়খানা জমতে জমতে শক্ত জমাট বেঁধে গেলে বারবার তা উলট-পালট করে দিতে হবে এবং কিছুদিন পর পর পরিষ্কার করতে হবে। এ পদ্ধতিতে দেশি মোরগ পালন করা গেলে প্রায় তেমন কোন খরচ ছাড়াই ভাল একটা মুনাফা পাওয়া যাবে।
দেশি মুরগি পালনে যত্ন নিতে হবেঃ
বাড়ির আশপাশে চরে বেড়িয়ে বাড়ির উচ্ছিষ্ট খাবার, পোকামাকড়, কেঁচো, কচি ঘাসপাতা খায় তারা। সে অর্থে প্রতিপালনের কোনও খরচ নেই বললে চলে। আপাতদৃষ্টিতে লাভজনক মনে হলেও আসলে অতটা লাভ হয় না। ছাড়া মুরগি অন্যত্র ডিম পেড়ে আসে, কখনও রোগে মারা যায়। তাই দেশি মুরগির পালন লাভজনক করতে হলে কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার, সে জাত নির্বাচনেই হোক বা রোগ পরিচর্যায়।
প্রথমে আসি মুরগির জাতে। ব্রয়লার খামারের হাইব্রিড মুরগি উঠোনে ছেড়ে পালন করা যায় না। তাই খাঁটি জাতগুলোকে বাছতে হবে। যেমন, রোড আইল্যান্ড রেড (আরআইআর) বা ব্ল্যাক অস্ট্রালর্প। রঘুনাথপুর, বালুরঘাটের রাজ্য মুরগি খামারে লাল বা আরআইআর এবং কালো বা ব্ল্যাক অস্ট্রালর্প মুরগির বাচ্চা পাওয়া যায়। ইদানীং কালে বনরাজা, গিরিরাজা, গ্রামরপ্রিয়া ইত্যাদি জাত কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়েছে।
মুরগী রাতে রাখার জন্য ঘর বানাতে হবে। মাটি থেকে সামান্য উপরে বাঁশ বা কাঠ দিয়ে কম খরচে খড় বা টালি ঢেকে তৈরি ঘরগুলো যেন শুকনো, পরিষ্কার হয়। আর আলো-বাতাস খেলে। প্রতিটি মুরগীর জন্য গড়ে তিন বর্গফুট জায়গা ধরতে হবে।
দেশি মুরগি চরে বেড়িয়ে তার খাবার সংগ্রহ করে নিলেও এ ধরনের উন্নত জাতের মুরগির পুরো উৎপাদন ক্ষমতা কাজে লাগাতে অল্প পরিমাণে সুষম খাবার দেওয়া প্রয়োজন।
দানাদার খাবারঃ
চালের গুঁড়ো (৩০০ গ্রাম), খুদ বা গম ভাঙা (২৮০ গ্রাম), সর্ষে/তিল খৈল (২০০ গ্রাম), মাছ বা সোয়াবিন গুঁড়ো (২০০ গ্রাম), ভিটামিন ও খনিজ লবণ মিশ্রণ (২০ গ্রাম)।
মুরগির সংখ্যা অনুযায়ী মাথা পিছু ৫০-৭০ গ্রাম হিসাবে অর্ধেক সকালে ও অর্ধেক বিকালে খেতে দিতে হবে। রাতে মুরগি রাখার যে ঘর আছে, সেখানে নির্দিষ্ট পাত্রে জল ও খাবার দিতে হবে। যাতে সকালে ঘর থেকে বেরনো বা পরে ঘরে ঢোকার সময় ওই খাবার ও জল খাওয়া অভ্যাস তৈরি হয়। এই অভ্যাস থাকলে ওষুধ গুলে খাওয়াতে সুবিধা হয়। মুরগির খাবার সবসময় শুকনো ও পরিষ্কার রাখতে হবে। বেশি দিন জমা রাখলে ছত্রাক সংক্রমণ ঘটে।
সংকরায়ণ পদ্ধতিতে দেশি মুরগির সঙ্গে উন্নত মোরগ রেখে প্রাকৃতিক প্রজনন ঘটিয়ে দেশি মুরগির জিনগত উৎকর্ষতা বাড়ানো যায়। প্রতি ১০টি দেশি মুরগি পিছু ১টি উন্নত জাতের মোরগ রাখতে হবে। যে সংকর মুরগি জন্মাবে, তা দেশি মুরগির চেয়ে দ্রুত (৪-৫ মাস বয়সে) এবং প্রায় দ্বিগুণ (বছরে ১২০-১৪০টি) ডিম দেবে।
রোগব্যাধি মুরগি পালনের অন্যতম সমস্যা। তাই নিয়মিত মুরগির ঘর চুন বা জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
প্রতি ২ মাসে একবার করে কৃমিনাশক ওষুধ (পাইপেরাজিন তরল বয়স অনুযায়ী ০.৫-১ মিলি) জলে গুলে খাওয়াতে হবে। রানিক্ষেত বা বসন্তের মতো কয়েকটি সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত টিকাকরণ জরুরি। টিকা দেওয়ার দশ দিন আগে কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে।
মুরগিকে টিকাকরণঃ
বিশেষত রানিক্ষেত( বিসিআরডিভি টিকা ৭-১০ দিন বয়সে চোখে এক ফোঁটা, ৩০ দিন বয়সে আর এক বার, ২ মাস বয়সে প্রথম কৃমির ওষুধ এবং আড়াই মাস বয়সে ডানার তলায়( ফাউল পক্স) ০.৫ মিলি ইঞ্জেকশন অবশ্যই নিতে হবে। ৩ মাস বয়সে ( আরডিভি টিকা) ১ সিসি করে রানের মাংসে এবং প্রতি ৩ মাস পর পর আরডিভি টিকা দিতে হবে।
দেশী মুরগি বানিজ্যিকভাবে পালনঃ
দেশী মুরগি বানিজ্যিকভাবে পালন কৌশল আয় বৃদ্ধি ও পারিবারিক পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধানে দেশী মুরগী প্রতিপালন বিশেষ অবদান রাখতে পারে । আমরা সবাই বলে থাকি দেশী মুরগির উৎপাদন কম । কিন্তু বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষ লক্ষ্য এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশী মুরগীর উৎপাদন দ্বিগুনের ও বেশী পাওয়া সম্ভব। দেশী মুরগি থেকে লাভ জনক উৎপাদন পওয়ায় বিভিন্ন কৌশল এখানে বর্ননা করা হয়েছে।
ফুটানোর ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষনঃ
আরেকটি প্রয়োজনীয় ̧গুরুত্বপূর্ন কাজ। ডিম পাড়ার পর ডিম সসংগ্রহের সময় পেন্সিল দিয়ে ডিমের গায়ে তারিখ লিখে ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষন করতে হবে। ডিম পাড়া শেষ হলেই মুরগি কুঁচো হবে। গরম কালে ৫-৬ দিন বয়সের ডিম এবং শীত কালে ১০-১২ দিন বয়সের ডিম ফুটানোর জন্য নির্বাচন করতে হবে।
উপসংহারঃ
বাংলাদেশের গ্রাম এলাকায় প্রায় প্রতিটি পরিবার দেশী মুরগি পালন করে থাকে। এদের উৎপাদন ক্ষমতা বিদেশী মুরগির চেয়ে কম। উৎপাদন ব্যয়ও অতি নগণ্য। এটি অধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। এদের মাংস ও ডিমের মূল্য বিদেশী মুরগীর তুলনায় দ্বিগুণ, এর চাহিদাও খুবই বেশী। দেশী মুরগির মৃত্যুহার বাচ্চা বয়সে অধিক এবং অপুষ্টিজনিত কারনে উৎপাদন আশানুরূপ নয়। বাচ্চা বয়সে দেশী মোরগ-মুরগির মৃত্যুহার কমিয়ে এনে সম্পূরক খাদ্যের ব্যবস্থা করলে দেশী মুরগি থেকে অধিক ডিম ও মাংস উৎপাদন করা সম্ভব।
আয় বৃদ্ধি ও পারিবারিক পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধানে দেশী মুরগী প্রতিপালন বিশেষ অবদান রাখতে পারে । আমরা সবাই বলে থাকি দেশী মুরগির উৎপাদন কম কিন্তু বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষ লক্ষ্য এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশী মুরগীর উৎপাদন দ্বিগুনের ও বেশী পাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট দেশী মুরগি উৎপাদনে উন্নত কৌশল শীর্ষক প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করেছে। এ কৌশল ব্যবহার করে খামারিরা দেশী মুরগি থেকে অধিক ডিম ও মাংস উৎপাদন করে পারিবারিক পুষ্টি ও আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে।
(সংগ্রহিত)
See less
নতুন ছাগলকে অন্যন্য ছাগলের সাথে মিশানোর আগে কি কি টিকা বা ঔষধ প্রয়োগ করবো? ১) মনে রাখবেন ছাগলকে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কখনো ভ্যাক্সিনেশন করবেন না। ২) পালন করার জন্য, হাট/বাজার থেকে ছাগল কিনে উচিত নয়। কিন্তু যদি হাট থেকে ছাগল কিনতেই হয় তবে বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। ৩) হাট থেকে ছাগল নিয়ে আসার সবার প্রRead more
নতুন ছাগলকে অন্যন্য ছাগলের সাথে মিশানোর আগে কি কি টিকা বা ঔষধ প্রয়োগ করবো?
১) মনে রাখবেন ছাগলকে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কখনো ভ্যাক্সিনেশন করবেন না।
২) পালন করার জন্য, হাট/বাজার থেকে ছাগল কিনে উচিত নয়। কিন্তু যদি হাট থেকে ছাগল কিনতেই হয় তবে বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে।
৩) হাট থেকে ছাগল নিয়ে আসার সবার প্রথমে তাকে সেনিটাইজ করতে হবে। পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিয়ে মুখ এবং তার পা পরিষ্কার করে দিতে হবে, সম্ভব হলে শরীরে হালকা হালকা স্প্রে করে দিতে হবে।
৪). ছাগল নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ছাগলকে জল দেওয়া যাবে না, কমপক্ষে কম দুই থেকে তিন ঘণ্টা এরপর যখন জল দেবেন হালকা গরম করে নিনে তারপর জলটাকে ঠান্ডা করে নেবেন, 1 লিটার জলে হাফ চামচ গুঁড়ো হলুদ অথবা একলিটার জলে এক চামচ অনুপাতে অক্সিটেট্রাসাইক্লিন পাউডার মিক্স করে দিয়ে ছাগলকে পান করাতে পারেন।
৫) 1 থেকে 2 দিন কোনরকম দানা হবার দেবেন না। যদি কোন পাতা খাবার দিতে চান, ছাগল নিয়ে আসার আধঘন্টা পরে তাকে কাঁচা পাতা বা কাঁচা ঘাস খেতে দিতে পারেন।
৬) বাজার থেকে ছাগল নিয়ে আসার পর ফার্মের ভিতরে ঢুকবেন না অন্য কোন ছাগলের সঙ্গে মিশতে দেবেন না, 15 দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে, আলাদা কোন ঘরে আলাদা পাত্রে তাদেরকে জল এবং খাবার দিতে হবে, 15 দিনের মধ্যে যদি কোনো অসুস্থতা দেখা দেয় সেই হিসেবে তাদেরকে চিকিৎসা করতে হবে। 15 দিনে রাখার পর যদি ছাগলগুলোকে সুস্থ দেখা যায় এরপরে কিন্তু আপনি ফার্মের ভেতরে ঢোকাতে পারেন বা বাকি ছাগলের সঙ্গে মিশতে দিতে পারেন।
৭) 15 দিন পর ছাগলকে সঠিক মাত্রায় কৃমির ঔষধ লিভার টনিক দিয়ে এক মাস পর তাদেরকে ভ্যাক্সিনেশন করতে পারবেন। পিপিআর 1 মিলিলিটার চামড়ার নিচে তিন মাস বয়স থেকে বছরে একবার, ক্ষুরারোগ ২ মিলিলিটার চামড়ার নিচে তিন মাস বয়স থেকে বছরে দুইবার, তড়কা 1 মিলিলিটার চামড়ার নিচে তিন মাস বয়স থেকে বৎসরে একবার, গোটপক্স 0.25 থেকে 05 মিলিলিটার ছয় মাস বয়স থেকে চামড়ার নিচে বৎসরে একবার।
বাজার হতে একটা খাসি কিনলে কিভাবে বুঝবো সকল টিকা দেওয়া আছে কি না?
এটি জানার একটিই উপায় আছে, তা হলো জিজ্ঞাসা। “ভ্যাকসিন হিস্টোরি রেকর্ড” চাইবেন।
হাট/বাজারে বিক্রি হওয়া ছাগলের সাধারনত কোন প্রকার ভ্যাকসিন দেওয়া থাকে না।
ছাগলটি খামার/ফার্মের হলে“ভ্যাকসিন হিস্টোরি রেকর্ড” দিতে পারবে আশা করা যায়।
অর্থ্যাৎ, যদি ছাগল বিক্রেতা ““ভ্যাকসিন হিস্টোরি” না দিতে পারে, তবে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি বলেই ধরে নিয়ে নিয়মনুয়ায়ী আপনার ছাগলের টিকা আপনাকেই দিতে হবে।
এক সপ্তাহ বা দশ দিন আগে যদি টিকা দেওয়া থাকে, টিকা দেওয়ার বিষয়টি জানা না থাকার কারণে যদি আমি আবার পি.পি.আর/ক্রিমির ঔষধ প্রয়োগ করি তাহলে সমস্যা হবে কি?
কোন কিছুই মাত্রারিক্ত ভালো নয়, ভয়ঙ্কর কিছু না হলেও ছাগলে অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এক সপ্তাহ বা দশ দিন আগে যদি টিকা দেওয়া থাকে, অবশ্যই ছাগলে মালিকের মনে থাকবে, তারকাছে থেকে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
See less