Skip to content

 

surah adiyat bangla: সূরা আদিয়াত বাংলা উচ্চারণ

surah adiyat bangla uccharon, সূরা আদিয়াত বাংলা উচ্চারণ

(১) সূরা আদিয়াত সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

সুরা আল-আদিয়াত পবিত্র কুরআনের ১০০তম সূরা। এটি পবিত্র মক্কা নগরীতে অবতীর্ণ হয়। এ সূরায় প্রথম শব্দ আল-আদিয়াত। এ শব্দ থেকেই এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এ সূরায় আয়াত সংখ্যা সর্বমোট ১১টি।

(২) surah adiyat bangla

সূরা আদিয়াতبِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ ‎
বিস্‌মিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহীম
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)
১ম আয়াতوَٱلْعَٰدِيَٰتِ ضَبْحًا
ওয়াল ‘আ-দিয়া-তি দাবহা-।
শপথ উর্ধ্বশ্বাসে চলমান অশ্বসমূহের,
২য় আয়াতفَٱلْمُورِيَٰتِ قَدْحًا
ফাল মূরিয়া-তি কাদহা-।
অতঃপর ক্ষুরাঘাতে অগ্নিবিচ্ছুরক অশ্বসমূহের,
৩য় আয়াতفَٱلْمُغِيرَٰتِ صُبْحًا
ফাল মুগীরা-তি সুবহা-।
অতঃপর প্রভাতকালে আক্রমণকারী অশ্বসমূহের,
৪র্থ আয়াতفَأَثَرْنَ بِهِۦ نَقْعًا
ফাআছারনা বিহী নাক‘আ-।
ও যারা সে সময়ে ধুলি উৎক্ষিপ্ত করে,
৫ম আয়াতفَوَسَطْنَ بِهِۦ جَمْعًا
ফাওয়াছাতানা বিহী জাম‘আ-।
অতঃপর যারা শক্রদলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে,
৬ষ্ঠ আয়াতإِنَّ ٱلْإِنسَٰنَ لِرَبِّهِۦ لَكَنُودٌ
ইন্নাল ইনছা-না লিরাব্বিহী লাকানূদ।
নিশ্চয় মানুষ তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ।
৭ম আয়াতوَإِنَّهُۥ عَلَىٰ ذَٰلِكَ لَشَهِيدٌ
ওয়া ইন্নাহূ‘আলা-যা-লিকা লাশাহীদ।
এবং সে অবশ্য এ বিষয়ে অবহিত,
৮ম আয়াতوَإِنَّهُۥ لِحُبِّ ٱلْخَيْرِ لَشَدِيدٌ
ওয়া ইন্নাহূলিহুব্বিল খাইরি লাশাদীদ।
এবং সে নিশ্চিতই ধন-সম্পদের ভালবাসায় মত্ত।
৯ম আয়াতأَفَلَا يَعْلَمُ إِذَا بُعْثِرَ مَا فِى ٱلْقُبُورِ
আফালা-ইয়া‘লামুইযা-বু‘ছিরা মা-ফিল কুবূর।
সে কি জানে না, যখন কবরে যা আছে, তা উত্থিত হবে,
১০ম আয়তوَحُصِّلَ مَا فِى ٱلصُّدُورِ
ওয়া হুসসিলা মা-ফিসসুদূর।
আর অন্তরে যা (কিছু লুকানো) আছে তা প্রকাশ করা হবে,
১১তম বা
শেষ আয়াত
إِنَّ رَبَّهُم بِهِمْ يَوْمَئِذٍ لَّخَبِيرٌۢ
ইন্না রাব্বাহুম বিহিম ইয়াওমাইযিল্লাখাবীর।
সেদিন তাদের কি ঘটবে, তাদের রাব্ব অবশ্যই তা সবিশেষ অবহিত।

(৩) সূরা আদিয়াত বাংলা উচ্চারণ

বিস্‌মিল্লাহির রাহ্‌মানির রাহীম 
1. ওয়াল ‘আ-দিয়া-তি দাবহা-। 
2. ফাল মূরিয়া-তি কাদহা-। 
3. ফাল মুগীরা-তি সুবহা-। 
4. ফাআছারনা বিহী নাক‘আ-। 
5. ফাওয়াছাতানা বিহী জাম‘আ-। 
6. ইন্নাল ইনছা-না লিরাব্বিহী লাকানূদ। 
7. ওয়া ইন্নাহূ‘আলা-যা-লিকা লাশাহীদ। 
8. ওয়া ইন্নাহূলিহুব্বিল খাইরি লাশাদীদ। 
9. আফালা-ইয়া‘লামুইযা-বু‘ছিরা মা-ফিল কুবূর। 
10. ওয়া হুসসিলা মা-ফিসসুদূর। 
11. ইন্না রাব্বাহুম বিহিম ইয়াওমাইযিল্লাখাবীর।

(৪) সূরা আদিয়াত অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)
1. শপথ উর্ধ্বশ্বাসে চলমান অশ্বসমূহের, 
2. অতঃপর ক্ষুরাঘাতে অগ্নিবিচ্ছুরক অশ্বসমূহের, 
3. অতঃপর প্রভাতকালে আক্রমণকারী অশ্বসমূহের, 
4. ও যারা সে সময়ে ধুলি উৎক্ষিপ্ত করে, 
5. অতঃপর যারা শক্রদলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে, 
6. নিশ্চয় মানুষ তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ। 
7. এবং সে অবশ্য এ বিষয়ে অবহিত, 
8. এবং সে নিশ্চিতই ধন-সম্পদের ভালবাসায় মত্ত। 
9. সে কি জানে না, যখন কবরে যা আছে, তা উত্থিত হবে, 
10. আর অন্তরে যা (কিছু লুকানো) আছে তা প্রকাশ করা হবে, 
11. সেদিন তাদের কি ঘটবে, তাদের রাব্ব অবশ্যই তা সবিশেষ অবহিত। 

(৫) surah adiyat bangla uccharon chobi

surah adiyat bangla uccharon chobi

(৬) surah adiyat uccharon audio

(৭) সূরা আল আদিয়াত বাংলা উচ্চারণ ভিডিও

(Creative Commons Attribution license@https://www.youtube.com/@TheReminders)

(৮) সূরা আদিয়াত এর শানে নুযুল

তৎকালীন আরবে যখন এক ভয়ংকর অরাজকতা ও অস্থিতিশীলতা বিরাজমান ছিল, আরবের গোত্রসমূহ পরস্পর রক্তপাত ও লুষ্ঠনে নিয়োজিত ছিল, কোনো গোত্রই নিরাপদে ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে এ সুরাটি অবতীর্ণ হয় একথা স্মরণ করে দেওয়ার জন্য যে, ধন-সম্পদের লোভে অন্যায় অসৎ কর্ম করলে আখিরাতে জবাবদিহি করতে হবে।

See also  সূরা বাকারার ৩০ ও ৩১ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

(৯) সূরা আদিয়াত এর ব্যাখ্যা

এ সূরা তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।

প্রথম পাঁচ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সামরিক অশ্বের নানা গুণ বর্ণনা এবং এগুলোর শপথ করেছেন।

অতঃপর দ্বিতীয় পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালা মানুষের দুটি বিশেষ স্বভাব সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন।

এগুলো হলো-

  1. স্রষ্টার প্রতি অকৃতজ্ঞতা।
  2. সম্পদের প্রতি লোভ-লালসা।

আর মানুষ স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে এ দুটি কাজ করে থাকে। অথচ এগুলো মানুষের করা একেবারেই অনুচিত।

এজন্য সূরার শেষ পর্যায়ে মানুষকে আখিরাত ও কবরের জীবনের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বলা হয়েছে, মানুষ কি জানে নাযে তাকে কবরে যেতে হবে। অতঃপর কিয়ামতে তাদের সকল কার্যকলাপ প্রকাশ করা হবে। এমনকি সে অন্তরে যেসব অকৃতজ্ঞতা ও লোভ-লালসা পোষণ করত, তাও প্রকাশ করা হবে।

পরিশেষে সমস্ত কিছুর বিচার করা হবে। আর সেদিনের অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা খুব ভালোভাবেই অবহিত। সুতরাং মানুষের উচিত সকল অন্যায় ও অকৃতজ্ঞতা ত্যাগ করে সৎপথে জীবনযাপন করা।

(১০) সূরা আদিয়াত এর তাফসীর

ক) আয়াত: ১-৭

এই সূরায় আল্লাহ তা’আলা সামরিক ঘোড়ার কিছু বিশেষ অবস্থা বর্ণনা করেছেন এবং তাদের শপথ করে বলেছেন যে, মানুষ তার পালনকর্তার প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ । উল্লেখ্য যে, আল্লাহ তা’আলা যদি কোনো বস্তুর শপথ করে কিছু বর্ণনা করেন, বর্ণিত বিষয় সে শপথকৃত বস্তুর সাথে গভীর সামঞ্জস্য থাকে। এমনকি, সে বস্তু যেন ওই বিষয়ের সাক্ষ্য দান করে। এই সূরায় সামরিক ঘোড়ার কঠোর কর্তব্যনিষ্ঠার বিষয়টা যেন মানুষের অকৃজ্ঞতার সাক্ষ্যস্বরূপ উল্লেখ করা হয়েছে।

কেননা সামরিক ঘোড়া যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষের আদেশ ও ইঙ্গিতের অনুসরণ হিসেবে কত কঠোর পরিশ্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শত্রুদের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। অথচ এসব ঘোড়া মানুষ সৃষ্টি করেনি। তাদেরকে যে ঘাস-পানি মানুষ দেয়, তাও তার সৃজিত নয়। আল্লাহর সৃষ্টি করা জীবনোপকরণকে মানুষ তাদের কাছে পৌঁছে দেয় মাত্র। এখন ঘোড়াকে দেখুন, সে মানুষের এতটুকু অনুগ্রহকে কীভাবে চিনে এবং স্বীকার করে। সামান্য ইশারায় সে তার জীবনকে নির্ভয়ে বিপদের মুখে ঠেলে দেয় এবং কঠোরতর কষ্ট সহ্য করে।

See also  সূরা বাকারার ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

পক্ষান্তরে মানুষের প্রতি লক্ষ করুন, আল্লাহ তা’আলা তাকে এক ফোঁটা তুচ্ছ বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন, বিভিন্ন কাজের শক্তি দিয়েছেন, বুদ্ধি ও চেতনা দান করেছেন, তার পানাহারের সামগ্রী সৃষ্টি করেছেন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সহজলভ্য করে তার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। কিন্তু মানুষ এত সব উচ্চস্তরের অনুগ্রহেরও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না।

হাসান বসরী রহ. বলেন, لَكَنُودٌ সেই ব্যক্তি, যে বিপদ স্মরণ রাখে এবং অনুগ্রহ ভুলে যায়।

ইমাম তিরমিযীর মতে,

“যে অনুগ্রহ দেখে, কিন্তু অনুগ্রহদাতাকে দেখে না।”

(মাআরিফুল কুরআন)

খ) আয়াত: ৮

وَإِنَّهُۥ لِحُبِّ ٱلْخَيْرِ لَشَدِيدٌ এ আয়াতে خَيْرِ শব্দের অর্থ হলো মঙ্গল । আরবে ধন-সম্পদকেও خَيْرِ (মঙ্গল) বলা হয় । প্রকৃতপক্ষে কোনো কোনো ধন-সম্পদ মানুষকে হাজারো বিপদে জড়িয়ে দেয়। হারাম ধন-সম্পদ তো পরকালে মানুষের জন্য বিপদ হবে। কিন্তু আরবের প্রথা অনুযায়ী, এ আয়াতে ধন-সম্পদকে خَيْرِ (মঙ্গল) বলে ব্যক্ত করা হয়েছে।

উপরোক্ত আয়াতে সামরিক ঘোড়ার শপথ করে দুটি বিষয় বলা হয়েছে-

  1. মানুষ অকৃতজ্ঞ, সে কষ্ট স্মরণ রাখে এবং অনুগ্রহ ভুলে যায় ।
  2. সে ধন-সম্পদের লালসায় মত্ত। এমনকি, ধন-সম্পদের লালসায় মত্ত হওয়ার কারণেই অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর অকৃতজ্ঞ হয়।

গ) আয়াত: ৯-১১

মানুষ কি জানে না যে, কিয়ামতের দিন সব মৃতকে কবর থেকে জীবিত উত্থিত করা হবে এবং অন্তরের সকল কিছু ফাঁস হয়ে যাবে? এটাও সবার জানা যে, আল্লাহ তা’আলা সব অবস্থা সম্পর্কেই অবহিত। অতএব তদানুযায়ী শাস্তি ও প্রতিদান দেবেন। কাজেই বুদ্ধিমানের কর্তব্য হলো অকৃতজ্ঞতা না করা এবং ধন-সম্পদের লালসায় মত্ত না হওয়া।

(১০) সূরা আদিয়াত এর শিক্ষা

এ সূরা থেকে আমরা নিম্নোক্ত শিক্ষা লাভ করি-

  • নিঃসন্দেহে মানুষ তার প্রতিপালকের প্রতি অকৃতজ্ঞ।
  • ধন-সম্পদের প্রতিও মানুষের আসস্তি প্রবল।
  • আখিরাতে মানুষের অন্তরের গোপন বিষয়ও প্রকাশ করা হবে। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা মানুষের চূড়ান্ত ফায়সালা করবেন।
See also  সূরা বাকারার ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা

অতএব, আমরা সর্বদা এ সূরার শিক্ষা মনে রাখব। আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করব। কখনোই তীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হবো না। সাথে সাথে ধন-সম্পদের লোভে পড়ে অন্যায় ও অসৎ কাজ করব না। বরং আখিরাতে জবাবদিহি করার কথা স্মরণ রেখে সর্বদা আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য করব।

আলোচিত/উত্তরিত অনুসন্ধানসমূহ: surah adiyat bangla, সূরা আদিয়াত বাংলা উচ্চারণ, সূরা আদিয়াত, surah adiyat, সূরা আদিয়াত অর্থ, সূরা আল আদিয়াত বাংলা উচ্চারণ, সূরা আদিয়াত এর তাফসীর, সূরা আদিয়াত এর শানে নুযুল।

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে জানতে– ‘ইন বাংলা নেট ইসলাম’ (inbangla.net/islam) এর সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

nv-author-image

ইন বাংলা নেট ইসলাম

পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত যা কিছু বাংলাতে।View Author posts