সূরা আল-বাকারায় প্রথমে মু‘মিন-মুত্তাকিদের বিশ্বাস, জীবনাচার তুলে ধরা হয়েছে। তারপর সর্বকালের ও সকল দেশের কাফিরদের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে।
এ আলোচনাটি অধ্যয়নে আপনি- কাফের অর্থ কি? কাফের কাকে বলে? কাফের কারা? তা বুঝতে পারবেন, নাস্তিক ও কাফির এর বৈশিষ্ট্যে সমূহ জানতে পারবেন।
(১) কাফের অর্থ কি? কাফের কাকে বলে? কাফের কারা?
কাফের অর্থ কি: কাফির ‘কুফর’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ-অস্বীকার করা, গোপন করা।
কাফের কাকে বলে: শরীআতের পরিভাষায় যে ব্যক্তি আল্লাহ, রাসূল, আসমানি কিতাব, আখিরাত-বেহেশত-দোযখ, ফেরেশতা ইত্যাদি ইসলামের মৌলিক আকিদাসমূহে বিশ্বাস করে না, তাকে কাফির বলা হয়।
(২) কাফের এর বৈশিষ্ট্যে সমূহ
ক) তারা অবিশ্বাসী
সূরা আল-বাকারায় কাফিরদের স্বরূপ উদঘাটন করে বলা হয়,
“নিশ্চয় যারা কুফরি করে তুমি তাদেরকে সাবধান কর বা না কর তাদের পক্ষে উভয়ই সমান; তারা ঈমান আনবে না। আল্লাহ তাদের হৃদয় ও কানে সিল মেরে দিয়েছেন। আর তাদের চোখের উপর রয়েছে আবরণ। তাদের জন্য রয়েছে ভীষণ আযাব।”
(সূরা আল-বাকারা ৬-৭)
এ থেকে কাফিরদের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। তা হল, এরা সব সময়ে বাঁকা পথে চলে। হিদায়াত গ্রহণ, ভীতি প্রদর্শন বা সত্য সুন্দরের আহ্বানে তারা কখনোই সাড়া দেয় না। এজন্যে এদেরকে বোঝানো বা ভয় দেখানো সবই বৃথা। কেননা তাদের মন-মগজের জানালাগুলো রুদ্ধ।
খ) তারা আল্লাহর সাথে কুফরি করে
কাফিরদের ঊর্ধ্ব জগতের সাথে যোগাযোগ ও যোগসূত্র নেই। কাফির যেহেতু আল্লাহ ও অদৃশ্য সৃষ্টিলোকে বিশ্বাস রাখে না, তাই তাদের সাথে আল্লাহ ও অদৃশ্যলোকের বিশ্বাস গড়ে উঠে না। সে আল্লাহ ও অদৃশ্যলোক থেকে বিচ্ছিন্ন ।
গ) তাদের সত্য-মিথ্যা বোঝার অনুভূতি নেই
কাফির-নাস্তিকদের মন সত্যকে বোঝা ও মেনে নেওয়ার উপযুক্ত নয়। এজন্য তারা কোনটি সত্য ও কোনটি মিথ্যা, তা অনুধাবন করতে পারে না। তাদের মনে সত্যের অনুভূতি জাগ্রত হয় না।
ঘ) তাদের সত্য-শ্রবণের শক্তি নেই
কাফিরদের শ্রবণ শক্তিকে হরণ করা হয়েছে। এজন্য তাদের কর্ণকুহরে হেদায়াতের কোন ধ্বনি বা প্রতিধ্বনি ঢোকে না।
ঙ) তারা সত্য গ্রহণে অক্ষম
তাদের চোখের উপর রয়েছে অসত্যের ঢাকনা। এ কারণে চোখে হেদায়াতের কোন আলো তারা দেখতে পায় না। কাজেই তাদের সত্য-মিথ্যা উপলব্ধি করার শক্তি-সামর্থ্য রহিত হয়ে গেছে।
চ) এরা মোহান্ধ
ইসলাম ধর্মকে অস্বীকারকারীরা এক ধরনের ভুলের মধ্যে নিমজ্জিত। তারা অহংকার ও গোয়ার্তুমির স্পর্ধা দেখায়, যার কারণে তারা কোন যুক্তি মানতে চায় না। অজ্ঞতা কিংবা একগুঁয়ে স্বভাবের কারণে সব সময় তারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে থাকে। অন্যকে হেদায়াতের আলো থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। সমাজ-সভ্যতাকে সুন্দরের দিকে নিয়ে যেতে দেয় না। তাদের স্বার্থবাদী নীতি কায়েম রাখার জন্যে তারা খুবই স্বার্থান্ধ হয়।
কুফরি-নাস্তিকতা একটি জঘন্যতম অপরাধ। এটা আল্লাহ-দ্রোহিতা। আল্লাহর আনুগত্য করতে এরা নিজেরা প্রস্তুুত নয়। অন্যদেরকেও এরা আল্লাহর পথে চলতে বাধা দেয়। কাফিরদের বেশিষ্ট্য এটাই। এ স্বভাবের কারণেই তারা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।
[সূত্র: ওপেন স্কুল]