Skip to content

 

কুরআন ও হাদিসের মধ্যে পার্থক্য

কুরআন ও হাদিসের মধ্যে পার্থক্য

(১) কুরআন ও হাদিসের পার্থক্য

কুরআন ও হাদিস ইসলামি জীবন বিধানের উৎস। কুরআন মাজীদ ইসলামি শরীআতের প্রথম ও প্রধান উৎস এবং হাদিস দ্বিতীয় উৎস। ইসলামের যাবতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান এ দুটোকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। এ দুটো একই উৎস থেকে উৎসারিত। তবে কুরআন মাজীদ স্বয়ং আল্লাহ পাকের ভাব-ভাষা মর্ম সম্বলিত আর হাদিস আল্লাহর পরোক্ষ ইঙ্গিত যা রাসূলের ভাষায় প্রকাশিত। 

চিত্র- পবিত্র কুরআন মাজীদ
চিত্র- পবিত্র কুরআন মাজীদ
চিত্র- বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থ
চিত্র- বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থ

কুরআন ও হাদিসের পার্থক্য কিছু উভয়ের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

কুরআনহাদিস
১. কুরআন মাজীদ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ ওহী।১. হাদিস আল্লাহর পক্ষ থেকে পরোক্ষ ওহী।
২. কুরআন হযরত জিবরাঈল (আ)-এর মাধ্যমে নাযিল হয়েছে।২. হাদিস অপ্রকাশ্য ওহী এবং মহানবী (স)-এর বাণী।
৩. কুরআনের শব্দাবলি ও ভাষা উভয়ই আল্লাহর নিজের।৩. হাদিসের শব্দাবলি রাসূলের নিজস্ব।
৪. কুরআনকে বলা হয় ‘ওহীয়ে মাতলু’।৪. হাদিসকে বলা হয় ‘ওহীয়ে গায়রে মাতলু’ বা অপঠিতব্য প্রত্যাদেশ।
৫. নামাযে কুরআন পাঠ করা ফরয।৫. নামাযে হাদিস পাঠ করা হয়না।
৬. কুরআন একটিমাত্র কিতাব।৬. হাদিসের অনেকগুলো প্রকার ও অনেকগুলো কিতাব রয়েছে। যেমন- বুখারী, মুসলিম, আবু-দাউদ, নাসায়ী ইত্যাদি।
৭. সম্পূর্ণ কুরআন শরীআতের অকাট্য দলিল।৭. সকল হাদিস কুরআনের মত ততটা অকাট্য দলিল নয়। শধুমাত্র, সহিস সূত্র বর্ণিত বা বিশুদ্ধ হাদিসগুলো শরীআতের অকাট্য দলিল।
৮. কুরআনে রাসূলের কোন কিছুই সংযোজন কিংবা বিয়োজনও নেই।৯. হাদিস রয়েছে কুরআনের নির্ভুল ব্যাখ্যা, কুরআনের বাহক বিশ্বনবীর (স) পবিত্র জীবনচরিত, কর্মনীতি ও আদর্শ তথা তাঁর বাণী, কাজ, হেদায়াত ও উপদেশাবলির বিস্তৃত উপস্থাপনা।
৯. পুরো কুরআনের যে কোন বিষয় অস্বীকার করলে কাফির হয়।৯. সকল হিাদিস নয় শুধুমাত্র সহিহ সূত্র বর্ণিত বা বিশুদ্ধ হাদিসগুলোর যে কোন বিষয় অস্বীকার করলে কাফির হয়।
১০.অপবিত্র অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ।১০. বিনা উযুতে হাদিস স্পর্শ করা যায়।
১১. কুরআন রাসূলের এক চিরন্তন মুজিযা।১১. হাদিস মুজিযা নয়। রাসুল (সঃ) এর নবুয়াতী জীবনের সকল কথা, কাজ এবং অনুমোদন।
১২. কুরআন ইসলামি শরীআতের প্রধান ভিত্তি।১২. হাদিস ইসলামি শরীআতের দ্বিতীয় ভিত্তি।

শরীআতের দৃষ্টিতে কুরআন ও হাদিসের পার্থক্য সুস্পষ্ট। মর্যাদা ও মূল্যমানের দিক থেকে আল-কুরআন প্রথম এবং হাদিসের স্থান দ্বিতীয় ।

See also  হাদিস সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা, সংকলনের উদ্যোগ ও সংরক্ষণ

(২) কুরআন ও হাদিসে কুদসির মধ্যে পার্থক্য

মোল্লা আলী কারী হাদিসে কুদ্সির সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, ‘হাদিসে কুদসি সেসব হাদিসকে বলা হয়, যার বর্ণনাধারা পূর্ণ চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বল, এবং অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। হযরত মুহাম্মদ (স) কখনও জিবরাঈলের মাধ্যমে জেনে আবার কখনো সরাসরি ওহী কিংবা ইলহাম বা স্বপ্নযোগে জেনে নিজ ভাষায় বর্ণনা করেছেন।’

আল্লামা আবুল বাকা বলেন, ‘কুরআনের শব্দ, ভাষা, অর্থ, ভাব ও কথা সবই আল্লাহর নিকট হতে সুস্পষ্ট ওহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত। আর হাদিসে কুদসির শব্দ ও ভাষা রাসূলের (স) নিজস্ব; কিন্তু এর ভাব ও কথা আল্লাহর নিকট হতে ইলহাম কিংবা স্বপ্নযোগে প্রাপ্ত।’

অন্যান্য হাদিসের চেয়ে হাদিসে কুদসীর গুরুত্ব বেশি। আল-কুরআন ও হাদিসে কুদসীর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। যেমন-

আল-কুরআনহাদিসে কুদ্সি
১. আল-কুরআন মহান মহান আল্লাহর বাণী এবং তা ‘লাওহে মাহ্ফূয’ হতে নাযিল হয়েছে।১. হাদিসে কুদ্সির মূল বক্তব্য আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত, কিন্তু ভাষা রাসূল (স) এর।
২. কুরআন তিলাওয়াত ছাড়া নামায সহীহ হয় না।২. কুরআনের পরিবর্তে হাদেিস কুদসি নামাযে পাঠ করলে নামায হয় না।
৩. কুরআন শেষ নবি ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রাপ্ত একটি অন্যতম মু’জিযা।৩. হাদিসে কুদসি মু’জিযা নয়।

প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত আলেচনা আমরা খুবই সংক্ষিপ্তাকারে কয়েকটি কুরআন ও হাদিসের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা চেষ্টা করেছি।

আল-কুরআন মহান আল্লাহর বাণী, জিব্রাইল (আ) এর মাধ্যমে সরাসরি ওহী যোগে হযরত মুহাম্মাদ (স) -এর প্রতি নাযিল হয়। আর হাদিস রাসূলের (স) কথা, কাজ ও অনুমোদিত কথা-কাজের বিবরণ। হাদিস রাসূলুল্লাহর বাণী। আর কুরআন স্বয়ং আল্লাহর বাণী।

[সূত্র: ওপেন স্কুল]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts

You cannot copy content of this page