Skip to content

ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে?

ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে, ফিতরার পরিমাণ, সদকাতুল ফিতর, ফিতরা কার উপর ওয়াজিব

ফিতরা বা ফেতরা একটি আরবী শব্দ, ফিতর বলতে— সকালের খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হয় যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভঙ্গ করেন।

এটি ইসলামে সাদাকাতুল ফিতর নামে পরিচিত। সাদাকাতুল ফিতর বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে রোজাদারদের বিতরণ করা দানকে।

ইসলামি শরিয়াহ মতে, সামর্থ্য অনুযায়ী আটা, খেজুর, গম, কিশমিশ, পনির ও যবের যে কোনো একটি পণ্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ অথবা এর বাজারমূল্য ফিতরা হিসেবে গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে আর ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না। এই বিষয়টা নিয়ে আমরা অনেকে জানিনা বা ভুলকরি বা দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগি। তো আজরে আলোচনাই আমি এই বিষয়টা সহজ ও সুন্দরভাবে আমনাদের সামতে উপস্থাপন করব ইংশাআল্লাহ। চলুন আমরা শুরু থেকে শুরু করি।

(১) ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর কি?

ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে সাওমের ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে গরিব-দুঃখীদের সহযোগিতায় যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ-সম্পদ দান করা হয়, তাকে সাদাকাতুল ফিতর বলে। একে ‘যাকাতুল ফিতর’ ও বলা হয়।

(২) ফিতরা কেন দিতে হয়?

মুসলমানগণ পবিত্র রমযান মাসে রোযা পালন করেন। পবিত্র রমযান মাসে রোযা পালনের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার প্রতি যে অফুরন্ত নিয়ামত দান করেন, তার শুকরিয়া হিসেবে এবং রোযা পালন কালে যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়, তার ক্ষতিপূরণের জন্য ‘সাদাকাতুল ফিতর’ ওয়াজিব করা হয়েছে।

সাদাকাতুল ফিতর পেলে গরিব-অনাথ লোকেরাও ঈদের খুশিতে অংশীদার হতে পারে। এভাবেই ধনী-গরিবের মধ্যে ব্যবধান কমে আসে এবং সম্প্রীতি ও সৌহার্দ গড়ে ওঠে।

হাদিসে আছে,

“রাসুলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতর আবশ্যক করেছেন রোযাদারকে অনর্থক কথা ও অশ্লীলতা থেকে পবিত্র করার জন্য ও মিসকিনদের খাদ্যের ব্যবস্থা করার নিমিত্ত”

(আবু দাউদ)

(৩) ফিতরা কার উপর ওয়াজিব বা আবশ্যিক?

৭.৫ ভরি স্বর্ণ বা ৫২.২ ভরি রৌপ্য বা সমপরিমাণ মূল্যের অর্থ/সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত হিসেবে কারো নিকট পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী থাকলে থাকলে তাকে নিসাব বলে, এতে তার উপর যাকাত আদায় করা ফরজ হয়।

মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক প্রত্যেক স্বাধীন মুসলিম নর-নারীর উপর ‘সাদাকাতুল ফিতর’ বা ফিতরা আদায় ওয়াজিব। শিশু ও নির্ভরশীল ব্যক্তির সাদাকা অভিভাবক আদায় করবে।

এককথায়, যাদের উপর যাকায় আদায় করা ফরজ হয়েছে, তাদের উপর ‘সাদাকাতুল ফিতর’ বা ফিতরা আদায় ওয়াজিব।

যাঁরা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নন, তাঁদের জন্য ফিতরা আদায় করা সুন্নত ও নফল ইবাদত।

(৪) ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে?

প্রকৃত হকদারকেই ফিতরা দিতে হবে। যাকে তাকে ফিতরা দেওয়া যাবে না। ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে সে সম্পর্কে রয়েছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা। আর তাহলো-

যারা জাকাত পাওয়ার অধিকার রাখে। তারাই সাদকায়ে ফিতরের হকদার। যেসব খাত ও ব্যক্তি জাকাতের হকদার নয়, তাদের ফিতরা দেয়া যাবে না।

জাকাত/ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে বিষয়টি কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন,

“জাকাত হলো কেবল ফকির, মিসকিন, জাকাত আদায়কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য, এই হলো আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।”

(সুরা তাওবাহ : আয়াত ৬০)

আল্লাহ তআলা এ আয়াতে জাকাতের আটটি খাতের বিবরণ তুলে ধরেছেন। আর এ লোকেরাই ফিতরা গ্রহণ করতে পারবেন। এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো-

  1. ফকির: ফকির বলা হয় যার কোনো সম্পদ নেই, নেই তার উপযোগী হালাল উপার্জন, যা দ্বারা তার প্রয়োজন পূরণ হতে পারে। যার খাওয়া-পরা ও থাকার স্থান নেই। অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই।
  2. মিসকিন: কোনো ব্যক্তির কাছে থাকা সম্পদ দিয়ে তার ওপর নির্ভরশীল লোকদের প্রয়োজন পূরণে যথেষ্ট না হলে তাকে মিসকিন বলা যায়।
  3. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি: ঋণের ভারে জর্জরিত, যার ঋণ পরিশোধের কোনো অবস্থান নেই- এমন ব্যক্তিকে জাকাতের ফান্ড থেকে সাহায্য করা যাবে।
  4. জাকাত ওঠানোয় নিয়োজিত ব্যক্তি: জাকাত আদায়কারী, সংরক্ষণকারী, পাহারাদার, লেখক, হিসাবরক্ষক এবং তার বণ্টনকারী সবাইকে জাকাতের ফান্ড থেকে বেতন দেওয়া যাবে। তবে তাকে মুসলিম হতে হবে; পূর্ণ বয়স্ক ও সুস্থ বিবেকসম্পন্ন হতে হবে, জাকাতের বিধান সম্পর্কে ইলম থাকতে হবে।
  5. দাসমুক্তি: যে ক্রীতদাস তার মুক্তিলাভের জন্য অর্থ দেয়ার বিনিময়ে চুক্তিবন্ধ হয়েছে কিংবা কোনো মুসলিম যুদ্ধবন্দিও এ খাতের আওতায় পড়বে। ইবনুল আরাবির মতে, মুসলিম দাসকে যখন মুক্ত করতে জাকাতের খাত থেকে দেয়া যাবে, ঠিক তেমনি মুসলিম বন্দিকে কাফিরদের দাসত্ব শৃঙ্খলা ও লাঞ্ছনা থেকে মুক্ত করার কাজেও জাকাতের অর্থ ব্যয় করা অধিক উত্তম।
  6. চিত্ত আকর্ষণ করার প্রয়োজনে: যাদের মন ইসলামের প্রতি আকর্ষণ করা প্রয়োজন কিংবা ইসলামের ওপর তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য লোকদের জাকাতের খাত থেকে দেয়া যাবে। যেমন- নওমুসলিম ব্যক্তি যারা ইসলাম কবুল করেছেন, ইসলাম কবুলের কারণে বেশিরভাগ সময়ই তারা পরিবার-পরিজন ও তার সম্পদ থেকে বিতারিত হতে হয়, তাই তাদের সাহায্য করা একান্ত জরুরি।
  7. আল্লাহর পথে খরচ: আল্লাহর পথ বলতে আকিদা বিশ্বাস ও কাজের দিক দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয় যে পথ।
  8. মুসাফিরদের জন্য: নিজ আবাসস্থলে সম্পদ আছে, এমন ব্যক্তি যদি সফরে গিয়ে বিপদগ্রস্ত ও নিঃস্ব হয়, তবে তাকে জাকাতের তহবিল থেকে সাহায্য করা যাবে।

ফিতরা প্রদানে ক্ষেত্রে আরও দুটি বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত-

এক. আপন ভাইবোন, ভাগনে-ভাগনি, ভাতিজা-ভাতিজি, চাচা-জেঠা-ফুফু, মামা-খালা; চাচাতো-জেঠাতো ভাইবোন, ফুফাতো ভাইবোন, মামাতো-খালাতো ভাইবোন এবং অন্যান্য নিকটাত্মীয় যদি, নিসাব পরিমাণ সম্পদ সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমতুল্য সম্পদ বা অর্থ এর মালিক না হন, তাহলে তাদেরও জাকাত, সদকাতুল ফিতর, ওয়াজিব সদাকাত, ফিদিয়া, কাফফারা ও মান্নত দেওয়া যাবে; বরং এদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

কারণ হাদিস শরিফে রয়েছে, নিকটাত্মীয়দের দান করলে দ্বিগুণ সওয়াব হয়—প্রথমত, দানের সওয়াব; দ্বিতীয়ত, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার সওয়াব। জাকাত, ফিতরা, ফিদিয়া, কাফফারা ও মান্নত-সদকা নগদ টাকায় বা খাদ্যদ্রব্য এবং অন্য কোনো বস্তু, যেমন পোশাক-আশাক, ঈদের বাজার ইত্যাদি কিনেও দেওয়া যায়।

জাকাত ও সদকায় যাদের অগ্রাধিকার প্রসঙ্গে কোরআনুল করিমে ঘোষণা হয়েছে,

“এমন অভাবী লোক, যারা আল্লাহর পথে নিজেদের নিয়োজিত রাখার কারণে (উপার্জনের জন্য) দুনিয়া চষে বেড়াতে পারে না। সম্ভ্রান্ততা ও আত্মমর্যাদার কারণে অনভিজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবহীন মনে করে। আপনি তাদের চিহ্ন দেখে চিনতে পারবেন। তারা মানুষের কাছে নির্লজ্জভাবে ভিক্ষা করে না। আর তোমরা যেকোনো উত্তম জিনিস ব্যয় করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সে বিষয়ে অবগত আছেন।”

(সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৩)

দুই. জাকাত ও ফিতরা প্রদানের পূর্বে প্রথমে যথাসম্ভব নিশ্চিত হতে হবে যাকে দেওয়া হচ্ছে, তিনি এর উপযুক্ত হকদার কি না। জাকাত, সদকা ও ফিতরা দেওয়ার সময় গ্রহীতাকে তা জানানোর প্রয়োজন নেই। জাকাতগ্রহীতা যদি আত্মীয়স্বজন, আপনজন বা পরিচিতি সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি হন, তাহলে জাকাত-ফিতরা উল্লেখ করাটা মোটেই সমীচীন নয়।

কারণ, এতে গ্রহীতা অপমানিত, অসম্মানিত ও বিব্রত বোধ করতে পারেন। অকারণে কাউকে অসম্মান করা বা কারও সম্মান হানি করা গুনাহের কাজ।

কোরআনের ভাষায় আল্লাহ তাআলা বলেন,

“সম্মান আল্লাহর জন্য, সম্মান রাসুল (সা.)-এর জন্য, সম্মান সব মুমিনের জন্য; কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।”

(সূরা মুনাফিকুন, আয়াত: ৮)

(৫) ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না?

যাদের জাকাত, ওয়াজিব সদাকাত, ফিদিয়া, কাফফারা, মান্নত ও সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না, তারা হলেন-

  1. পিতা-মাতা ও ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিগণ—যেমন দাদা-দাদি ও নানা-নানি।
  2. ছেলেমেয়ে ও অধস্তন ব্যক্তিগণ, যেমন নাতি-নাতনি।
  3. স্ত্রী—কারণ তার অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান স্বামীর দায়িত্বে।
  4. সায়্যদ অর্থাৎ হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রকৃত বংশধর।
  5. ধনী লোক, যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।
  6. এবং অমুসলিম ব্যক্তি।

(৬) ফিতরা কখন আদায় করতে হয়?

ঈদের সালাতের পূর্বে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব।

ঈদের আগেও ‘সাদাকাতুল ফিতর’ আদায় করা যায়। তবে ঈদের দিন সালাতের উদ্দেশ্যে ঈদের মাঠে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে ‘সাদাকাতুল ফিতর’ আদায় করা উত্তম।

ঈদের পর কেউ যদি তা আদায় করে তবে আদায় হবে কিন্তু সাওয়াব কম হবে।

গরিব আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, ফকির-মিসকিনকে সাদাকাতুল ফিতর দেওয়া যাবে।

একজনের ফিতরা একাধিক ব্যক্তিকে অথবা একাধিক ব্যক্তির ফিতরা একজনকে দেওয়া যাবে।

(৭) সদকাতুল ফিতরের বা ফিতরার পরিমাণ কত? ফিতরা কত টাকা দিতে হয়?

মাথাপিছু ‘নিসফু সা’ অর্থাৎ প্রায় পৌনে দুই কেজি গম (১ কেজি ৭৫০ গ্রাম গম) বা তার মূল্য আদায় করতে হবে। তবে গম ছাড়া যদি অন্যকোন জিনিস যেমন- যব, কিসমিস, খেজুর, বা পনির দিয়ে আদায় করলে ‘পূর্ণ এক সা’ ৩ কেজি ৫০০ গ্রাম বা তার মূল্য আদায় করতে হবে।

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন,

“রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন আমাদের মাঝে ছিলেন, তখন আমরা ছোট–বড়, মুক্ত ক্রীতদাস সকলের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক সা খাদ্য, অর্থাৎ এক সা পনির বা এক সা যব বা এক সা খেজুর অথবা এক সা কিশমিশ। আমরা এভাবেই আদায় করছিলাম। একবার হজরত মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) হজ বা ওমরাহ উপলক্ষে মদিনায় এলেন, তিনি জনগণের উদ্দেশে মিম্বরে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। তখন তিনি আলোচনা করলেন সে বিষয়, যে বিষয়ে মানুষ প্রশ্ন করেছে। তিনি বললেন, ‘আমি দেখছি শামের দুই মুদ (নিসফ সা বা পৌনে দুই কেজি) আটা সমান হয় (মূল্যমান হিসেবে) এক সা (৩ কেজি ৩০০ গ্রাম) খেজুরের। অতঃপর মানুষ (সাহাবায়ে কিরাম ও তাবিয়িগণ) এই মত গ্রহণ করলেন।”

(সহিহ মুসলিম)

(৮) ফিতরা কি দ্বারা আদায় করতে হবে?

সাহাবী খুদরী রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য বস্তু দিয়ে ফিতরা প্রদান করতেন। এজন্য মুসলমান পন্ডিতদের বড় অংশ টাকা দিয়ে ফিতরা প্রদানের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষন করে বলেন, টাকা দিয়ে ফিতরা আদয় রাসূল (সা.) এর সুন্নতের পরিপন্থী। কিন্তু খাদ্য বস্তু দিয়ে ফিতরা আদায়ে ব্যাপারে কাহারো কোন দ্বিমত নাই।

ফিতরা সরাসরি খাদ্য দ্রব্য হিসেবে দেয়া সারাসরি রাসূলের সুন্নাত ও সর্বোত্তম।

তবে ইসলামে যে পাঁচটি খাদ্য-পণ্যের কথা হয়েছে (গম, যব, কিসমিস, খেজুর, বা পনির) সেগুলোর নির্ধারিত পরিমাণের বাজার মূল্যের ওপর ভিত্তি করে সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে ফিতরা আদায়ের করার বৈধতা রয়েছে।

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন,

“রাসুল (সা.)- এর সময়ে আমরা এক সা’ খাদ্য অথবা এক সা’ যব অথবা এক সা’ খেজুর অথবা এক সা’ পনির অথবা এক সা’ কিশমিশ সদকাতুল ফিতর হিসেবে দিতাম।”

(সহহি বুখারি, হাদিস: ১৫১০)

হযরত যুহাইর (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,

“আমি আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, আমি সাহাবায়ে কেরাম (রা.) কে এই অবস্থায় পেয়েছি যে, তারা রমজানে সাদাকায়ে ফিতর খাবারের বিনিময়ে টাকা দ্বারা আদায় করতেন। ”

(ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮, হাদীস: ১০৩৭১। এটির সনদ সম্পূর্ণ সহীহ তথা প্রমাণযোগ্য।)

আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি। আমাদের সকলের কর্তব্য, খুশিমনে এই ইবাদতটি আদায় করা, যাতে আল্লাহর গরীব বান্দাদের খেদমত হয় এবং নিজের রোযার ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষতিপূরণ হয়। সর্বোপরি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত একটি ইবাদত আদায়ের সৌভাগ্য অর্জিত হয়।

আশা করি ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে আর ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না বিষয়টি আমরা পরিষ্কারভাবে আমরা বুঝতে পেরেছি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাস্থানে ফিতরা দেয়ার তাওফিক দান করুন। ফিতরা আদায় করার মাধ্যমে রোজার ভুল-ত্রুটিগুলো থেকে মুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Queries discussed: ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে, ফিতরার পরিমাণ, সদকাতুল ফিতর, ফিতরা কার উপর ওয়াজিব, ফিতরা অর্থ কি, সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ, ফিতরা কি, ফিতরার পরিমাণ কত, ফিতরা কাদের উপর ওয়াজিব, ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না, ফেতরা কি, ফিতরা কত করে, সদকাতুল ফিতর কি, ফিতর অর্থ কি, ফিতরা কেন দিতে হয়, ফিতরা কি দিয়ে আদায় করতে হবে, ফিতরা কখন দিতে হয়, ফিতরা শব্দের অর্থ কি, ফিতরা কখন আদায় করতে হয়, ফিতরা কারা দিবে, ফিতরার পরিমাণ কত, সাদাকাতুল ফিতর কি, ফিতরা কি দ্বারা আদায় করতে হবে।

[সূত্র: এনসিটিবি]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts