প্রিয় পাঠক! আজকের এই আলোচনাতে সালাত/নামাজ কেন পড়তে হবে? তাৎপর্য, উপকারিতা, মাহাত্ম্য ও আদর্শ জীবন গঠনে এর ভূমিকা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
চলুন আমাদের নামাজ কেন পড়তে হবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি।
(১) সালাত/নামাজের তাৎপর্য
ইমানের পর ইসলামের দ্বিতীয় ভিত্তি বা রুকন হলো সালাত। আল্লাহ তা’আলা আমাদের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করে দিয়েছেন।
মুমিনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় ফরয ইবাদাত হলো, সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা।
পবিত্র কুরআন এবং হাদিসে সালাতকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয় নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের ওপর ফরয।”
(সূরা নিসা, আয়াত ১০৩)
কুরআন মাজিদে প্রায় ৮২ স্থানে আল্লাহ তা’আলা সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ বলেন,
“আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে সালাতের আদেশ দিন এবং এর ওপর অবিচল থাকুন।”
(সূরা ত্বাহা, আয়াত ১৩২)
সালাতের ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করব। নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায়ে সচেষ্ট হবো।
মহান আল্লাহ সফল মুমিন ও জান্নাতুল ফিরদাউসের বাসিন্দাদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেন,
“আর যারা নিজেদের সালাতের ব্যাপারে যত্নবান থাকে।”
(সূরা আল্-মুমিনুন, আয়াত ৯)
ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত আদায় না করা মহা অপরাধ ও বড় গুনাহ। আন্তরিক সদিচ্ছা সত্ত্বেও অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুলে যাওয়া কিংবা ঘুমিয়ে পড়ার কারণে সালাত ছুটে গেলে স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে সালাতের কাযা আদায় করতে হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“ঘুমের কারণে যার সালাত ছুটে গেছে সে যেন জাগ্রত হওয়ার সাথে সাথে সালাত আদায় করে নেয়।”
(মুসলিম)
সালাত বা নামাজ শব্দটির একটি অর্থ হলো ‘সংযোগ’। সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে আমরা নিজেদের সম্পর্ক স্থাপন করি।
নানা কারণে মাঝে মাঝে আমরা নিজেদেরকে অসহায় অনুভব করি। নিজেকে নিরুপায় ও একাকী মনে করার কোনো কারণ নেই। মহান আল্লাহ অবশ্যই আমাদের পাশে আছেন। যে কোনো সময় আমরা সালাতে দাঁড়িয়ে, তাঁর সামনে মাথা নত করে বুকের ভেতর জমে থাকা সব দুঃখ, কষ্ট, অপমান, হতাশা উজাড় করে দিতে পারি। তিনি অবশ্যই তা শুনবেন। তিনি সব কিছু শোনেন। আমরাই বরং তাঁর সাথে সংযোগ স্থাপন করি না।
আল্লাহর নিকট বান্দার আনুগত্য ও বিনয় প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম হচ্ছে সালাত। সালাতের মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নৈকট্য লাভ করে।
সালাত হচ্ছে মুসলিম ব্যক্তির অন্তরের প্রশান্তি এবং তার সাহায্যকারী। সালাত বিপদ-আপদে আত্মাকে শক্তিশালী করে।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ বলেন,
“তোমরা ধৈর্য এবং সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।”
(সূরা আল্-বাকারা, আয়াত ১৫৩)
(২) সালাত/নামাজের উপকারিতা
সালাত আল্লাহর বিধান। এই বিধানটি মানুষের কল্যাণের জন্য দেওয়া হয়েছে।
সালাত আদায়ের মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন উপকার পেতে পারে। যেমন-
শারীরিক উপকারিতা:
সালাত এমন একটি ইবাদাত যার মাধ্যমে শরীর চর্চার অধিকাংশ উপকারিতাই পাওয়া যায়।
যথাযথভাবে সালাত আদায়ের মাধ্যমে ফুসফুস, মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, মাংসগ্রন্থি, ঘাড় ইত্যাদি অঙ্গের রোগের উপকার পাওয়া যায়। স্নায়ুবিক দুর্বলতা ও জোড়ায় ব্যথ্যা সারানোর জন্য চিকিৎসকরা সালাত আদায়ের পরামর্শ দেন।
এ কথা সত্য যে, সালাতে সিজদার সময় মস্তিষ্কতন্ত্রী, চোখ ও মাথাসহ অন্যান্য অঙ্গে রক্তপ্রবাহ পরিমিত পর্যায়ে থাকে। ফলে চোখের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় ও মস্তিষ্ক প্রখর হয়।
প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আমাদের শরীরকে সচল ও কার্যকর রাখা নিশ্চিত করে। আলস্য বা কর্মবিমুখতা দূর হয়। তবে সালাতের মূল উদ্দেশ্য মহান আল্লাহর প্রতি আত্ম-নিবেদন।
মানসিক উপকারিতা:
বর্তমানে মানুষের অশান্তির মূল কারণ হলো মানসিক অস্থিরতা। এই অস্থিরতা দূরীকরণের লক্ষ্যে সারা বিশ্বে গবেষণা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ধ্যান (Medi-tation) কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। সালাত হলো এক উন্নতমানের ধ্যান (Meditation)।
কেউ যদি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে আল্লাহ আমাকে দেখছেন ও আমার সব অবস্থা জানেন, তাহলে তার কোনো প্রকার হতাশা থাকতে পারে না।
এ ছাড়া মহানবি (সা.) যখন কোনো পেরেশানিতে ভুগতেন তখন তিনি হযরত বেলাল (রা.)-কে বলতেন, ‘হে বেলাল, সালাতের ব্যবস্থা করে (আযান দিয়ে) আমাদের শান্তি দাও।’ (আবু দাউদ)
বস্তুত মানুষের শরীর ও মন এক অপরের পরিপূরক। সালাত আদায়ের মাধ্যমে মন উৎফুল্ল থাকে।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপকারিতা:
মসজিদ হলো মহান আল্লাহ তা’আলার ঘর, যেখানে দৈনিক পাঁচবার সম্মিলিতভাবে সালাত আদায় করা হয়। সেখানে ধনী-গরিব কোনো ভোদাভেদ থাকে না।
সালাতের সময় সকলে স্ব স্ব পদমর্যাদা ভুলে মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেয়। একে অপরের খোঁজ-খবর নিয়ে সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়ায়। ফলে মুসলিম সমাজের বন্ধন সুদৃঢ় হয়।
সালাত আদায়ের মাধ্যমে ইসলামি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে। আর নিয়মিত সালাত আদায় করলে সমাজ হতে অপসংস্কৃতি দূর হয়।
(৩) সালাত/নামাজের মাহাত্ম্য
ইসলাম আমাদের দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা। আর এ দ্বীনের ভিত্তি হলো সালাত। সালাত সকল ইবাদাতের প্রধান। মুমিনের জন্য সালাত মিরাজ স্বরূপ।
বস্তুত সালাতের মাহাত্ম্য ও উপকারিতা অশেষ। সালাত আদায়ের মাধ্যমে অগণিত কল্যাণ লাভ করা যায়।
সালাতে রয়েছে দুনিয়া আখিরাতের মহা সফলতা। আল-কুরআনের সূরা আল-মু’মিন এর ১-২ নং আয়াতে বিনয় ও নম্রতার সাথে সালাত আদায়কারী মুমিনদের সফলকাম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
আবার অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে যে পবিত্রতা অর্জন করে এবং তার রবের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।”
(সূরা আল-আ’লা, আয়াত: ১৪-১৫)
সালাত অশ্লীলতা ও অন্যায় থেকে বাঁচার রক্ষাকবজ। কেননা সালাত কায়েমকারী নিজের মাঝে আল্লাহভীতি অনুভব করে যা তাকে সকল অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।
মহান আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।”
(সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)
সালাত আদায়ের মাধ্যমে বান্দা দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা লাভ করে।
যেমন: মহানবি (সা.) বলেন,
“যে ব্যক্তি সকালের (ফজরের) সালাত আদায় করল সে আল্লাহর জিম্মায় (নিরাপত্তায়) চলে গেল।”
(মুসলিম)
সালাত মুমিনদের জন্য দুনিয়ার জীবনে দৃঢ়তা ও স্থিরতা আনে।
মহান আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয় মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে অতিশয় অস্থিরচিত্তরূপে। যখন কোনো মন্দ তাকে স্পর্শ করে তখন সে হা-হুতাশ করে। আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে, সে অতি কৃপণ হয়। তবে সালাত আদায়কারীগণ ব্যতীত। যারা তাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত।”
(সূরা আল-মা’আরিজ, আয়াত: ১৯-২৩)
সালাতের মধ্যে রিজিকের প্রশস্ততা রয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“এবং আপনার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দিন আর তাতে অবিচল থাকুন, আমি আপনার নিকট কোনো রিযিক চাই না, আমিই আপনাকে রিযিক প্রদান করি এবং শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্য।”
(সূরা ত্বা হা, আয়াত ১৩২)
ইবনে কাসীর (রহ.) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন, যদি সালাত প্রতিষ্ঠা করো তাহলে এমনভাবে তোমার নিকট রিযিক আসবে, যার ধারণাও তুমি করতে পারবে না।
সালাত হলো উত্তম যিকির। কারণ, সালাতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এর সম্পূর্ণটাই আল্লাহর যিকির। মহান আল্লাহ তাঁর যিকিরের জন্য সালাত প্রতিষ্ঠার আদেশ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায়।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“জেনে রাখো! আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্তি লাভ করে। ”
(সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ২৮)
মহান আল্লাহ বলেন,
“আমার স্মরণের লক্ষ্যে সালাত কায়েম কর।”
(সূরা ত্বাহা, আয়াত: ১৪)
হাদিসে এসেছে, মহানবি (সা.) বিলাল (রা.) কে বলেন,
“উঠো বিলাল এবং আমাদেরকে সালাতের মাধ্যমে প্রশান্তি পৌঁছাও।”
(মুসনাদে আহমদ)
সালাত সর্বোত্তম আমল।
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) মহানবি (সা.) কে জিজ্ঞাসা করেন,
“সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বলেন, ‘সময়মতো সালাত আদায় করা।”
(বুখারি ও মুসলিম)
সালাত হিফাযত বা সংরক্ষণকারীর জন্য আল্লাহর প্রতিশ্রুতি হলো যে, তিনি তাকে জান্নাত দান করবেন।
মহানবি (সা.) বলেছেন,
আল্লাহ বান্দার ওপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন, যে তা হিফাযত করল তার জন্য আল্লাহর প্রতিশ্রুতি হলো যে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
(আবু দাউদ)
অন্য হাদিসে মহানবি (সা.) বলেন,
“যে সালাতের হিফাযত করল, সালাত তার জন্য জ্যোতি, প্রমাণ ও কিয়ামতের দিন মুক্তির কারণ হবে।”
(মুসনাদে আহমদ)
সালাত আদায়ের মধ্য দিয়ে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যায়। ইহা বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ক গড়ার মাধ্যম।
মহান আল্লাহ বলেন,
“আর সিজদাহ কর ও (আমার) নিকটবর্তী হও।”
(সূরা আল আলাক, আয়াত: ১৯)
মহানবি (সা.) বলেন,
বান্দা স্বীয় রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয় সিজদাহ অবস্থায়। অতএব, তোমরা সিজদায় বেশি বেশি দোয়া করো।
(মুসলিম)
সর্বোপরি, সালাতের মাহাত্ম্য ও অপরিসীম। সালাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা ও নৈকট্য লাভ করা যায়। এর মাধ্যমে সকল প্রকার অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে দূরে থেকে অন্তরের প্রশান্তি লাভ করা যায়। এটি পাপমুক্তির উপায়।
এক কথায়, সালাত দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও সফলতা লাভের মাধ্যম।
(৪) আদর্শ জীবন গঠনে সালাতের ভূমিকা
ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে সালাত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। ইমানের পরই সালাতের স্থান।
মহান আল্লাহ তা‘আলার নিকট বান্দার বিনয় ও অনুগত্য প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হলো সালাত। সালাতের মাধ্যমেই আল্লাহর নিকট বান্দার চরম আনুগত্যের অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়।
কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম বান্দার কাছে সালাতের হিসাব চাইবেন।
সালাত নিত্যপালনীয় একটি ফরয ইবাদাত হলেও আদর্শ জীবন গঠনে এর সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রয়েছে।
আদর্শ জীবন বিনির্মাণে অত্যাবশ্যকীয় গুণাবলি সালাত আদায়ের মাধমে অর্জন করা যায়। পাপাচার, অন্যায় ও অশ্লীলতামুক্ত আদর্শ জীবন গঠনে সালাত সহায়তা করে। সালাত সকল প্রকার পাপাচার ও খারাপ কাজ পরিহার করে সৎ পথে পরিচালিত করে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয়ই সালাত মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।”
(সূরা আল-‘আনকাবূত,আয়াত: 8৫)
সালাত আমাদের সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়। জামাআতে সালাত আদায়ের সময় সমাজের উচু-নিচু, ধনী- নির্ধন এবং সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ একত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাশাপাশি দাঁড়াতে হয়। এতে সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হয়।
সালাত আমাদের সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলাবোধের শিক্ষা দেয়। সালাতে রুকু সিজদাহ যথানিয়মে করতে হয়। এতে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার শিক্ষা পাওয়া যায়। আর নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায়ের মাধ্যমে সকল কাজ সঠিক সময়ে করারও শিক্ষা পাওয়া যায়। নিয়মিত সালাত আদায়কারী সাধারণত কর্তব্য পালনে অবহেলা করে না।
অত্যন্ত বিনীত ও নম্রভাবে একাগ্র চিত্তে সালাত আদায় করতে হয়। একাগ্রতাবিহীন সালাত আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। সালাত আদায়ের সময় মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হয় মহান আল্লাহ তাকে দেখছেন। এভাবে সালাত আদায়ের মাধ্যমে অর্জিত বিনয় ও একাগ্রতা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োগের মাধ্যমে আদর্শ জীবন গঠন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আল্লাহর যে সকল বান্দা এভাবে বিনয়-নম্রতা ও বিনম্র- একাগ্রতা নিয়ে সালাত আদায় করে তাদের সফলতা অবশ্যাম্ভাবী।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন,
“অবশ্যই মুমিনগণ সফলকাম হয়েছেন,যারা নিজেদের সালাতে বিনয় ও নম্র।”
(সূরা মু’মিনূন, আয়াত: ১-২)
জামাআতে সালাত আদায় করলে মুসলিমগণ দৈনিক পাঁচবার একত্র হওয়ার সুযোগ পান। এ সময় একে অপরের খোঁজ-খবর নিতে পারেন। অসহায় ও দরিদ্রকে সাহায্য-সহযোগিতা করা যায়। এতে সকলের সাথে সম্প্রীতি গড়ে ওঠে। এ রকম আরও অনেক উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অর্জনে সালাত প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখে।
তাই বলা যায় আদর্শ জীবন গঠনে সালাতের ভূমিকা অপরিসীম। আশা করি উরিক্ত আলোচনা থেকে আমরা পরিষ্কার হতে পেরেছি যে, সালাত/নামাজ কেন পড়তে হবে। তো আমরা নিয়মিত সঠিকভাবে সালাত আদায় করব এবং জীবনকে সুন্দর ও আদর্শময় করে গড়ে তুলব।
[সূত্র: এনসিটিবি]