Skip to content

হিংসা কী, কাকে বলে? হিংসার কুফল ও এ ব্যাপারে ইসলামের বিধান

হিংসা কী, কাকে বলে হিংসার কুফল ও এ ব্যাপারে ইসলামের বিধান

(১) হিংসা কী?

হিংসা আখলাকে যামিমাহ-র অন্যতম দিক। হিংসা-বিদ্বেষ মানে অন্যের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করা, নিজেকে বড় মনে করা, অন্যকে ঘৃণা করা, শত্রুতাবশত অন্যের ক্ষতি কামনা করা, অন্যের উন্নতি, সুখ সহ্য করতে না পারা ইত্যাদি।

(২) হিংসা কাকে বলে?

ইসলামি পরিভাষায়, অন্যের সুখ-সম্পদ, শান্তি-সাফল্য, ধ্বংস হওয়া ও নিজে এর মালিক হওয়ার কামনাকে হিংসা বলা হয়। আরবি ভাষায় হিংসার প্রতিশব্দ হলো হাসাদ। 

(৩) হিংসার কুফল

হিংসা-বিদ্বেষ মানব চরিত্রের অত্যন্ত নিন্দনীয় অভ্যাস। এটি মানব চরিত্রকে ধ্বংস করে দেয়। হিংসুক ব্যক্তি কখনোই সৎচরিত্রবান হতে পারে না। কেননা গর্ব-অহংকার, পরশ্রীকাতরতা, শত্রুতা, অন্যের অনিষ্ট কামনা ইত্যাদি হিংসার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। হিংসুক ব্যক্তির মধ্যে এসব অভ্যাসও গড়ে ওঠে।

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের সকলের সাথে সে মিলেমিশে চলে। সামাজিক শান্তিই তার প্রধান লক্ষ্য। সামাজিক শান্তির জন্য প্রয়োজন সাম্য, মৈত্রী, ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব, পরস্পর সহযোগিতা ও সহমর্মিতা।

একটি হাদিসে মহানবি (সাঃ) বলেছেন,

“পরস্পর কল্যাণকামিতাই হলো দীন।”

(আল-হাদিস)

হিংসা এসব সৎগুণ ধ্বংস করে দেয়। হিংসুক ব্যক্তি নিজেকে বড় মনে করে, নিজের স্বার্থকে সবচেয়ে বড় করে দেখে। সে অন্যকে ঘৃণা করে, অন্যের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে, অন্যের অনিষ্ট কামনা করে। এতে মানবসমাজে ঐক্য, সংহতি বিনষ্ট হয়, শান্তি-শৃঙ্খলা ব্যাহত হয়।

হিংসা-বিদ্বেষ জাতীয় ঐক্য, সংহতি ও উন্নতির পথে অন্তরায়। এর ফলে জাতির মধ্যে বিভেদ বৈষম্য দেখা দেয়, শত্রুতা বৃদ্ধি পায়। এতে মুসলিম জাতির ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব নষ্ট হয়।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহের মুণ্ডনকারী (ধ্বংসকারী) রোগ- ঘৃণা ও হিংসা তোমাদের দিকে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে আসছে। আমি চুল মুণ্ডনের কথা বলছি না, বরং তা হলো দীনের মুণ্ডনকারী।”

(তিরমিযি)

হিংসা বিদ্বেষ পরকালীন জীবনেও মানুষের ক্ষতির কারণ। হিংসা মানুষের সকল নেক আমলকে ধ্বংস করে দেয়।

See also  সুদ ও ঘুষ অর্থ, কী, কাকে বলে? ইসলামের দৃষ্টিতে সুদ-ঘুষের কুফল, পরিণতি ও বিধান

মহানবি (সাঃ) বলেছেন,

“তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা আগুন যেমন কাঠকে খেয়ে ফেলে (পুড়িয়ে দেয়), হিংসাও তেমনি মানুষের সৎকর্মগুলোকে খেয়ে ফেলে (নষ্ট করে দেয়)।”

(আবু দাউদ)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

“তিন ব্যক্তির গুনাহ মাফ হয় না। তন্মধ্যে একজন হচ্ছে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী।”

(আদাবুল মুফরাদ)

(৪) হিংসার ব্যাপারে ইসলামের বিধান

ইসলামি শরিয়তে হিংসা বিদ্বেষ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি কখনোই হিংসুক হতে পারে না ৷ বরং অন্যের কল্যাণ কামনা ও পরস্পর সাহায্য-সহযোগিতা করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য।

আল-কুরআনে আল্লাহ তায়ালা হিংসা থেকে আশ্রয় চাওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন,

“আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে (পানাহ চাই) যখন সে হিংসা করে।”

(সূরা আল-ফালাক, আয়াত ৫)

মহানবি (সাঃ) বলেছেন,

“তোমরা পরস্পর হিংসা করবে না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ ভাব পোষণ করবে না ও পরস্পর বিরুদ্ধাচরণ করবে না। বরং সবাই আল্লাহর বান্দা, ভাই-ভাই হয়ে থাকবে।”

(বুখারি ও মুসলিম)

হিংসা-বিদ্বেষ অত্যন্ত মারাত্মক সামাজিক অপরাধ। এটি মানুষের নেক আমল ও সৎচরিত্রসমূহ বিনষ্ট করে দেয়।

ব্যক্তিগত সাফল্য ও জাতীয় উন্নতির জন্য সকলেরই হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করা উচিত।

[সূত্র: এনসিটিবি]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts