Skip to content

বৃক্ষ রোপণের উপকারিতা সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিস

বৃক্ষ রোপণের উপকারিতা সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিস

নিম্নে বৃক্ষ রোপণের উপকারিতা সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিসের অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও শিক্ষা তুলে ধরা হলো-

অনুবাদ

হযরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

“রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেনঃ যদি কোন মুসলিম একটি বৃক্ষ রোপণ করে অথবা কোন শস্য ফলায় এবং তা হতে কোন মানুষ কিংবা পাখি অথবা পশু আহার করে, তবে তা তার জন্য সাদাকা হিসেবে গণ্য হবে।”

(বুখারি ও মুসলিম)

ব্যাখ্যা

এ হাদিসে রাসূলূল্লাহ (স) প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণের গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করাসহ পশু-পাখির প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন।

গাছ বিশেষ করে, ফলজ গাছ মানুষের অত্যন্ত উপকারী বন্ধু। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গাছের অবদান সর্বাধিক। অতি বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, মরুকরণ, নদী ভাঙন ইত্যাদি প্রতিরোধে গাছের অবদান অনস্বীকার্য। তাছাড়া গাছ মানুষকে ছায়া, জ্বালানি, গৃহনির্মাণ সামগ্রী, খাদ্য পুষ্টি ও অতি প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে ও বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস শোষণপূর্বক মানুষের জীবন রক্ষা করে।

প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ ও বনের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনের কথা বর্তমান সভ্য জগৎ বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে এসে বুঝলেও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) তা দেড় হাজার বছর পূর্বে উপলব্ধি করেছিলেন বলেই বৃক্ষরোপণের প্রতি তিনি এত গুরুত্বারোপ করেছেন।

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব এবং আল্লাহর প্রতিনিধি। খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে সমস্ত পশুপাখি ও অন্যান্য সৃষ্ট জীবের লালন-পালন ও সেবা যত্নের দায়িত্ব মানুষের ওপর অর্পিত। সুতরাং এ উদ্দেশে মানুষ যদি কোন বৃক্ষ রোপণ করে অথবা জমিতে ফসল ফলায় এবং এ বৃক্ষের ফল ও জমির ফসল কোন মানুষ, পশু অথবা কোন পাখি খায় তবে তা রোপণকারীর জন্য সাদাকা স্বরূপ গণ্য হবে।

শিক্ষা

আলোচ্য হাদিসের মূল শিক্ষা হচ্ছে- শ্রমের মর্যাদা এবং বৃক্ষ রোপণ, কৃষিকাজ এবং সৃষ্টি জীবের প্রতি মানব জাতির দায়িত্ব- কর্তব্য সম্পর্কে উদ্বুদ্ধকরণ।

See also  তিনটি ভালো কাজ যা মৃত্যুর পরও উপকারে আসে সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিস

১. মহানবী (স)- এ হাদিসে মানুষকে শ্রমের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। নিজে ভোগ করুক বা অপরে ভোগ করুক বা অন্য সৃষ্টি জীব তা ভোগ করুক সে সাওয়াব পাবে।

২. বৃক্ষ মানুষের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় সৃষ্টি। বৃক্ষ খাদ্য, ছায়া, আশ্রয় দেয়, ও অক্সিজেন দেয়, পরিবেশ সুন্দর ও দূষণমুক্ত রাখে। সর্বোপরি বৃক্ষের কাছে আমাদের প্রয়োজন অনেক। তাই বৃক্ষ রোপণ করার জন্য মহানবী (স) এ হাদিসে আমাদেরকে তাকিদ প্রদান করেছেন।

৩. যে কেউ ভক্ষণ করুক তাতে সাদকা দানের সমতুল্য সাওয়াব হবে।

৪. এ হাদিসে মহান আল্লাহর সৃষ্ট জীবের প্রতি মানব জাতির দায়িত্ব, কর্তব্য ও দয়া প্রদর্শনের শিক্ষা দিয়েছেন এবং সাথে সাথে কর্মীর কোন শ্রমই বৃথা যায় না, সে দিকে ইঙ্গিত করেছেন।

সর্বশেষে আমরা বলতে পারি, আমরা অধিক পরিমাণে গাছ লাগাব, তার যত্ন নেব, ক্ষেত-খামারে অধিক ফসল ফলানোর চেষ্টা করব এবং এর বিনিময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাওয়াবের অধিকারী হব।

সারসংক্ষেপ

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা বৃক্ষ রোপণের উপকারিতা সংক্রান্ত ১টি বিষয়ভিত্তিক হাদিস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করলাম।

এ হাদিসের শিক্ষণীয় বিষয় এই যে, পশু-পাখির প্রয়োজন পূরণ ও এদের উপকার করলে আল্লাহ খুশি হন এবং তাকে কিয়ামতের দিন উত্তম পুরস্কারে ভূষিত করবেন।

মানুষ ও পশু-পাখি সকলেরই খাদ্যের প্রয়োজন। তাই পশু-পাখির প্রতি দয়া প্রদর্শন, তাদের খাদ্যের যোগান দেওয়াও মানুষের কর্তব্য। এ কর্তব্য পালন করতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে দান-খয়রাতের পুরস্কারে ভূষিত করবেন।

অতএব প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও পশু-পাখির খিদমত এসব বিবিধ কারণেই বৃক্ষরোপণ করা প্রয়োজন।

[সূত্র: ওপেন স্কুল]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts