Skip to content

২৫টি সুখে থাকার উপায়

২৫টি সুখে থাকার উপায়

সুখ এমন একটা জিনিস যা প্রতিটি মানুষই কামনা করে, পৃথিবীতে এমন কোন লোক নেই যে সুখ চায়না, কাউকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তুমি কি সুখ চাও সে কখনোই না বলবে না।

নিম্নে ২৫টি সুখে থাকার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো-

১। বেশি বেশি করে আল্লাহর জিকির করুন, আল্লাহ জিকির অন্তর প্রশান্তি লাভ করে, গুনাহের বোঝা কমে যায়, আল্লাহ খুশি হন, পেরেশানী দূর হয়।

২। কোরআনের সাথে জীবনযাপন করুন, কোরআন মুখস্ত করার চেষ্টা করুন, কোরআন তেলাওয়াত শুনুন, অর্থসহ কোরআন বোঝার চেষ্টা করুন, দুশ্চিন্তা ও উদ্বিগ্নতায় আল্লাহর উপর ভরসা করুন, তার উপর সোপর্দ করে দিন। তার হুকুমের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন। তার উপর আস্থা রাখুন, তিনি আপনার জন্য যথেষ্ট সন্তুষ্ট।

৩। তাকদিরের ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকুন। ভাগ্যে যে রিযিক লেখা আছে, তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকুন, রিযিক তাকদিরের উপর নির্ভরশীল, অতএব অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না।

৪। কারো কৃতজ্ঞতাবোধের আশা করবেন না, সাওয়াব এর জন্য কাজ করুন, কেউ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

৫। যা চলে গেছে তা চিরদিনের জন্য পতিত হয়ে গেছে, চলে যাওয়ার সময় আর কোনদিন ফিরে আসবে না, অতএব যা হয়ে গেছে তা নিয়ে কখনো ভাববেন না, মনে রাখবেন দুঃখের পর সুখ, ক্ষুধার পর পরিতৃপ্তি, পিপাসার পর নিবারণ, অসুস্থতার পর সুস্থতা, দারিদ্রতার পর ধনাঢ্যতা, দুশ্চিন্তার পর খুশি, এগুলো আল্লাহর তায়ালার প্রতিষ্ঠিত রীতি।

৬। আশাবাদী হোন, হতাশ হবেন না। সুধারণা পোষণ করুন, ভালো ও কল্যানের জন্য অপেক্ষা করুন, অবশ্যই কল্যাণ আসবে।

৭। বিপদ-আপদের কারণে আল্লাহ তাআলা বান্দার মাঝে দূরত্ব কমে যায় এবং নৈকট্য বেড়ে যায়, এর ফলে বেশি বেশি করে আল্লার দরবারে দোয়া করতে থাকে, বালা-মুসিবত, অহংকার, আত্মগরিমা দূর করে দেয়।

৮। পোশাকের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ যত্নবান হোন, সুগন্ধি ব্যবহার করুন, নিয়মিত মিসওয়াক করুন এবং নিজের বাহ্যিক অবয়ব প্রতি মনোযোগী হন।

৯। পায়ে হেঁটে চলাচল করুন, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, আলস্য অকর্মণ্যতা ও কর্মহীনতা পরিহার করুন। খাবারের সময় নির্দিষ্ট করে রাখুন। উপকারী খাবার গ্রহণ করুন। বেশি খাবেন না এবং পেট ভরে খাবেন না।

১০। খোলামেলা স্থানে বের হোন, মনোরম বাগানে ঘুরে বেড়ান, সৃষ্টির মাঝে স্রষ্টার অনুসন্ধান করুন, জীবনে সফলতা ও কর্মচাঞ্চল্য আনার জন্য মাঝে মাঝে ভ্রমণ করুন, বাইরের জগত একটু দেখুন, ভ্রমন সব সময় উপভোগ্য হয়ে থাকে।

১১। বই মানুষের সর্বোত্তম বন্ধু, তাকে সাথী হিসেবে গ্রহণ করুন। ইলম এর সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করুন।

১২। দুশ্চিন্তা, হতাশা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও বিষন্নতা সৃষ্টিকারী বই পুস্তক পাঠ করা থেকে বিরত থাকুন।

১৩। মন্দ ধারণা অমূলক চিন্তা-ভাবনা ও বিকৃত মানসিকতা পরিহার করুন। মনে রাখবেন আপনি একাই দুঃখ-কষ্ট পতিত নন। দুশ্চিন্তা ও পেরেসানি থেকে কেওই মুক্ত নয়। অপ্রীতিকর অবস্থার সম্মুখিন কমবেশি সবাইকেই হতে হয়।

১৪। হিংসুক, চোগলখোর ও পরনিন্দাকারীদের সাথে ওঠাবসা করবেন না, কারণ এই জাতীয় লোক মানুষের জন্য ক্ষতিকর, তারা মানুষের দুঃখ, কষ্ট, বেদনা,হতাশা, নৈরাশ্য বিতরণ করে বেড়ায়।

১৫। মনে রাখবেন বিপদ আপদ বালা মুসিবত ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের চোখ কান খুলে যায়, দিল জিন্দা হয়, নফস খাহেশাত থেকে বিরত থাকে। বান্দা অধিক পরিমাণে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে।

১৬। যে ব্যাপারে খুব বেশি আশঙ্কা করা হয়, তা অনেক সময় ঘটে না, যার আলোচনা খুব বেশি করা হয় তা বাস্তবায়ন করা হয় না। আল্লাহ সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত, তিনি সবকিছুই তত্ত্বাবধান করেন এবং তিনিই সকলকে সাহায্য করেন।

১৭। গুনাহ থেকে দূরে থাকুন, গুনাহ মানসিক অস্থিরতার কারণ, এর কারণে বিপদ আপদ বালা মুসিবত নেমে আসে, দুশ্চিন্তা ও সমাপ্তি ঘটে না, সর্বদা এই দোয়া পাঠ করুন: ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন। বিপদ-আপদ ও বালা-মুসিবত দূর করণে এই দোয়ার প্রভাব খুবই কার্যকর।

১৮। বিশ্বাস রাখুন, যে আপনার গীবত করছে সে তার নেকিগুলো আপনাকে দিয়ে দিচ্ছে, আপনার গুনাহগুলোকে শেষ করে দিচ্ছে, আপনাকে প্রসিদ্ধ করে তুলছে, এটা নিয়ামত নয় তো আরকি।

১৯। ইবাদতের ক্ষেত্রে নিজের বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না, সুন্নতের উপর আমল করুন, নিজের প্রতি কষ্ট প্দান ও বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকুন। সর্বদা মধ্যপন্থা অবলম্বন করুন।

২০। মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করুন, এতে আপনি তাদের ভালোবাসা পাবেন, তাদের সাথে নম্র ভাবে কথা বলুন, বিনয় গ্রহণ করুন, তারা আপনাকে সম্মান করবে। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সাক্ষাৎ করুন এবং তাদের সাথে কথা বলুন, কেননা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সাক্ষাত ও কথা বলা দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী দূর করে।

২১। সৌভাগ্যের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সমূহের একটি হচ্ছে পিতা মাতার দোয়া, অতএব তাদেরকে আশির্বাদ মানে করুন, তাদের দোয়া আপনার জন্য যে কোনো মন্দের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে থাকবে।

২২। রাগ করবেন না। মানুষ যেমনই হোক তাদেরকে গ্রহণ করুন। তাদের কোন ভুল ত্রুটি হয়ে গেলে ক্ষমা করবেন। ক্ষমা করা ও দয়া প্রদর্শন করা আল্লাহ তালার বিশেষ গুণ।

২৩। ঘরবাড়ি সন্তান-সন্ততি চেহারা-সুরত ও চাকরি-বাকরিতে যে আপনার নিম্নমানের তার দিকে তাকান, তাহলোে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি হাজারো মানুষ থেকে অনেক ভাল আছেন।

২৪। মাঝে মাঝে হাসপাতালে যাওয়ার করুন, তাহলোে সুস্থতার মূল্য বুঝতে পারবেন, সময় পেলে জেলখানা হয়ে যান তাহলোে স্বাধীনতার স্বাদ অনুধাবন করতে পারবেন, সময়-সুযোগমতো মেন্টাল হসপিটালে গিয়ে মানসিক রোগীদের দেখে আসুন তাহলোে মস্তিষ্কের সুস্থতা ও বিবেক-বুদ্ধির গুরুত্ব বুঝতে পারবেন। এ সবই আল্লাহর নেয়ামত যার গুরুত্ব আপনি সাধারণত অনুভব করেন না।

২৫। যেকোনো একটি সময়ে একাকিত্ব ও নির্জনতা গ্রহণ করুন এবং নিজের কাজকর্মের ব্যাপারে ভাবুন, নিজের হিসেব নিজেই গ্রহণ করুন। আখেরাতের ব্যাপারে চিন্তা করুন। নিজেকে পরিশুদ্ধ করুন।

পরিশেষে, মনোযোগ সহকারে সুরা বাকারার আয়াত নং ১৫৫ ও ১৫৬ এই দুটি আয়াত পড়ুন এবং অনুধাবন করুন। যেখান আল্লাহতায়ালা বলেন: এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, জানমালের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে, তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্য ধারণকারী দের, যখন তারা বিপদে পতিত হয় তখন বলে নিশ্চয়ই আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তা্রই দিকে ফিরে যাব।

উল্লিখিত বিষয়গুলো আমল করে চললে আমরা সুখি হতে পারব ইংশাআল্লাহ।

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/islam

Islamic information to the point!View Author posts