বয়স, লিঙ্গ ও ব্যবহারভেদে বিভিন্ন ধরনের গবাদি প্রাণিকে বিভিন্ন ভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। আমরা অনেকের বিভন্ন প্রকার গরুর নাম যেমন- এঁড়ে, বকনা, ষাঁড়, বলদ প্রভৃতি দ্বারা কি বুঝায় জানি না। একইভাবে ছাগলের নামের ক্ষেত্রেও ডো, পাঁঠা, খাসি প্রভৃতি কোনটি দ্বারা কি বুঝায় জানি না। তো সেই সকল ভাই/বোনদেন জন্য আজরে এই পোষ্ট।
এ পাঠ শেষে আপনি- গরুর নামের তালিকা, ছাগলের নামের তালিকা, মহিষের নামের তালিকা, ভেড়ার নামের তালিকা, ঘোড়ার নামের তালিকা ও সেগুলোর সংজ্ঞা জানতে পারবেন।
(১) গরুর নামের তালিকা (Cattle)
১। গরু কাকে বলে: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের গরু জাতিকে সাধাারণ কথায় গরু বলা হয়।
২। বাছুর কাকে বলে: গাভীর স্ত্রী ও পুরুষ উভয় বাচ্চাকে বাছুর বলা হয়।
৩। এঁড়ে বাছুর কাকে বলে: এক বছরের কম বয়সের পুরুষ বাচ্চাকে এঁড়ে বাছুর বলা হয়।
৪। বকনা বাছুর কাকে বলে: এক বছরের কম বয়সের স্ত্রী বাচ্চাকে বকনা বাছুর বলা হয়।
৫। ইয়ারলিং ষাঁড় কাকে বলে: এক থেকে দুই বছর বয়স্ক ষাঁড় বাছুরকে ইয়ারলিং ষাঁড় বলা হয়।
৬। বকনা কাকে বলে: এক বছর বয়স থেকে প্রথম বাচ্চা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ের স্ত্রী গরুকে বকনা বলা হয়।
৭। গো-পাল কাকে বলে: এ সাথে অনেক গরু থাকলে বা চড়লে তাকে গো-পাল বলা হয়।
৮। গাভী কাকে বলে: প্রথম বাচ্চা প্রসব করার পরই স্ত্রী গরুকে গাভী বলা হয়।
৯। ষাঁড় কাকে বলে: প্রজননক্ষম পুরুষ (মর্দা) গরুকে ষাঁড় বলা হয়।
১০। স্ট্যাড ষাঁড় কাকে বলে: প্রজননের জন্য রক্ষিত প্রাপ্তবয়স্ক ষাঁড়কে স্ট্যাড ষাঁড় বলা হয়।
১১। বলদ কাকে বলে: প্রজননশক্তি রহিত খোঁজা করা পুরুষ গরুকে বলদ বলা হয়।
১২। বিফ কাকে বলে: প্রাপ্তবয়স্ক গরুর মাংসকে বিফ বলা হয়।
১৩। ভীল কাকে বলে: জন্ম থেকে তিন মাস বয়স্ক বাছুরের মাংসকে ভীল বলা হয়।
১৪। বুলার কাকে বলে: যে গাভী সবসসয় গরম অবস্থায় থাকে তাকে বুলার বলা হয়।
১৫। স্টিয়ার কাকে বলে: খোজাকৃত এঁড়ে বাছুর।
১৬। বেবি কাফ কাকে বলে: ছয়-সাত সপ্তাহ পর্যন্ত বয়স্ক বাছুরকে বেবি কাফ বলা হয়।
১৭। স্লিঙ্ক কাফ কাকে বলে: জবাইকৃত গাভীর জরায়ুতে যদি কোন বাচ্চা পাওয়া যায় তাকে স্লিঙ্ক কাফ বলে।
(২) ছাগলের নামের তালিকা (Buffalo)
১। ছাগল কাকে বলে: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের ছাগল জাতিকে সাধারণ কথায় ছাগল বলা হয়।
২। কিড কাকে বলে: নবজাতক ছাগল ছানাকে কিড বলা হয়।
৩। বাকলিং কাকে বলে: অপ্রাপ্তবয়স্কক পুরুষ ছাগলকে বাকলিং বলা হয়।
৪। গোটলিং কাকে বলে: অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী ছাগলকে গোটলিং বলা হয়।
৫। ডো কাকে বলে: বাচ্চা দেওয়া প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী ছাগলকে ডো বলা হয়।
৬। পাঁঠা কাকে বলে: প্রজননক্ষম পুরুষ ছাগলকে পাঁঠা বা বাক বলা হয়।
৭। খাসি কাকে বলে: প্রজননশক্তি রহিত খোঁজা করা পুরুষ ছাগলকে খাসি বলা হয়।
৮। ছাগল পাল কাকে বলে: একসাথে অনেকগুলো ছাগল চরলে তাকে ছাগল পাল বলা হয়।
৯। চেভন কাকে বলে: ছাগলের মাংসকে চেভন বলে।
১০। মাাটন কাকে বলে: পূর্ণবয়স্ক খাসির মাংসকে মাটন বলা হয়।
(৩) মহিষের নামের তালিকা (Goat)
১। মহিষ কাকে বলে: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের মহিষ জাতিকে সাধার রকথায় মহিষ বলা হয়।
২। বাফেলো কাফ কাকে বলে: মহিষের স্ত্রী ও পুরুষ উভয় বাচ্চাকে বাফেলো কাফ বলা হয়।
৩। বাফেলো বুল কাফ কাকে বলে: মহিষের অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বাছুরকে বাফেলো বুল কাফ বলা হয়।
৪। বাফেলো হেইফার কাফ কাকে বলে: মহিষের অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী বাছুরকে বাফেলো হেইফার কাফ বলা হয়।
৫। সি বাফেলো কাকে বলে: গাভী মহিষেকে সি বাফেলো বলা হয়।
৬। বাফেলো বুল কাকে বলে: প্রজননশক্তিসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক পুুরুষ মহিষকে বাফেলো বুুল বলা হয়।
৭। বাফেলো বুলক কাকে বলে: প্রজননশক্তি রহিত খোঁজা করা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মহিষকে বাফেলো বুলক বলা হয়।
৮। বাফেন কাকে বলে: মহিষের মাংসকে বাফেন বলে।
(৪) মেষ বা ভেড়ার নামের তালিকা (Sheep)
১। ভেড়া কাকে বলে: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের ভেড়া জাতিকে সাধারণ কথায় ভেড়া বা মেষ বলা হয়।
২। মেষশাবক কাকে বলে: এক বছরের কম বয়সের ভেড়ার বাচ্চাকে মেষশাবক বলে।
৩। ভেড়ি কাকে বলে: পূর্ণবয়স্ক বাচ্চা প্রদানকারী স্ত্রী ভেড়াকে ভেড়ি বলা হয়।
৪। ভেড়াশাবক কাকে বলে: ভেড়ির পুরুষ বাচ্চাকে ভেড়াশাবক বলা হয়।
৫। ভেড়িশাবক কাকে বলে: ভেড়ির স্ত্রী বাচ্চাকে ভেড়িশাবক বলা হয়।
৬। হোয়েদার কাকে বলে: প্রজননশক্তি রহিত অর্থাৎ খোঁজা করা পুরুষ ভেড়াকে হোয়েদার বলা হয়।
৭। সেগি কাকে বলে: প্রজনন কাজে ব্যবহারের পর খোঁজা করা পুরুষ ভেড়াকে সেগি বলা হয়।
৮। র্যাম কাকে বলে: প্রজননক্ষম পূর্ণবয়স্ক পুুরুষ ভেড়াকে র্যাম বা টুপ বলা হয়।
৯। মেষ পাল কাকে বলে: একসাথে অনেকগুলো মেষ থাকলে তাকে মেষপাল বলা হয়।
১০। মাটন কাকে বলে: ভেড়ার মাংসকে মাটন বলা হয়।
১১। ইলড কাকে বলে: যে ভেড়ি কোনদিন বাচ্চা প্রসব করেনি তাকে বাজা বা বন্ধ্যা ভেড়ি বা ইলড বলা হয়।
১২। টুপ কাকে বলে: প্রজননক্ষম পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ভেড়াকে টুপ বলে।
১৩। ল্যাম্ব কাকে বলে: এক বছরের কম বয়সের মেষের বাচ্চাকে ল্যাম্ব বা বাচ্চা মেষ বলে।
১৪। ক্রোন কাকে বলে: যে ভেড়িকে অধিক বয়স পর্যন্ত বাচ্চা উৎপাদনে নিয়োজিত রাখা হয়, তাকে ক্রোন বা বীজ ভেড়ি বলে
(৫) ঘোড়ার নামের তালিকা (Horse)
১। হর্স কাকে বলে: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের ঘোড়া প্রজাতিকেই হর্স বা বলা হয়।
২। স্টালিয়ন কাকে বলে: প্রজনন কাজে ব্যবহৃত পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ঘোড়াকে স্টালিয়ন বা পালের গোদা বলা হয়।
৩। গেলডিং কাকে বলে: দুই বছর বয়সের আগে যে পুরুষ ঘোড়াকে খোঁজা করা হয়োছে তাকে গেলডিং বলা হয়।
৪। কোল্ট কাকে বলে: এক বছরের বেশি অপ্রাপ্ত বয়সের পুরুষ ঘোড়াকে ঘোটক বা কোল্ট বলা হয়।
৫। কোল্ট ফোল কাকে বলে: এক বছরের কম বয়সের ঘোড়ার পুরুষ বাচ্চাকে মর্দা বাচ্চা বা কোল্ট ফোল বলা হয়।
৬। ফিলি কাকে বলে: এক বছরের অধিক অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী ঘোড়াকে ফিলি বলা হয়।
৭। ফিলি ফোল কাকে বলে: এক বছরের কম বয়সের মাদি বা ঘোটকি বাচ্চাকে বাচ্চা ঘোটকী বা ফিলি ফোল বলা হয়।
৮। মেয়ার কাকে বলে: প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী জাতীয় ঘোড়াকে ঘোটকি বা মেয়ার বলা হয়।
উপরোক্ত আলেচনার দ্বারা গরুর নামের তালিকা, ছাগলের নামের তালিকা, মহিষের নামের তালিকা, ভেড়ার নামের তালিকা, ঘোড়ার নামের তালিকা দেখলাম, জানলাম ও বুঝলাম।
বাংলাদেশে যত গৃহপালিত প্রাণি আছে সবগুলোই দেশের উৎপাদনমুখী ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যাপক সহায়তা করে। তাছাড়া এরা নিজেরাও অর্থকরী হিসেবে নিবেচিত। গবাদি প্রাণি সমূহকে বয়স। লিঙ্গ ও ব্যাপবহার ভেদে জানার মাধ্যমে এদেরকে সহজে চিহ্নিত কএবং উৎপাদনশীলতা সম্পর্কে জানান যায়। কারন গবাদি প্রাণি সম্পদের উন্নয়নের সাথে জাতীয উন্নয়ন জড়িত।
[সূত্র: ওপেন স্কুল]