Skip to content

 

গাঁদা ফুল গাছের পরিচর্যা সমূহ ও গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি

গাঁদা ফুল গাছের পরিচর্যা সমূহ ও গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশে গাঁদা ফুল খুবই জনপ্রিয়। এর চাষ সহজ। আমরা এখানে গাঁদা ফুল গাছের পরিচর্যা সমূহ ও গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।

এ গাঁদা ফুল উদ্যানে, পার্কে, টবে বারান্দায় চাষ করা যায়। ফুলটি নানাবিধ উৎসব, অনুষ্ঠান, গৃহসজ্জা, মালা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ফুলটির রং, গঠন বৈচিত্র্য ও কোমলতা সকল শ্রেণির মানুষকে আকৃষ্ট করে।

গাঁদা ফুলের পাতার রস শরীরের ক্ষত স্থানে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।

নিম্নে গাঁদা ফুল গাছের পরিচর্যা সমূহ ও গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি ধরা হলো-

চিত্র- টবে ফুলসহ গাঁদা গাছ
চিত্র- টবে ফুলসহ গাঁদা গাছ

ক) জাত নির্বাচন: বাংলাদেশে দুই প্রজাতির গাঁদা ফুল চাষ করা হয়, যথা-

i) আফ্রিকান গাঁদা: এ প্রজাতির গাছ উচ্চতায় প্রায় ১০০ সেমি লম্বা, ফুল একরঙা ও বেশ বড় হয়। জাত অনুযায়ী ফুল হলুদ, সোনালি, বাসন্তি, কমলা প্রভৃতি রঙের হয়ে থাকে। 

ii) ফরাসি গাঁদা: এ প্রজাতির গাছ ১৫-৩০ সেমি লম্বা, শক্ত, ঝোপালো এবং ফুল ছোট ও লাল রঙের হয়ে থাকে।

খ) চারা তৈরি: বীজ ও শাখা কলমের মাধ্যমে গাঁদা গাছের চারা তৈরি করা যায়।

i) বীজ

  • বর্ষার সময় বীজতলায় পাতলা করে বীজ বুনে গাঁদার চারা তৈরি করা হয়। সবজির বীজতলার মতোই গাঁদা ফুলের বীজতলা তৈরি করতে হবে।
  • চারার বয়স এক মাস হলে রোপণ উপযোগী হয়।

ii) শাখা কলম

  • শাখার সাহায্যে চারা তৈরি করার জন্য ফুল দেওয়ার পর সুস্থ-সবল গাছ নির্বাচন করে তা থেকে ২.৫ সেমি চওড়া ও ৫-১০ সেমি লম্বা শাখা কেটে নিতে হবে।
  • কাটা শাখাগুলো ছায়াযুক্ত স্থানে বালি ও দোআঁশ মাটির মিশ্রণে বসাতে হবে। এমনভাবে বসাতে হবে যেন কমপক্ষে একটি গিট মাটির নিচে থাকে।
  • নিয়মিত পরিচর্যা করলে শাখাগুলোতে প্রচুর শিকড় ও ডালপালা গজাবে। বর্ষাকালে আবার শাখা কলম থেকে ডাল কেটে একইভাবে বসাতে হবে। প্রায় মাসখানেকের মধ্যে সেগুলোতে পর্যাপ্ত শিকড় গজালে তা রোপণ করতে হবে।
See also  গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি

গ) জমি তৈরি ও চারা রোপণ:

  • উঁচু এবং দোষীশ মাটির জমি গাঁদা চাষের জন্য উত্তম।
  • ৪-৫টি চাষ ও মই দিয়ে জমি ঝুরঝুরা করে তৈরি করতে হবে।
  • বর্ষার শেষের দিকে চারা রোপণ করা ভালো।
  • মূল জমিতে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০ সেমি এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪৫ সেমি রাখা হয়।
  • টবে রোপণ করলে খাটো জাতের গাঁদা নির্বাচন করা হয়।

ঘ) সার প্রয়োগ:

  • শেষ চাষের সময় শতক প্রতি ৪০ কেজি পচা গোবর, ১ কেজি ইউরিয়া, ০.৮০ কেজি টিএসপি, ০.৭০ কেজি এমওপি সার ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।
  • চারা রোপণের ১-১.৫ মাস পর শুধু ইউরিয়া সার শতক প্রতি ০.৭০ কেজি প্রয়োগ করতে হবে।
  • সার ভালোভাবে জমিতে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
  • টবে রোপণ করলে প্রতি টবে ২৫০ গ্রাম পচা গোবর, এক চা চামচ করে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার মিশিয়ে টব প্রস্তুত করে চারা রোপণ করতে হবে। রোপণের ১-১.৫ মাস পর আবার এক চামচ ইউরিয়া সার দিতে হবে।

ঙ) গাঁদা ফুল গাছের আন্তঃপরিচর্যা:

  • গাছ ছোট অবস্থায় নিয়মিতভাবে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
  • জমির রস বুঝে ১-২টি সেচ দিলেই চলে তবে গাছে ফুল আসার পরে সেচ দেওয়া ভালো। এতে ফুলের আকার বড় হয় এবং উজ্জ্বলতা বাড়ে।
  • ছোট আকারের বেশি ফুল পাবার জন্য গাছ সামান্য বড় হলে গাছের আগা কেটে ফেলতে হয়। এর ফলে শাখা-প্রশাখা বেশি হয় এবং ফুলও বেশি ধরে।
  • ঝড়-বাতাস, সেচ দেওয়া ও ফুলের তারে গাছ যাতে হেলে না পড়ে সেজন্য গাছে বাঁশের খুঁটি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে।

চ) রোগ ও পোকা ব্যবস্থাপনা: গাঁদা ফুলের গাছে রোগ ও পোকার আক্রমণ তেমন দেখা যায় না। তবে ব্যাকটেরিয়াজনিত উইল্ট রোগে গাছ নেতিয়ে পড়ে এবং একসময় পুরো গাছটি শুকিয়ে মারা যায়। রোগটির বিস্তার রোধ করার জন্য আক্রান্ত গাছ উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

See also  গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি

ছ) ফুল সংগ্রহ:

চিত্র- গাঁদা ফুল
চিত্র- গাঁদা ফুল
  • কুল কাঁচি দিয়ে বোঁটাসহ কেটে সংগ্রহ করতে হবে। বোঁটা একটু বেশি রাখলে ফুল বেশি সময় সতেজ থাকে।
  • ফুল তুলে পানি ছিটিয়ে কালো পলিথিনে মুড়ে বাজারে পাঠাতে হবে।

[সূত্র: এনসিটিবি]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts

You cannot copy content of this page