বাংলাদেশে গ্লাডিওলাস অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাটফ্লাওয়ার।
(১) গ্লাডিওলাস ফুলের বৈশিষ্ট্য ও জাত পরিচিতি
ক) বারি গ্লাডিওলাস-১
বারি গ্লাডিওলাস-১ জাতটি বাংলাদেশের জলবায়ুতে চাষের জন্য ২০০৩ সালে অনুমোদন করা হয়।
- জাতটি বর্ষজীবী এবং গাছের উচ্চতা মাঝারী (৫০ সেমি) ও বেশ শক্ত।
- ফুলের বোঁটা লম্বা ও অধিক ফ্লোরেট সমৃদ্ধ।
- লাল রঙের দুটি পাঁপড়িতে হলুদ ছোপ থাকে।
- সাধারণত পানিতে ফুলের স্থায়িত্বকাল ৭-৮ দিন।
- ফ্লোরেটের সংখ্যা ৯-১০টি।
- ফুলের আকার দৈর্ঘ্য ১০ সেমি এবং প্রস্থ ৮ সেমি।
- র্কমের সংখ্যা ২-৩টি এবং করমেলের সংখ্যা ২৫-৩০টি।
খ) বারি গ্লাডিওলাস-২
আমাদের বাংলাদেশের জলবায়ুতে সহজে আবাদযোগ্য বারি গ্লাডিওলাস-২ জাতটি ২০০৩ সালে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করা হয়।
- এ জাতের গাছ বর্ষজীবী, উচ্চতা মাঝারী ও গাছ বেশ শক্ত।
- লম্বা বোঁটাসম্পন্ন ফুলে গাঢ় মেজেন্টা রঙের অনেকগুলি ফ্লোরেট থাকে।
- প্রতি ফ্লোরেটের দুটি পাঁপড়িতে ক্রিম রঙের ছোপ দেখা যায় এবং অন্যান্য পাঁপড়িতে সাদা স্ট্রাইপ থাকে।
- প্রতিটি ফুলের ব্যাস ৯.০-১০.০ সেমি হয়ে থাকে।
- সাধারণত পানিতে এ ফুল ৯ থেকে ১০ দিন তাজা থাকে।
গ) বারি গ্লাডিওলাস-৩
এটি একটি কন্দ জাতীয় ফুল। সারা বছর এর চাষাবাদ করা যায়, বাজারে চাহিদা আছে এবং বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ জাতের কাটফ্লাওয়ারের তুলনা নেই।
- এ গাছের পাতা তরবারীর মত।
- করম রোপণের উপযুক্ত সময় হচ্ছে মধ্য-অক্টোবর থেকে মধ্য-নভেম্বর।
- ফুলের রং সাদা এবং ৯.১-৯.৩ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট।
- স্পাইকপ্রতি ফ্লোরেটের সংখ্যা প্রায় ১৩-১৪টি।
- সাধারণত স্পাইকের নিচের দিক থেকে ১-২টি ফ্লোরেট উন্মুক্ত হওয়া শুরু হলে স্পাইক কাটার উপযুক্ত সময় হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
- হেক্টরপ্রতি ১.৭৫-২.০০ লক্ষ ফুলের স্টিক পাওয়া যায়।
- ফুলের সজীবতা প্রায় ৮-৯ দিন থাকে।
ঘ) বারি গ্লাডিওলাস-৪
কন্দজাতীয় এ ফুলটি সোর্ড লিলি নামে পরিচিত। জাতটি ২০০৯ সালে অবমুক্ত করা হয়।
- এ গাছের পাতা তরবারীর মতো এবং দু’সারিতে পরপর বিপরীত দিকে অবস্থান করে।
- গ্লাডিওলাস বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। সারা বছর এ ফুলের চাষাবাদ করা যায়।
- ফুলের রং গাঢ় গোলাপী এবং প্রায় ৯.১-৯.২ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট।
- স্পাইক ৭০-৭৫ সেমি লম্বা এবং ফ্লোরেটের সংখ্যা প্রায় ১২-১৩ টি।
- ফুলের সজীবতা ৮-৯ দিন।
- জীবনকাল প্রায় ১৪৫-১৫৫ দিন।
- গড় ফলন প্রায় ২,০০,০০০ স্টিক/হেক্টর।
ঙ) বারি গ্লাডিওলাস-৫
- জাতটি ২০০৯ সালে অবমুক্ত করা হয়।
- এটি একটি কন্দ জাতীয় হলুদ রঙের ফুল। তাপ সহনশীল হওয়ায় সারা বছর চাষ করা যায়।
- সারা দেশে চাষ উপযোগী, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে।
- পুষ্পদন্ড প্রায় ৮০-৮২ সেমি।
- স্পাইক প্রতি ফ্লোরেটের সংখ্যা প্রায় ১১-১২টি।
- ফুলের সজীবতা প্রায় ৭-৮ দিন।
- ফলন প্রায় ২ লক্ষ স্টিক/হেক্টর।
চ) বারি গ্লাডিওলাস-৬
জাতটি ২০১৬ সালে অবমুক্ত করা হয়।
- এটি একটি কন্দ জাতীয় ফুল। এ গাছের পাতা তরবারীর মতো। সারাবছর এ ফুলের চাষাবাদ করা যায়।
- ফুলের রং আকর্ষণীয় নীল এবং প্রায় ৯.০-৯.১ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট।
- স্পাইক ৭০-৮০ সেমি লম্বা এবং ফ্লোরেটের সংখ্যা প্রায় ১০-১১ টি।
- ফুলের সজীবতা প্রায় ৮-৯ দিন।
- গড় ফলন প্রায় ১,৯০,০০০স্টিক/হেক্টর।
(২) গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ পদ্ধতি
ক) জলবায়ু ও মাটি
ঠান্ডা আবহাওয়ায় এ ফুল ভাল জন্মে। সাধারণত ১৫-২৫০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এর অংগজ বৃদ্ধি ও ফুল উৎপাদনের জন্য উপযোগী।
গ্লাডিওলাস দৈনিক ৮-১০ ঘণ্টা আলো পছন্দ করে। তাই রৌদ্রজ্জ্বল জায়গা ও সে সাথে ঝড়ো বাতাস প্রতিহত করার ব্যবস্থা আছে এমন স্থান এ ফুল চাষের জন্য নির্বাচন করা উচিত।
সুনিষ্কাশিত দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি গ্লাডিওলাস চাষের জন্য উত্তম। মাটির pH মান ৬-৭ এর মধ্যে থাকা উচিত।
খ) বংশ বিস্তার
বীজ, র্কম এবং র্কমেলের মাধ্যমে গ্লাডিওলাসের বংশবিস্তার করা যায়। সাধারণভাবে চাষের জন্য ‘র্কম’ রোপণ করা হয়।
সাধারণত র্কম ও র্কমেল দ্বারা গ্লাডিওলাস ফুলের বংশ বিস্তার করা হয়। তবে গাছ প্রতি গ্লাডিওলাস ফুলে র্কম উৎপাদন সংখ্যা খুবই কম। জাত ভেদে ২-৩টি র্কম উৎপাদিত হয়।
র্কম খাড়াভাবে কেটে দুই ভাগে ভাগ করে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন মিশিয়ে ১/২ ঘণ্টা র্কম এর টুকরাগুলি ডুবিয়ে ১ দিন ছায়ায় রেখে জমিতে লাগালে গাছের বৃদ্ধি ভাল হয়, কাট-র্কম থেকে অধিক সংখ্যাক চারা উৎপন্ন হয় এবং র্কম ও করমেলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফলশ্রুতিতে গ্লাডিওলাসের ফলন বৃদ্ধি পায় এবং কৃষক লাভবান হবে।
গ্লাডিওলাস ফুলের র্কম সাধারণত ৩-৪ মাস সুপ্তাবস্থায় থাকে। এ ফুলের র্কম জমি থেকে তোলার পর ৪৫ দিন সংরক্ষণ করা হয়। এরপর র্কমগুলি ১০০ পিপিএম BA দ্বারা ৫ মিনিট ভিজিয়ে ১ দিন ছায়ায় রেখে জমিতে লাগালে র্কমের সুপ্তাবস্থা ভেঙ্গে ১০০% চারা গজায় এবং গাছ, করম ও করমেলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফলশ্রুতিতে গ্লাডিওলাস আগাম চাষ করা যায়। এ ক্ষেত্রে কৃষকের সময় বাঁচে ও বংশবিস্তারক উপাদান র্কম ও র্কমেল বৃদ্ধির ফলে কৃষক লাভবান হয়।
গ) জমি তৈরি ও সার প্রয়োগ
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ভালভাবে চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হয়। শেষ চাষ দেয়ার সময় হেক্টরপ্রতি ১০ টন গোবর সার, ৩৭৫ কেজি টিএসপি, ৩০০ কেজি এমওপি, ১২ কেজি বরিক এসিড, ৮ কেজি জিংক সালফেট ও ১০০ কেজি জিপসাম সার মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দেয়া উচিত।
৩০০ কেজি ইউরিয়া এর অর্ধেক র্কম রোপণের ২০-২৫ দিন পর এবং বাকি অর্ধেক পুষ্পদন্ড বের হওয়ার সময় উপরি প্রয়োগ করা উচিত।
ঘ) র্কম রোপণ
অক্টোবর-নভেম্বর মাসে জমি তৈরির পর ৫.০-৫.৫ সেমি ব্যাসের রোগমুক্ত র্কম মাটির ৬-৭ সেমি গভীরতায় রোপণ করা উচিত।
সারি থেকে সারি ২০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছ ২০ সেমি।
ঙ) অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা
গ্লাডিওলাসের ক্ষেত আগাছামুক্ত রাখতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনমতো সেচ দেয়া উচিত। প্রতি সেচের পর জমিতে ‘জো’ আসলে নিড়ানী দিয়ে জমি আলগা করে দিতে হয়।
প্রথমবার ইউরিয়া সার প্রয়োগ করার পর সেচ দিতে হয় এবং পরে মাটিতে ‘জো’ আসলে মাটি ঝুরঝুরে করে দুই সারির মাঝখানের মাটি গাছের গোড়ায় তুলে দিতে হয়। এতে করে গাছগুলো সোজা থাকে।
চ) ফুল সংগ্রহ
সাধারণত স্পাইকের নিচের দিক থেকে ১-২টি ফ্লোরেট উন্মুক্ত হওয়া শুরু হলে স্পাইক কাটার উপযুক্ত সময় হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
ফুল সংগ্রহের পরপরই বালতি ভর্তি পানিতে সোজা করে ডুবিয়ে রেখে পরে নিম্ন তাপমাত্রায় (৬-৭০ সেন্টিগ্রেড) সংরক্ষণ করা উত্তম।
ফুলের স্পাইক কাটার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন গাছের গোড়ায় ৪-৫ টি পাতা থাকে। তা না হলে র্কম পুুষ্ট হবে না।
গ্লাডিওলাস ফুলের সজীবতা বৃদ্ধিকরণ:
গ্লাডিওলাস ফুলের স্টিক ৪% সুক্রোজ এর সাথে ২০০ পিপিএম হাইড্রোক্সিকুইনোলিন সালফেট এবং ২০ পিপিএম সাইট্রিক এসিড দ্রবনে রাখলে ফুলের সজীবতা প্রায় ১০-১২ দিন থাকে।
ছ) র্কম তোলা ও সংরক্ষণ
ফুল ফোটা শেষ হলে পাতা হলুদ হয় এবং গাছ মারা যায়। এসময় গাছের গোড়া খুঁড়ে সাবধানে ‘র্কম’ গুলি সংগ্রহ করা দরকার। খেয়াল রাখতে হবে যেন ‘র্কম’ কেটে অথবা আঘাত প্রাপ্ত না হয়।
বড় ও ছোট ‘র্কম’ গুলোকে বাছাই করে আলাদা করার পর ছায়ায় শুকানো উচিত।
সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাসে ‘র্কম’ তোলা হয়। সংরক্ষণকালে পচন এড়ানোর জন্য র্কম গুলোকে ০.২% অটোস্টিন দ্রবণে ৩০ মিনিট শোধন করে শুকিয়ে নেয়া উচিত। এরপর শুকানো ‘র্কম’ গুলি ছিদ্রযুক্ত পলিথিন ব্যাগে ভরে ঘরের শুকনো ও ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করা ভাল।
সবচেয়ে ভাল হয় যদি এগুলোকে ঠান্ডা গুদামে সংরক্ষণ করা যায়। পরবর্তীতে সময়মতো এ সকল র্কম গুদাম থেকে বের করে বংশবিস্তারের কাজে ব্যবহার করা হয়।
(৩) গ্লাডিওলাস চাষে রোগ দমন ব্যবস্থা
গ্লাডিওলাস ফুলে সাধারণত ফিউজেরিয়াম উইল্ট ও র্কম পচা রোগ দেখা যায়।
ক) ফিউজেরিয়াম উইল্ট
এটি গ্লাডিওলাসের একটি মারাত্মক রোগ। Fusarium oxysporum নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগটি হয়ে থাকে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ বাধাগ্রস্থ হয়। রোগাক্রান্ত র্কম ও মাটি দ্বারা সাধারণত এ ছত্রাক রোগ ছড়ায়।
এ রোগে পাতার আগা প্রথমে হলদে হয় এবং পরবর্তীতে বাদামী থেকে ধূসর হয়ে বক্রাকৃতির হয়ে যায় এবং সম্পূর্ণ গাছ আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। র্কমে গাঢ় বাদামী থেকে লালচে বাদামী গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। বেশি আক্রান্ত র্কম গুদামে শুকিয়ে যায় এবং লাগানোর পর গাছ গজায় না।
- এ রোগ দমনে সুস্থ রোগমুক্ত র্কম ব্যবহার করা উচিত।
- র্কম গুদামজাতকরণ এবং লাগানোর পূর্বে অটোস্টিন (০.২%) দ্বারা ১৫-৩০ মিনিট শোধন করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
- উপকারী ছত্রাক ট্রাইকোডারমা স্পোর সাসপেনশন (3×10⁴ cfu/ml) ব্যবহার করা যেতে পারে।
- এছাড়া অটোস্টিন ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে লাগানোর পূর্বে র্কম শোধন করে, প্রতি এক মাস অন্তর ৩ বার গাছের গোড়ায় মাটি উত্তোলনের মাধ্যমে এবং সর্বোপরি আর একবার র্কম উত্তোলন করে সংরক্ষণের পূর্বে আগের নিয়েমে র্কমগুলি শোধনের মাধ্যমেও এ রোগ অনেকাংশে দমন করা যায়।
- শস্য পর্যায় অবলম্বন করলে এ রোগের প্রকোপ অনেকখানি কমে যায়।
খ) র্কম পচা রোগ
আঘাতপ্রাপ্ত অংশ দিয়ে এ রোগের জীবাণু র্কমে অনুপ্রবেশ করে। হিমাগারে রোগাক্রান্ত র্কমের উপর কালো/বাদামী/হলুদ বর্ণের মোল্ড বা ছাতার মত আবরণ তৈরি হয়।
- র্কম তোলা ও নাড়া-চাড়া করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন র্কম আঘাতপ্রাপ্ত না হয়।
- আর্দ্র বা উচ্চ তাপমাত্রায় র্কমকে সংরক্ষণ করা উচিত নয়।
(৪) গ্লাডিওলাস চাষে পোকা দমন ব্যবস্থা
গ্লাডিওলাস ফুলে পোকার আক্রমণ খুব বেশি দেখা যায় না, কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে নিম্নবর্ণিত পোকাগুলির আক্রমণ দেখা দিতে পারে।
ক) থ্রিপস
এটি অতি ক্ষুদ্র পোকা যা সাধারণত খালি চোখে দেখা যায় না। এ পোকা পাতা, স্পাইক ও ফুলের রস শোষণ করে যার ফলে আক্রান্ত পাতায় রূপালী ও বাদামী রঙের লম্বা দাগ দেখা যায় এবং পাতা শুকিয়ে যায়।
স্পাইক ও ফুলে আক্রমণের ফলে স্পাইকের ফুল ভালভাবে ফুটতে পারে না এবং ফুলে সাদা বা বাদামী ফুসকুড়ি দাগ দেখা যায় যাতে পাঁপড়ি বিবর্ণ হয়ে যায় এবং ফুলের বাজার মূল্য কমে যায়।
- এ পোকা দমন করার জন্য জমিতে সাদা রঙের আঁঠালো ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- আক্রমণ বেশি হলে ফিপ্রনিল গ্রুপের কীটনাশক (অ্যারোনিল ৫০ এসসি/ফোকাস ৫০ এসসি) ১.০ মিলি/লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করা উচিত।
খ) জাব পোকা
এ পোকা কচি পাতা, নতুন স্পাইক ও ফুলের কুঁড়িতে আক্রমণ করে রস চুষে খায়। ফলে আক্রান্ত পাতা ও স্পাইক কুঁকড়ে যায় এবং বিকৃত হয়। ফুলের কুঁড়ি এবং ফুলও বিকৃত হয় এবং ভালভাবে ফুটতে পারে না।
- এদের দমনে প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত পাতা বা ফুল ছিড়ে ফেলে পোকাসহ ধ্বংস করা উচিত।
- হলুদ রঙের আঁঠালো ফাঁদ ব্যবহার করে ভাল ফল পাওয়া যায়।
- তাছাড়া সাবান গুঁড়া ৫ গ্রাম/লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করেও এ পোকা দমন করা যেতে পারে।
- আক্রমণ বেশি হলে ডাইমেথয়েট জাতীয় কীটনাশক (পারফেকথিয়ন/সানগর/টাফগর ৪০ ইসি) ২.০ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর ২-৩ বার স্প্রে করা উচিত।
(৫) গ্লাডিওলাসের বংশবিস্তারক উপাদান উৎপাদন প্রযুক্তি
সাধারণত র্কম ও র্কমেল দ্বারা গ্লাডিওলাস ফুলের বংশ বিস্তার করা হয়। তবে গাছ প্রতি গ্লাডিওলাস ফুলে র্কম উৎপাদন সংখ্যা খুবই কম। জাত ভেদে ২-৩টি র্কম উৎপাদিত হয়।
করম্ খাড়াভাবে কেটে দুই ভাগে ভাগ করে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন মিশিয়ে ১/২ ঘণ্টা করম্রে টুকরাগুলি ডুবিয়ে ১ দিন ছায়ায় রেখে জমিতে লাগালে গাছের বৃদ্ধি ভাল হয়, কাট-র্কম থেকে অধিক সংখ্যাক চারা উৎপন্ন হয় এবং করম্ ও করমেলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফলশ্রুতিতে গ্লাডিওলাসের ফলন বৃদ্ধি পায় এবং কৃষক লাভবান হবে।
[সূত্র: বিএআরআই]