Skip to content

ছোলার উচ্চ ফলনশীল জাত

ছোলার উচ্চ ফলনশীল জাত

স্বল্প পরিচর্যা ও বৃষ্টি নির্ভর ফসল হিসেবে অপেক্ষাকৃত মাঝারি ঊর্বর জমিতে ছোলা চাষ হয়ে থাকে।

আমাদের বাংলাদেশের ছোলার সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণে ও বিদেশ থেকে ছোলা আমদানী করে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় রোধ করতে উচ্চফলনশীল ও রোগসহনশীল ছোলার জাত চাষাবাদ করা অপরিহার্য।

বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক এ পর্যন্ত ছোলার বেশ কিছু উন্নত জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। ছোলার এ জাতসমূহ একক ফসলের পাশাপাশি আন্তঃফসল হিসেবে চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।

নিম্নে ছোলার ১০টি উচ্চ ফলনশীল জাতসমূহের পরিচিতি তুলে ধরা হলো-

(১) বারি ছোলা-২ (বড়াল)

এ জাতটি ১৯৮৫ সালে ICRISAT হতে আনা হয়। পরবর্তীতে বহুস্থানিক পরীক্ষার মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল হিসেবে ১৯৯৩ সালে এ জাতটি সারাদেশে চাষাবাদের জন্য বারি ছোলা-২ নামে অনুমোদন করা হয়।

বারি ছোলা-২ এর ফসল ও বারি ছোলা-২ এর দানা
বারি ছোলা-২ এর ফসল ও বারি ছোলা-২ এর দানা
  • গাছের শাখার অগ্রভাগ তুলনামূলকভাবে হালকা ও উপশিরা লম্বা। গাছের রং গাঢ় সবুজ।
  • বীজ স্থানীয় জাতের চেয়ে বড়। হাজার বীজের ওজন ১৪০-১৫০ গ্রাম।
  • আমিষের পরিমাণ ২৩-২৭%।
  • বারি ছোলা-২ এর জীবনকাল ১২০-১৩০ দিন।
  • হেক্টরপ্রতি ফলন ১৩০০-১৬০০ কেজি।
  • এ জাত নুয়ে পড়া বা উইল্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন।
  • বীজের পার্শ্বদিকে সামান্য চেপ্টা। বীজের রং হালকা বাদামী। বীজের আকার বড় হওয়ায় এ জাতের ছোলা কৃষক ও ক্রেতার কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য।
  • ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৩০-৩৫ মিনিট।

(২) বারি ছোলা-৩ (বরেন্দ্র)

বারি ছোলা-৩ বা বরেন্দ্র জাতের মূল কৌলিক সারিটি ১৯৮৫ সালে ICRISAT হতে আনা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় মাটি ও আবহাওয়াতে বহুস্থানিক পরীক্ষার মাধ্যমে এ জাতটি ১৯৯৩ সালে চাষাবাদের জন্য জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে।

বারি ছোলা-৩ এর ফসল ও বারি ছোলা-৩ এর দানা
বারি ছোলা-৩ এর ফসল ও বারি ছোলা-৩ এর দানা
  • এ জাতের গাছ খাড়া প্রকৃতির। রং হালকা সবুজ, পত্রফলক বেশ বড় এবং ডগা সতেজ। সর্বোপরি এ জাতটি গভীরমূলী।
  • বীজের আকার বেশ বড়। হাজার বীজের ওজন ১৮৫-১৯৫ গ্রাম।
  • ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৪০-৪৪ মিনিট।
  • আমিষের পরিমাণ ২৩-২৬%।
  • সঠিক সময়ে বুনলে পাকতে সময় লাগে ১১৫-১২৩ দিন।
  • এ জাতটি রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে আবাদের জন্য উপযোগী।
  • ফলন হেক্টরপ্রতি ১৮০০-২০০০ কেজি পাওয়া যায়।

(৩) বারি ছোলা-৪ (জোড়াফুল)

এ জাতটি ১৯৮৫ সালে ICRISAT হতে নার্সাারির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে বহুস্থানিক পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে জাতটি জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক কৃষক পর্যায়ে আবাদের জন্য বারি ছোলা-৪ নামে অনুমোদন করা হয়।

See also  ছোলা চাষ পদ্ধতি
বারি ছোলা-৪ এর ফসল ও বারি ছোলা-৪ এর দানা
বারি ছোলা-৪ এর ফসল ও বারি ছোলা-৪ এর দানা
  • এক বৃন্তে ২টি করে ফুল ও ফল ধরে।
  • গাছ মাঝারি খাড়া এবং পাতা গাঢ় সবুজ। কান্ডে খয়েরি রঙের ছাপ দেখা যায়। বীজের পার্শ্ব দিক সামান্য চেপ্টা, ত্বক মসৃণ।
  • বীজের রং হালকা বাদামী। হাজার বীজের ওজন ১৩২-১৩৮ গ্রাম।
  • গাছের উচ্চতা ৫০-৬০ সেমি।
  • ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৩২-৩৮ মিনিট।
  • আমিষের পরিমাণ ১৮-২১%।
  • জীবনকাল ১২০-১২৫ দিন।
  • ফলন হেক্টরপ্রতি ১৯০০-২০০০ কেজি।
  • এ জাতটি ফিউজেরিয়াম উইল্ট রোগ সহনশীল ক্ষমতাসম্পন্ন।

(৪) বারি ছোলা-৫ (পাবনাই)

বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা হতে জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ও তা মূল্যায়ন করে বারি ছোলা-৫ বা পাবনাই জাতটি উদ্ভাবন করা হয়। পরবর্তীতে বহুস্থানিক পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক জাতটি চাষাবাদের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়।

বারি ছোলা-৫ এর ফসল ও বারি ছোলা-৫ এর দানা
বারি ছোলা-৫ এর ফসল ও বারি ছোলা-৫ এর দানা
  • গাছ কিছুটা ছড়ানো প্রকৃতির। গাছের উচ্চতা ৪৫-৫০ সেমি এবং রং হালকা সবুজ।
  • চারা অবস্থায় গাছের কান্ডে কোন রং থাকে না, কিন্তু পরিপক্ক অবস্থায় কান্ডে হালকা খয়েরি রং পরিলক্ষিত হয়।
  • বীজ আকারে ছোট, রং ধূসর বাদামী এবং হিলাম খুব স্পষ্ট। বীজের পার্শ্বে কিছুটা চেপ্টা এবং ত্বক মসৃণ।
  • হাজার বীজের ওজন ১১০-১২০ গ্রাম।
  • ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৩৫-৪০ মিনিট।
  • আমিষের পরিমাণ ২০-২২%।
  • এ জাত ১২৫-১৩০ দিনে পাকে।
  • ফলন হেক্টরপ্রতি ১৮০০-২০০০ কেজি।

(৫) বারি ছোলা-৬ (নাভারুন)

বারি ছোলা-৬ বা নাভারুন জাতটি ১৯৮৫ সালে ওঈজওঝঅঞ হতে আন্তর্জাতিক নার্সারির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে প্রাথমিক, অগ্রবর্তী, অঞ্চলভিত্তিক ও বহুস্থানিক পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে জাতটি কৃষক পর্যায়ে আবাদের জন্য জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন দেয়া হয়।

বারি ছোলা-৬ এর ফসল ও বারি ছোলা-৬ এর দানা
বারি ছোলা-৬ এর ফসল ও বারি ছোলা-৬ এর দানা
  • গাছের উচ্চতা ৫৫-৬০ সেমি। পত্রফলক মাঝারী আকারের এবং রং হালকা সবুজ।
  • চারা অবস্থায় কান্ডে কোন রং দেখা যায় না, কিন্তু পরিপক্ক অবস্থায় কান্ডে হালকা খয়েরি রং পরিলক্ষিত হয়।
  • বীজের আকার কিছুটা গোলাকৃতি, ত্বক মসৃণ এবং রং উজ্জ্বল বাদামী হলদে। বীজ আকারে দেশি জাতের চেয়ে বড়। হাজার বীজের ওজন ১৫৫-১৬৫ গ্রাম।
  • এ জাতের ডাল রান্নার সময়কাল ৩২-৩৭ মিনিট।
  • এতে আমিষের পরিমাণ ১৯-২১%।
  • জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন।
  • ফলন হেক্টরপ্রতি ১৮০০-২০০০ কেজি।
  • জাতটি নাবীতে বপন করেও অন্যান্য জাতের চেয়ে অধিক ফলন পাওয়া যায়।

(৬) বারি ছোলা-৭

১৯৯০ সালে আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউট ICRISAT হতে আন্তর্জাতিক নার্সারির (ICSN) মাধ্যমে ছোলার বিভিন্ন প্রজাতি সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত প্রজাতিগুলি উইল্ট রোগাক্রান্ত জমিতে বাছাই করা হয়। ICCL-3272 নামক এই প্রজাতিটিকে উইল্ট রোগ সহনশীল ক্ষমতাসম্পন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্যান্য জাতের চেয়ে উচ্চফলনশীল বারি ছোলা-৭ এর ফসল প্রতীয়মান হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে চাষের জন্য এটিকে বরিছোলা-৭ নামে অনুমোদন দেয়া হয়।

See also  ছোলা চাষ পদ্ধতি
বারি ছোলা-৭ এর ফসল ও বারি ছোলা-৭ এর দানা
বারি ছোলা-৭ এর ফসল ও বারি ছোলা-৭ এর দানা
  • গাছের উচ্চতা প্রায় ৫৫-৬০ সেমি হয়ে থাকে এবং মাঝারী বিস্তৃত। পত্রফলকগুলি মাঝারী আকারের এবং রং হালকা সবুজ। চারা অবস্থায় কান্ডে হালকা পিগমেন্ট পরিলক্ষিত হয়।
  • বীজের আকার কিছুটা গোলাকৃতি, ত্বক মসৃণ, রং উজ্জ্বল বাদমী হলুদ।
  • ফুল আসতে সময় লাগে প্রায় ৫৫-৬০ দিন এবং পাকতে সময় লাগে ১২৫-১৩০ দিন। তবে নাবী বপনের ক্ষেত্রে আনুপাতিকহারে এর জীবনকাল কমে আসে।
  • হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ২২০০-২৫০০ কেজি পাওয়া যায়।

(৭) বারি ছোলা-৮

১৯৯০ সালে ওঈজওঝঅঞ হতে কাবুলী জাতের বেশ কয়েকটি লাইন সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত লাইনগুলোর মধ্যে ICCL-88003 লাইনটি রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল পাওয়া যায়। ফলন বারি ছোলা-৭ জাতের চেয়ে কম হলেও ভিন্ন ধরনের ছোলা হওয়ায় ও রোগ বালাই সহনশীল বিবেচিত হওয়ায় ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে চাষের জন্য এটিকে বারি ছোলা-৮ নামে অনুমোদন করা হয়। এ জাতটি কাবুলী জাত হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।

বারি ছোলা-৮ এর ফসল ও বারি ছোলা-৮ এর দানা
বারি ছোলা-৮ এর ফসল ও বারি ছোলা-৮ এর দানা
  • এই জাতের গাছের উচ্চতা প্রায় ৬০-৬৫ সেমি হয়ে থাকে এবং বিস্তৃত।
  • পত্রফলকগুলো বড় আকারের এবং রং সবুজ। চারা অবস্থা হতে পরিপক্ক অবস্থা পর্যন্ত কান্ড হালকা সবুজ থাকে।
  • বীজের আকার কিছুটা গোলাকৃতির, মসৃণ এবং রং সাদা।
  • বীজ আকারে দেশি জাতের চেয়ে অনেক বড়। ১০০০ বীজের ওজন প্রায় ২২০-২৪০ গ্রাম।
  • এই জাতে ফুলের রং সাদা এবং জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন।

(৮) বারি ছোলা-৯

ভারতের হায়দ্রাবাদে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইনস্টিটিউট ICRISAT থেকে সংগ্রহকৃত সংকরায়িত ICCV-95138 লাইনটি প্রাথমিক, অগ্রগামী ও বহুস্থানিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোগসহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল বিবেচিত হওয়ায় বারি ছোলা-৯ হিসেবে ২০১১ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক অবমুক্ত করা হয়।

বারি ছোলা-৯
বারি ছোলা-৯
  • লাইনটি বাংলাদেশের সকল জেলায় চাষাবাদের উপযোগী হলেও বরেন্দ্র এলাকা, পাবনা, ফরিদপুর, মাদারীপুর এবং রাজবাড়ী এলাকায় ভাল ফলন দেয়।
  • জাতটি এঁটেল দোঁআশ থেকে এঁটেল মাটিতে চাষ করা যায়।
  • এ জাতের গাছের উচ্চতা ৫৫-৬০ সেমি।
  • প্রতি গাছে পড সংখ্যা ৫৫-৬০টি।
  • ১০০০ বীজের ওজন ১৮০-২২০ গ্রাম।
  • জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন।
  • ফলন হেক্টরপ্রতি ২৩০০-২৭০০ কেজি।

(৯) বারি ছোলা-১০

২০১১ সালে ডাল গবেষণা কেন্দ্র, ঈশ্বরদী, পাবনায় ICRISAT, হায়দ্রাবাদ, ভারত থেকে খরা ও তাপ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল হিসেবে ছোলার কিছু জার্মপ্লাজম নিয়ে আসা হয়।

উক্ত জার্মপ্লাজমগুলো পরপর দুই বছর ডাল গবেষণা কেন্দ্র, পাবনাতে মূল্যায়ন করা হয়। এটি উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় পরবর্তীতে বরেন্দ্র, রাজশাহী ও যশোর অঞ্চলে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়।

See also  ছোলা চাষ পদ্ধতি
বারি ছোলা-১০
বারি ছোলা-১০

এটি খরা, রোগ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফলন ও অভিযোজন ক্ষমতা, রোগ বালাই ও পোকান্ডমাকড় সংবেদনশীলতা এবং গুণগত মান মূল্যায়ন করা হয়।

দীর্ঘদিন পরীক্ষার পর লাইনটি একটি সম্ভাবনাময় লাইন হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় জাত হিসেবে মুক্তায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয় এবং ২০১৭ সালে এটি অবমুক্ত করা হয়।

ছোলার নতুন ও সম্ভাবনাময় আগাম (১০-১৫ দিন) জাত হিসেবে এটি দেশে ছোলা ডালের ফলন বৃদ্ধির মাধ্যমে ছোলার সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে।

জাতের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য-

  • গাছ খাড়া প্রকৃতির তাই রোগ-বালাই আক্রমণ কম।
  • কান্ড খয়েরী পিগমেন্টযুক্ত।
  • বীজ চক্চকে বাদামী বর্ণের।
  • খরা ও তাপ সহনশীল তাই বরেন্দ্র অঞ্চলে চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
  • ছোলার সবচেয়ে ক্ষতিকারক রোগ ❝বট্রাইটিস গ্রে মোল্ড❞ রোগ সহনশীল।
  • দেরিতে বপনযোগ্য (ডিসেম্বরের মাঝামাঝী পর্যন্ত)।
  • গাছে ফলের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি (৬৭-৭২টি)।
  • তুলনামূলকভাবে মধ্যম আকৃতির বীজ (১০০ বীজের ওজন ২১-২৩ গ্রাম)।
  • জীবনকাল: ১১২-১২১ দিন।
  • ফলন: হেক্টর প্রতি ১৮০০-২০৩০ কেজি।

(১০) বারি ছোলা-১১

২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ICRISAT, হায়দ্রাবাদ, ভারত থেকে সুপার আগাম (Super early) শিরোনামে ছোলার ৮টি জার্মপ্লাজম ডাল গবেষণা কেন্দ্র, ঈশ্বরদী, পাবনাতে আনা হয়।

আনিত ৮টি লাইন ডাল গবেষণা কেন্দ্র, ঈশ্বরদী, পাবনার গবেষণা মাঠে ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ সালে মূল্যায়ন করা হয় এবং সেখান থেকে ICCX 060157-3 লাইনটি স্বল্পকালীন ও সম্ভাবনাময় লাইন হিসেবে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়।

পরবর্তীতে ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ সালে সালে বাংলাদেশের ছোলা উৎপাদনকারী প্রধান প্রধান অঞ্চল যেমনযশোর, রাজশাহী, মাদারীপুর, বরিশাল, জামালপুর, জয়দেবপুর ও পাবনা অঞ্চলে প্রাথমিক ফলন পরীক্ষা ও বহুস্থানীক ফলন পরীক্ষার মাধ্যমে উক্ত অগ্রবর্তী লাইনটির (ICCX 060157-3) ফলন, অভিযোজন ক্ষমতা, রোগ বালাই, পোকান্ডমাকড় সংবেদনশীলতা এবং গুণগত মান মূল্যায়ন করা হয়।

দীর্ঘদিন পরীক্ষার পর লাইনটি একটি সম্ভাবনাময় স্বল্পকালীন লাইন হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় জাত হিসেবে মুক্তায়নের জন্য ২০১৮ সালে জাতীয় বীজ বোর্ডে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয় এবং ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে উক্ত লাইনটি বারি ছোলা-১১ নামে জাত হিসাবে অবমুক্ত হয়।

বারিছোলা-১১ (১০০ দিন বয়স) ও বারিছোলা-১১ জাতের বীজ
বারিছোলা-১১ (১০০ দিন বয়স) ও বারিছোলা-১১ জাতের বীজ

এই জাতটি আগাম হওয়ায় দেশের একটি বিশাল অঞ্চল ছোলা চাষাবাদের আওতায় আসবে এবং রবি মৌসুমের শেষের দিকে অনাকাঙ্খিত ঝড় বৃষ্টির কারণে ছোলার ফলনের যে ব্যাপক ক্ষতি হয় তা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব হবে। ফলে জাতীয় পর্যায়ে ছোলার উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

এ জাতের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে-

  • পাতা ও কান্ড হালকা সবুজ রঙের, ফুল গোলাপী রঙের।
  • বীজ উজ্জ্বল বাদামী বর্ণের এবং ১০০ বীজের ওজন ১৯.৫-২০.৫৬ গ্রাম।
  • জীবনকাল ১০০-১০৬ দিন।
  • স্বল্পমেয়াদী হওযায় ছোলার ক্ষতিকারক রোগ বট্রাইটিস গ্রে মোল্ড সহনশীল।
  • গড় ফলন- ১২৫০ – ১৫০০ কেজি/হেক্টর।
  • জাতটি আগাম হওয়ায় রবি মৌসুমের শেষের দিকে বিরূপ আবহাওয়া শুরু হওয়ার পূর্বেই ফসল সংগ্রহ করা সম্ভব।

[সূত্র: বিএআরআই]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts