(১) ফসল বীজ উৎপাদন পদ্ধতির ধাপসমূহ
বীজ উৎপাদনের সর্বমোট ধাপ কতটি: বীজ উৎপাদনের ধাপ মোট ৯টি।
ভালো মানের বীজ পেতে হলে সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে বীজ উৎপাদন করতে হয়। বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ফসল উৎপাদনের মতই ধাপসমূহ অতিক্রম করতে হয়। তবে ফসল উৎপাদন ও বীজ উৎপাদনের মধ্যে পার্থক্য হলো এই যে, বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নিম্ননিখিত প্রতিটি ধাপে বিশেষ যত্নশীল হতে হয়।
নিচে মোট ৯টি বীজ উৎপাদনের ধাপ সমূহ তুলে ধরা হলো-
১। জমি নির্বাচন: জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিষ্কাশিত উর্বর দোআঁশ মাটির সমতল জমি বীজ উৎপাদনের জন্য উত্তম। বীজ ফসলের জমির মাটি পেকামাকড়, রোগ-জীবানু ও আগাছামুক্ত হওয়া একান্ত প্রয়োজন। ভালো মানের বীজ উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট সূর্যের আলো, মাঝারী বৃষ্টিপাত ও শুষ্ক আবহাওয়া এবং পরাগায়নের সময় হালকা বাতাস প্রবাহিত হয় এ ধরনের স্থানে বীজ জমি নির্বাচন করা উচিত।
২। নিরাপদ দূরত্ব: পার্শ্ববর্তী একই ফসলের ভিন্ন জাতের সাথে পরাগায়ন ঘটে যাতে বীজ ফসল কলুষিত না হয় সে জন্য বীজ ফসলের জমির জন্য নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। যেমন- ধানের ভিত্তি বীজ ও প্রত্যায়িত বীজের জন্য নিরাপদ দূরত্ব হলো যথাক্রমে ৫ মিটার ও ৩ মিটার। কোনো কারণে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না হলে বীজ জমির চারিদিকে একই ফসলের অতিরিক্ত বর্ডার লাইন বেস্টনী করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়।
৩। বীজ নির্বাচন/সংগ্রহ: জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত মানের পরিচিত ও অনুমোদিত উৎস থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। প্রত্যায়িত বীজ উৎপাদনের জন্য ভিত্তি বীজ এবং ভিত্তি বীজ উৎপাদনের জন্য মৌল বীজ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
বীজ সংগ্রহের সময় বীজের বস্তায় বা প্যাকেটের গায়ে একটি গ্যারান্টি পত্রের ট্যাগে নিম্নোক্ত তথ্যাদি লেখা থাকে। যথা-
- জাতের নাম
- বীজ উৎপাদনকারীর নাম ও নম্বর
- অন্য জাতের বীজের শতকরা হার
- বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা
- বীজের আর্দ্রতা
- বীজ পরীক্ষার তারিখ
উপরোক্ত তথ্যাদি ক্রেতাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে।
৪। বীজ হার: নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে কী পরিমাণ বীজ লাগবে তার পরিমাণই হলো বীজ হার। বীজের বিশুদ্ধতা, অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা, সজীবতা, আকার, বপনের সময়, মাটির উর্বরতা শক্তি ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে বীজ হার নির্ধারণ করতে হয়।
৫। জমি তৈরি: জমি তৈরির ধরণ ফসলভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন- রোপা ধানের বীজ উৎপাদন করতে কর্দমাক্ত করে জমি চাষ করতে হয়। আবার গমের বেলায় শুকনো অবস্থায় ৪-৫টি চাষ দিয়ে জমি পরিপাটি করে তৈরি করতে হয়। সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন আন্তঃপরিচর্যা ফসলভেদে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
৬। বীজ বপন: সারিতে বা ছিটিয়ে উভয় পদ্ধতিতেই বীজ বপন করা হয়ে থাকে। তবে কোন ফসলের বীজ কত গভীরতায় বপন করতে হবে তা বীজের আকার, আর্দ্রতা ও মাটির ধরনের ওপর নির্ভর করে।
৭। রোগিং: বীজ বপনের সময় যত বিশুদ্ধ বীজই ব্যবহার করা হোক না কেন বীজ ফসলের জমিতে অন্য জাতের কিছু ফসল দেখা যাবে। অনাকাক্সিক্ষত এসব ফসল অপসারণ করাকেই রোগিং বলা হয়।
এই রোগিং তিন পর্যায়ে করতে হয়। যথা-
- ফুল আমার আগে
- ফুল আসার সময় ও
- পরিপক্ক পর্যায়ে।
৮। পরিচর্যা: বীজ ফসলের জমিতে পরিচর্যার প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল হতে হয়।
নিচে কয়েকটি পরিচর্যার নাম তুলে ধরা হলো-
- সুষম মাত্রায় রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ
- সেচ ও নিকাশ
- আগাছা পরিস্কার করা
- সারের উপরি প্রয়োগ
- পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন
৯। বীজ সংগ্রহ: সঠিক পরিপক্কতায় বীজ ফসল কর্তন করতে হয়। তারপর মাড়াই করে ঝেড়ে পরিস্কার করার পর শুকিয়ে সঠিক আর্দ্রতায় বীজ উপযুক্ত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হয়।
(২) আলুর বীজ উৎপাদন পদ্ধতি/কৌশল
অনেক ফসল আছে প্রকৃত বীজ দ্বারা যেগুলোর বংশ বিস্তার ঘটানো সম্ভব নয়। এসব ক্ষেত্রে অঙ্গজ পদ্ধতিতে মূল, কান্ড, পাতা শাখা ইত্যাদির দ্বারা দ্রুত ও অল্প সময়ে চারা উৎপাদন করা যায়। তাই এসব উপকরণ বংশবিস্তারক উপকরণ নামে পরিচিত।
আমাদের বাংলাদেশে ফুল ও ফলের চারা সাধারণত অঙ্গজ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। অঙ্গজ পদ্ধতিতে চারা তৈরির প্রচলন বেশি কারণ প্রকৃত বীজ দ্বারা বংশবিস্তার হলে ফুল-ফল পেতে সময় বেশি লাগে এবং মাতৃগাছের গুণাগুণ ঠিক থাকে না।
কিছু কিছু ফসলের বংশবিস্তারক উপকরণ সরাসরি রোপন করা যায়। যেমন- আলু, আদা, হলুদ, আনারস, কলা ইত্যাদি। আমরা কিছু কিছু ফসলে কলম তৈরির মাধ্যমে বংশ বিস্তারক উপকরণ তৈরি করা হয়, যেমন-লিচু লেবু, আম, জামরুল, গোলাপ ইত্যাদি।
নিচে বংশবিস্তারক উপরকণ তথা বীজ হিসেবে বীজ আলু উৎপাদনের ধাপসমূহ আলোচনা করা হলো-
১। জমি নির্বাচন ও তৈরি: বীজ আলুর ভালো ফলন পাওয়ার জন্য সুনিষ্কাশিত বেলে দোআঁশ মাটি উত্তম। সোলানেসি পরিবারে ফসল যেমন- মরিচ, টমেটো, তামাক ইত্যাদি থেকে বীজ আলু চাষের জমি কমপক্ষে ৩০ মিটার দূরে রাখা উচিত। ৫-৬ টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ভালোভাবে ঝুর ঝুরা করে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং চাষের গভীরতা কমপক্ষে ১৫ সেমি. হতে হবে। বেশি শুকনো মাটি হলে প্লাবন সেচ দিয়ে মাটিতে জো অবস্থা আসার পর আলু লাগাতে হবে।
২। বীজ শোধন: অঙ্কুর গজানোর আগে বীজ আলু বরিক পাউডার দিয়ে শোধন করে নিতে হয়। সাধারণতঃ ১ লিটার পানির মধ্যে ৩০ গ্রাম বরিক পাউডার মিশিয়ে বীজ আলু ১৫-২০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে পরে ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হয়। তবে হিমাগারে রাখার পূর্বে বীজ শোধন হয়ে থাকলে পরবর্তীতে আর শোধন করার প্রয়োজন হয় না।
৩। বীজ প্রস্তুতি: আস্ত আলু বপন করা উত্তম, কারণ আস্ত আলু রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। আলু কেটে লাগালে প্রত্যেক কাটা অংশে কমপক্ষে ২টি করে চোখ রাখতে হবে। আলু কাটার সময় রোগ জীবাণু যাতে এক বীজ থেকে অন্য বীজে না ছড়ায় সেজন্য সাবান পানি দ্বারা ছুরি বা বটি বারবার পরিষ্কার করা উচিত। বীজ আলু আড়াআড়িভাবে না কেটে লম্বালম্বিভাবে কাটতে হয়।
৪। মাটি শোধন: শেষ চাষের পূর্বে প্রতি শতাংশ জমিতে ৮০ গ্রাম স্টেবল ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে মাটি শোধন করে নিতে হয়। এতে আলুর ব্যাকটোরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগ প্রতিরোধ হয়।
৫। সার প্রয়োগ: বীজ আলু উৎপাদনের জন্য জমিতে সুষম সার প্রয়োগ করা উচিত।
এতে দুটি উপকার নিশ্চিত হয়-
- ফলন বৃদ্ধি পায় ও বীজ আলুর গুণগতমান ভালো হয় ও
- আলু গাছে ভাইরাস রোগ হলে তা সহজে চিহ্নিত করা যায়।
প্রতি শতাংশ জমিতে ৪০ কেজি পচা গোবর, ১৪০০ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫ গ্রাম বরিক পাউডার, ৫০০ গ্রাম জিপসাম ও ৫০ গ্রাম জিঙ্কসালফেট প্রয়োগ করতে হয়। শেষ চাষের সময় অর্ধেক ইউরিয়া ও অন্যান্য সারের সবটুকু জমিতে মিশিয়ে দিতে হয়। রোপনের ৩০-৩৫ দিন পর গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দেওয়ার সময় বাকী অর্ধেক ইউরিয়া প্রয়োগ করে সেচ দিতে হয়।
৬। বীজ হার: রোপন দূরত্ব ও বীজের আকারের উপর বীজহার নির্ভরশীল। প্রতি হেক্টরে সাধারণত: ১.৫ থেকে ২ টন বীজ আলু দরকার হয়।
৭। রোপনে দূরত্ব: আস্ত আলুর ক্ষেত্রে লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৬০ সে.মি ও বীজ থেকে বীজের দূরত্ব ২৫ সে.মি এবং কাটা আলুর ক্ষেত্রে লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৬০ সে.মি ও বীজ থেকে বীজের দূরত্ব ১০-১৫ সে.মি রাখা উত্তম।
৮। সেচ ব্যবস্থাপনা: মাটিতে পর্যান্ত রস না থাকলে বীজ আলুর অঙ্কুরোদগমের জন্য জমিতে হালকা সেচ দেওয়া যেতে পারে। সেচ বেশি হলে বীজ পচে যাবে। এজন্য মাটির আর্দ্রতার ওপর ভিত্তি করে ২-৪ টি সেচ দেয়া যেতে পারে। সাধারণত কেইলের (যে লাইনে চারা থাকে এবং চারার গোড়ায় মাটি উঠানো থাকে) ২/৩ ভাগ পানি দ্বারা ভিজিয়ে দিতে হয়। রোপনের ৩০-৩৫ দিন পর ইউরিয়া সার উপরে প্রয়োগ করে সেচ দিতে হয়, কারণ ৩০ দিনের মধ্যে স্টোলন বের হতে শুরু করে।
৯। আগাছা দমন: বীজ আলুর জমি রোপনের পর থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত আগাছামুক্ত রাখতে হবে। এছাড়া ভাইরাস রোগের বিকল্প বাহক হিসেবে কাজ করে। যেমন- বথুয়া জাতের আগাছা অবশ্যই নির্মুল করতে হবে।
১০। মাটি তুলে দেওয়া: ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করে সেচ দেওয়ার পর মাটিতে জো অবস্থা আসলে ভেলি বরাবর মাটি তুলে উঠিয়ে দিতে হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজনে আরও একবার এমনভাবে ভেলি বরাবর মাটি তুলে দিতে হয় যাতে আলু ও স্টোলন মাটির ভিতরে থাকে।
১১। রোগিং: রোগাক্রান্ত গাছ শিকড়সহ তুলে নিয়ে পুড়ে ফেলাকে রোগিং বলে। এ কাজ অঙ্কুরোদগমের পর থেকেই শুরু করতে হবে।
১২। পোকা ও রোগ দমন: বিভিন্ন পোকা ও রোগ বঅজ আলু উৎপাদনে ক্ষতি করে থাকা। তাই এগুলো দমনে যথযিথ ব্যবস্থা নিতে হয়।
যেমন-
- কাটুই পোকা: এ পোকার লার্ভা আলু ফসলের মারাত্মক ক্ষতি করে। এরা দিনে লুকিয়ে থাকে এবং রাতে গাছের গোড়া কেটে দেয় ও পরে আলু আক্রমণ করে। সকালে যে সব গাছের গোড়া কাটা পাওয়া যাবে সেখানকার মাটি সরিয়ে কাটুই পোকার লার্ভা বের করে মেরে ফেলতে হবে। আক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করলে অনুমোদিত মাত্রার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
- জাব পোকা: জাব পোকা পূর্ণ বয়স্ক অবস্থায় আলু গাছের কচি অংশ থেকে রস খায় এবং ভাইরাস রোগ ছড়ায়। এতে ফলন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আলু গাছে পাতা গজানোর পর ৭-১০ দিন পর পর এ পোকা দমনের জন্য অনুমোদিত মাত্রার কীটনাশক প্রয়োগ করা উচিত।
- আলুর রোগ: আলু ফসলে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। এর মধ্যে লেইট ব্লাইট, ঢলে পড়া, দাঁদ, কান্ড পচা ও ভাইরাসজনিত রোগ অন্যতম। নিম্ন তাপমাত্রা, কুযাশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও মেঘলা আকাশের কারণে আলুর রোগ বেশি হয়। আলু ফসলকে এ সমস্ত রোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য অনুমোদিত মাত্রার কন্টাক্ট ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
১৩। ফসল সংগ্রহ ও পরিচর্যা: আধুনিক জাতের আলুতে পরিপক্কতা আসতে ৮৫-৯০ দিন সময় লেগে যায়। বীজ আলু সংগ্রহের কমপক্ষে ১০ দিন পূর্বে সেচ দেয়া বন্ধ করতে হবে।
বীজ আলু সংগ্রহ ও পরিচর্যার কয়েকটি দিক নিচে তুলে ধরা হলো-
- হাম পুলিং: মাটির উপরে আলু গাছের সম্পূর্ণ অংশ উপড়ে ফেলাকে হাম পুলিং বলে। এ কাজ আলু সংগ্রহের ৭-১০ দিন আগে করতে হয়। এতে পুরো শিকড়সহ গাছ উপরে আসবে কিন্তু আলু মাটির নিচে থেকে যাবে। এর ফলে আলুর ত্বক শক্ত হয়, রোগাক্রান্ত গাছ থেকে রোগের বিস্তার কম হয় ও আলুর সংরক্ষণগুণ বৃদ্ধি পায়। উল্লেখ্য বীজ আলুতে হাম পুলিং অবশ্যই করতে হবে, কিন্তু খাবার আলুর বেলায় এটা জরুরী নয়।
- আলু উত্তোলন: আলু উত্তোলনের পর কোনক্রমেই ক্ষেতে স্তুপাকারে রাখা উচিত নয়। কারণ স্তুপকার খোলা আলু বিভিন্ন প্রকার রোগ ও পোকা দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। যেমন- সুতলি পোকা ডিম পাড়তে পারে। এজন্য আলু তোলার পরপরই ক্ষেতে থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা উত্তম।
- আলু সংরক্ষণ: আলু ক্ষেত থেকে বাড়িতে আনার পর কাটা, দাগি ও পচা আলুগুলো বাছাই করতে হবে। এরপর বাছাই করা ভালো আলু ৭-১০ দিন মেঝেতে বিছিয়ে রাখতে হবে। তারপর আবারও দাগি ও পচা আলুগুলো বেছে বাদ দিয়ে ভালো আলু বস্তায় ভরে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রিয় পাঠক বন্ধু, উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা ফসল বীজ উৎপাদনের সর্বমোট ধাপ কতটি ও কি কি এবং আলুর বীজ উৎপাদন পদ্ধতি/কৌশল সম্পর্কে জানতে পারলাম।
উপরে উল্লিখিত বীজ আলু উৎপাদন ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আছে যা নিচে উল্লেখ করা হলো-
- টিস্যু কালচার পদ্ধতি
- স্প্রাউট ও টপ শুট কাটিং পদ্ধতি
- বিনাচাষে বীজ আলু উৎপাদন
- আলুর প্রকৃত বীজ উৎপাদন
ফসল বীজ ও বংশবিস্তারক উপরকণ উৎপাদনে বেশ যত্মশীল হতে হয়। যথাযথ নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে বীজ উৎপাদন করতে হয়। ফসল বীজ উৎপাদনে যেমন বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয় তেমনি বংশবিস্তারক উপকরণ তৈরিতেও বেশে কিছু ধাপ পাড়ি দিতে হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সঠিক জমি নির্বাচন, জমি তৈরি, বীজ হার নির্ধারণ, বপন পদ্ধতি, সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন আন্ত: পরিচর্যা যথানিয়মে অনুসরণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
তবে প্রকৃত বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটালে ফলন পেতে সময় বেশি লাগে ও মাতৃগাছের গুণাগুণ অক্ষুন্ন থাকে না। এক্ষেত্রে অঙ্গজ পদ্ধতিতে বংশবিস্তার ঘটানোই শ্রেয়। এতে প্রতি একক জমিতে বেশি সংখ্যক গাছ রোপন করা যায়। পাশাপাশি দ্রুত ফলন পাওয়া যায়।
কিছু কিছু ফসল আছে যাদের ক্ষেত্রে প্রকৃত বীজ ছাড়া বংশবিস্তার ঘটানো সম্ভব নয়, যেমন- ধান, পাট, গম ইত্যাদি।
[সূত্র: ওপেন স্কুল]