নিম্নে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল চেনার উপায় বা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো-
১। ব্র্যাক বেঙ্গল ছাগলের দেহ সাধারণতঃ খাটো। উচ্চতা ১৬-২০ ইঞ্চি |
২। এদের দেহ নাম কালো লোম দ্বারা আবৃত। তবে খয়েরী বা সাদা বা এদের মিশ্রিত রংএর ছাগলও দেখা যায়।
৩। এদের কান ছোট, খাড়া ও ভূমির সমান্তরাল।
৪। এদের শিং ছোট, খাঁড়া ও কালো।
৫। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের গড় দৈহিক ওজন ২০-৩০ কেজি | পাঠার ওজন ২৫-৪০ কেজি এবং ছাগীর ওজন ১৫-২৫ কেজি।
৬। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের শারীরিক বৃদ্ধি অতি অল্প সময়ে ঘটে। ৭-৮ মাস বয়সে এরা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। ১৩-১৪ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয় | বছরে এরা কমপক্ষে দুইবার বাচ্চা দেয় |
৭। এ জাতের ছাগল প্রতিবার ২-৪ টি বাচ্চা জন্ম দেয়।
৮। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগীর ওলান ছোট |
৯। ল্যাকটেশন পিরিয়ডে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগী গড়ে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ মি.লি- দুধ দেয় যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছাগলছানার চাহিদা পূরণ করতে পারে না।
১০। ব্লাক বেঙ্গল খাসীর মাংস অত্যান্ত সুস্বাদু ৷ একটি ২০ কেজি ওজনের খাসী হতে গড়ে ১২ কেজি ভক্ষণযোগ্য মাংস পাওয়া যায়।
১১। ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের চামড়া অতি উন্নত মানের বিধায় বিশ্বব্যাপী এর কদর রয়েছে।
১২। একটি২০ কেজি ওজনের ছাগল হতে গড়ে ১.২-১.৪ কেজি চামড়া পাওয়া যায়।
১৩। ছাগলের দুধ খুবই পুষ্টিকর এবং এলার্জি উপসর্গ উপশমকারী।
১৪। ব্ল্যাক বেঙ্গলের গোশত সুস্বাদু ও চামড়া আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত।
১৫। অধিক বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এবং দেশীয় জলবায়ুতে বিশেষভাবে উৎপাদন উপযোগী।
১৬। দ্রুত বংশ বৃদ্ধি ঘটে বলে অল্প সময়ে সুফল পাওয়া যায়।
১৭। এদের গড় ওজন ১৫-২০ কেজি। কখনও কখনও ৩০-৩২ কেজি পর্যন্ত হয়। দৈনিক ওজন বৃদ্ধির হার দৈনিক ২০-৪০ গ্রাম।
১৮। পৃথিবীতে এই মূহুর্তে প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উপায়ে মডিফায়েড মিলে প্রায় ৩০০’র মত জাতের ছাগল আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের স্থানীয় জাতের কালো ছাগল বা ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটকে অন্যতম সেরা জাতের ছাগল বলা হয়। ২০০৭ সালে এফএও বিশ্বের ১০০টি জাতের ছাগলের ওপরে গবেষণা চালিয়ে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’কে বিশ্বের অন্যতম সেরা জাত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৯। এই ছাগলের গায়ের রং মূলত কুচকুচে কালো।
২০। মাংস এবং চামড়ার গুনগত মানের জন্য এ জাতের ছাগলকে উৎকৃষ্ট মানের বলা হয়। এছাড়া এটি পালন সহজ এবং পালন করার জন্য বড় কোন জায়গার দরকার হয় না।
২১। সংখ্যার দিক থেকে ছাগল উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ এবং ছাগলের মাংস উৎপাদনে পঞ্চম।
২২। এছাড়া এ জাতের ছাগলের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক কম, এবং ছাগলের বাচ্চার মৃত্যু হারও কম, যেটি এই জাতের ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি ও জনপ্রিয়তার আরেকটি বড় কারণ।”
২৩। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর গড়ে ২ কোটি ২০ লাখ ছাগল উৎপাদন হয়, যার ৯৫ শতাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল।
২৪। ব্ল্যাক বেঙ্গল বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ওড়িশা অঞ্চলের পাওয়া ছাগলের একটি জাত। ছাগলের প্রজাতিটির অধিকাংশ কালো হলেও বাদামী, ধূসর এবং সাদা বর্ণের ছাগলও রয়েছে।
২৫। আফ্রিকার মাসাই ছাগল, ভারতের যমুনাপাড়ি ছাগল এবং চীনা জাতের ছাগল ব্ল্যাক বেঙ্গলের তুলনায় বেশি পরিমাণে দুধ ও মাংস উৎপাদন ৪০-৬০% এর বেশি উৎপাদন করতে পারলেও ২০-৩৫ শতাংশ ছাগল জন্মের সময় মারা যায়, যেখানে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মৃত্যুর হার মাত্র ৫-১০ শতাংশ। তাই এর প্রজনন বেশি ঘটে এবং এই কারণেই বিজ্ঞানীরা এই প্রজাতির ছাগলকে সামগ্রিক উৎপাদনশীলতার বিচারে সেরা হিসেবে নির্বাচিত করেন। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ১৪ মাসে দুইবার বাচ্চা প্রসব করে এবং প্রতিবার ১-৫টি করে বাচ্চা দিতে পারে।
[সূত্র: খামারিয়ান.কম]