Skip to content

সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য? সাইলেজ তৈরির নিয়ম ও অন্যান্য

সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য, সাইলেজ তৈরির নিয়ম ও অন্যান্য বিষয়

নিম্নে সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য? সাইলেজ তৈরির নিয়ম ও সাইলেজ সম্পর্কে অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

(১) সাইলেজ কাকে বলে?

সাইলেজ কাকে বলে

সাইলেজ কাকে বলে: সবুজ ও সতেজ ঘাসকে কেটে টুকরা টুকরা করে কেটে সেগুলো বায়ুরোধী অবস্থায় সংরক্ষণ করালে, উক্ত সংরক্ষিত ঘাসকে সাইলেজ বলে।

গম, ভুট্টা, আলফা-আলফা, সরগম, নেপিয়ার সহ বিভিন্ন জাতের ঘাস, বিভিন্ন গাছেট পাতা, কলাগাছ ইত্যাদি থেকে ভালো মানের সাইলেজ তৈরি করা যায়।

খামারিদের মাঝে ভুট্টার সাইলেজ সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও জনপ্রিয় হিসেবে বিবেচ্য।

বর্তমানে এই সাইলেজ তৈরির নিয়ম অনুসরণের মাধ্যমে কাঁচা ঘাস বা খড়ের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করা হয় এরং সারা বছরের ঘাসের চাহিদা পুরন করা সম্ভব হয়।

(২) সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য?

সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য

সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য: সাইলেজ হলো বিশেষ পক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় যাবৎ সংরক্ষিত কাঁচা ঘাস, যা গবাদ পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

সাইলেজ একটি ইংরেজি শব্দ। সাইলেজ শব্দের দ্বারা সবুজ ঘাসের পুষ্টিমান অক্ষুন্ন রেখে একটি বায়ু নিরোধক উপায়ে সংরক্ষিত সবুজ ঘাসকে বুঝায়। সাধারণত সব ধরনের সবুজ ঘাসই সাইলেজ তৈরি করে সংরক্ষণ করে করা যায়।

কোন পলিথিনের বস্তায় বা প্লাস্টিকের ড্রামে অথাবা মাটিতে গর্ত করে, বায়ু মুক্ত অবস্থায়, কাঁচা ঘাসকে দীর্ঘ সময় ধারে সংরক্ষণ করলে, উক্ত সংরক্ষিত ঘাসই হলো সাইলেজ।

সংরক্ষণের ২১ দিন পর থেকে যে কোন সময় সংরক্ষিত সাইলেজ তুলে সরাসরি বা শুকনো খড়ের সাথে মিশিয়ে গরুকে খাওয়ানো যায়। সঠিকভাবে সাইলেজ তৈরির নিয়ম অনুসরণ করলে করলে সাইলেজকে ১২ অবধি সংরক্ষণ করে রাখা যায় এবং কাঁচা ঘাসের বিকল্প হিসেবে পশুকে খাওয়ানো যায়।

অনেক ক্ষেত্রে কাঁচা ঘাসের তুলনায় সাইলেজ এর পুষ্টিমান বেশি থাকে, কারণ এতে আরও অন্যন্য কিছু উপাদায় যুক্ত করা হয়। যেমন- বিভিন্ন সবজির খোসা, চিটাগুড় প্রভৃতি। বর্তমান সময়ে সাইলেজ ও সাইলেজ তৈরির নিয়ম নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে।

(৩) সাইলেজ ব্যবহারের সুবিধা কি?

সাইলেজ ব্যবহারের সুবিধা কি

সাইলেজ ব্যবহারের সুবিধা হলো-

  • সবচেয়ে বড় সুবিধা সারা বছর গরুকে কম মুল্যে কাচা ঘাসের বিকল্প হিসাবে সারা বছর একইভাবে সরবরাহ করা যায়।
  • কাঁচা ঘাস বা খড়ের পুষ্টিগুণ বুদ্ধি করা যায়।
  • দীর্ঘ দিন পুষ্টিমান অক্ষুন্ন থাকে।
  • সঠিক সময়ে ঘাস কেটে সেগুলো কার্যকরী খাবার হিসাবে গবাদি পশুকে সরবরাহ করা হয়।
  • এতে হে এর তুলনায় কম পুষ্টিমান অপচয় হয়।
  • সাইলেজ তৈরির ফলে ঘাসের জমির সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার করা যায়।
  • সাইলেজ ঠান্ডা ও আদ্র আবহাওয়াতেও তৈরি করা যায়।
  • উৎপাদনে খুব একটা ঝামেলা হয় না।

(৪) কাঁচা ঘাসের সাইলেজ তৈরির নিয়ম

মাটিতে গর্ত করে সাইলো তৈরি করে কাঁচা ঘাসের সাইলেজ প্রস্তুতকরণ
কাঁচা ঘাসের সাইলেজ তৈরির নিয়ম

বর্ষা মৌসুমের সবুজ ঘাসে প্রচুর পরিমাণে জলীয়াংশ বা পানি থাকে। এ ধরনের ঘাসে তেমন ভাল হয় না। এ সকল সবুজ ঘাস বা কলাগাছ-কুচির সঙ্গে শতকরা ১৫-২০ ভাগ শুকনো খড়ের স্তর দিতে হবে। এতে গুণাগুণ ভাল থাকবে এবং সাইলেজের নির্যাস চুইয়ে খড়ের খাদ্যমানও বৃদ্ধি করবে।

ক) মাটির গর্ত তৈরি

কাঁচা ঘাসের সাইলেজ তৈরির নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে ঘাসের পরিমানের উপর নির্ভর করে একটি গর্ত খুরতে হবে। গর্তটি অবশ্যই উঁচু জায়গায় (যেখানে পানি ঢুকতে না পারে) হতে হবে। গর্তের গভীরতা ৩ ফুট, প্রস্থের তলায় ৩ ফুট, মাঝে ৮ ফুট ও উপরে ১০ ফুট হবে। দৈর্ঘ্যের মাপ নির্ভর করবে ঘাসের পরিমাণের উপর। গর্তটির তলা পাতিলের মত সমভাবে বক্র থাকলে ঘাস চাপানো সহজ হবে।

See also  সাইলেজ কি? সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য? সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি ও সাইলেজ তৈরিতে সাবধানতা

খ) পলিথিন ছড়ানো

মাটির সাইলোর চারদিকে পলিথিন মুড়ে করলে অবশ্যই নিশ্চিন্তে থাকা যায়। দুই পরতা পলিথিন একদিকে বায়ুরোধী করে অন্যদিকে এর ময়েশ্চার বা জলীয়অংশ ঠিক রাখে। দুই গজ চওড়া ডাবল পলিথিনের ৮–৯ গজ হলেই ২০ ফুটের একটি সাইলো পিটের শুধু উপরের দিক বন্ধ করা যায়।

গ) সাইলেজ তৈরি

ধাপে ধাপে নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে খুব সহজেই ভালো মানের কাঁচা ঘাসের সাইলেজ তৈরি করা সম্ভব। যথা-

  1. প্রথমে সবুজ ঘাসের শতকরা ৩-৪ ভাগ চিটগুড় মেপে একটি পাত্রে নিতে হবে। ঘন চিটাগুড়ের মধ্যে ১ঃ১ অথবা ৪ঃ৩ পরিমানে পানি মেশালে তবে ঘাসের উপর ছিটানো উপযোগী হবে।
  2. এরপর পরতে পরতে সবুজ ঘাস এবং শুকনো খড় দিতে হবে। প্রতি পরতে ৩০০ কেজি সবুজ ঘাস এবং ১৫ কেজি শুকনো খড় দিতে হবে।
  3. ৩০০ কেজি ঘাসের পরতে পূর্বের হিসাবে চিটাগুড় ও পানির মিশ্রণ ঝরনা বা হাত দিয়ে সমভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। খড়ের মধ্যে কোন চিটাগুড় দিতে হবে না।
  4. এভাবে পরতে পরতে ঘাস ও খড় আলাদা সাজাতে হবে। যত এঁটে ঘাস সাজানো হবে তত ভালো মানের তৈরী হবে।
  5. এভাবে সাইলো ভর্তি করে মাটির উপরে ৪-৫ ফুট পর্যন্ত ঘাস সাজাতে হবে। ঘাস সাজানো শেষ হলে খড় দ্বারা পুরু করে আস্তরন দিয়ে সুন্দর করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
  6. সর্বশেষে ৩-৪ ইঞ্চি পুরু করে সমানভাবে সাইলোর উপরে মাটি দিতে হবে।
  7. ২১ দিন পর থেকে এই সাইলেজ পশুকে খাওয়ানের উপযোগী হবে।

ঘ) সাবধানতা

সাইলেজ তৈরির নিয়ম অনুসারে নিম্নোক্ত সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। যথা-

  • পানি জমে না এমন উঁচু স্থানে সাইলো বানাতে হবে। তা নাহলে পানি জমে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • উপরের পলিথিন খুব ভালো ভাবে এঁটে দিতে হবে এতে কোন পানি সাইলোর মধ্যে ঢুকবে না।
  • চিটাগুড় ও পানির এমনভাবে দ্রবন তৈরী করতে হবে যাতে আঠার মত ঘাসের গায়ে লেগে থাকে।
  • ঘাস এবং খড় স্তরে স্তরে সাজাতে হবে এবং ফাঁকা জায়গাগুলো যথাসম্ভব বন্ধ করতে হবে।
  • ঘাসের সাথে খুব বেশী পানি থাকালে ভালো মানের হবে না।

(৫) ভুট্টার সাইলেজ তৈরির নিয়ম

মাটির উপরে বাংকার তৈরি করে ভুট্টার সাইলেজ তৈরি
মাটিতে গর্ত করে ভুট্টার সাইলেজ তৈরি
প্লাস্টিক ব্যাগে ভুট্টার সাইলেজ তৈরি

বিভিন্ন ধরনের ঘাস ও লতা-পাতা দিয়ে এটি তৈরি করা গেলেও ভুট্টা ও আলফা-আলফা দিয়ে তৈরি সাইলেজ অত্যন্ত উন্নত মানের হয়। এটি গবাদি পশু বিশেষ করে দুধাল গাভীর জন্য অত্যান্ত উপকারী। এই সংরক্ষিত ঘাসে বেশি পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে।

সবুজ ঘাসের মধ্যে সবচেয়ে ভালো সাইলেজ হয় ভুট্টার। কারণ এই সাইলেজে কাণ্ড, পাতার সঙ্গে ভুট্টাও থাকে, যার ফলে দানাদার খাদ্যের চাহিদাও পূরণ হয়। এ জন্য আধা কাঁচা ভুট্টা থাকার সময় সংগ্রহ করা ভালো।

এখানে ভুট্টার সাইলেজ তৈরির নিয়ম বর্ণনা করা হলো-

  1. ভুট্টার গাছের গোড়ার কালো দাগ আসার সাথে সাথে ভুট্টা কাটার উপযোগী হয়। এসময় ভুট্টা গাছে নরম মোচা থাকে এবং এ সময়ে ভুট্টা গাছের শুষ্ক পর্দাথের পরিমাণ ৩০-৩৫% হয়।
  2. সাইলেজ তৈরির জন্য ভুট্টা কাটার উপযুক্ত অবস্থা হলো- ভুট্টা মিল্কিং স্টেজে আসলে তাকে হারভেষ্ট করে এবং সাইলেজ তৈরির নিয়ম অনুযায়ী সাইলেজ তৈরি করতে হবে। এ সময় ভুট্টাকে চাপ দিয়ে সাদা দুধের মত তরল বের হবে।
  3. ভুট্টা গাছগুলোকে জমি থেকে ৫-৬ ইঞ্চি উঁচুতে কাটা হবে। এরপর কচি ভুট্টা, ভুট্টার পাতা, ডালা অর্থ্যাৎ গোড়ার ৫-৬ ইঞ্চি বাদ দিয়ে পুরো ভুট্টা গাছ কেটে টুকরা টুকরা করতে হবে। টুকরাগেুলোর আকার আধা ইঞ্চি থেকে সর্বোচ্চ এক ইঞ্চি করা যেতে পারে।
  4. ঘাসগুলোকে এক দিন রোদে শুকিয়ে নিতে হবে, যেন ভেজা ভাবটা না থাকে।
  5. টুকরা করা ভুট্টা গাছ গর্তে বায়ুরোধী অবস্থায় রেখে র্দীঘদিন সংরক্ষন করতে হবে। সংরক্ষণের জন্য সাইলো বা পাত্র ঠিক করতে হবে। এ জন্য স্টিক ব্যাগ বা বস্তা ও ড্রাম ব্যবহার করা যায়। তা ছাড়া মাটিতে পুঁতেও সংরক্ষণ করা যায়।
  6. ফার্মেন্টেশন বা গাঁজন প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করার জন্য চিনিজাতীয় উপাদান যুক্ত করতে হবে। এ জন্য লালিগুড় বা মোলাসেস ব্যবহার করা যেতে পারে। তা ছাড়া লাল চিনিও ব্যবহার করা যায়। শতকরা ৩-৪ ভাগ চিটাগুড় মেপে একটি চারিতে নিতে হবে। তারপর ঘন চিটাগুড়ের মধ্যে ১ঃ১ অথবা ৪ঃ৩ পরিমাণে পানি মিশালে এটি ঘাসের ওপর ছিটানো উপযোগী হবে। ঝরনা বা হাত দ্বারা ছিটিয়ে এ মিশ্রণ ঘাসে সমভাবে মিশাতে হবে।
  7. স্টিক ব্যাগ বা ড্রামে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যাগটি যেন কোনো রকম ছেঁড়া না হয়। প্রথমে মোলাসেস এবং পানিমিশ্রিত দ্রবণের অর্ধেক পরিমাণ ঘাসে প্রয়োগ করতে হবে। তারপর সেই ঘাস ব্যাগ বা ড্রামে কয়েক ধাপে ভরতে হবে। এক ধাপ ভরার পর ভালোভাবে চাপ দিতে হবে, যেন ঘাসগুলোর মাঝে ফাঁকা না থাকে। ফাঁকা থাকলে সেখানে বাতাস থেকে যাবে, যার ফলে সাইলেজ ভালো না হওয়ার কারণে বেশি দিন ঠিক থাকবে না। তারপর মোলাসেস মিশ্রিত পানি আবার খানিকটা প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে কয়েক ধাপে ব্যাগ কিংবা ড্রামে ভালোভাবে ভরতে হবে। ভেকুুম মেশিন ব্যবহার করে পলিথিন ব্যাগের সকল বাতাস নিমিষিই বের করে নেওয়া যায়। এরপর শক্তভাবে মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে যেন বাতাস প্রবেশ না করতে পারে। ব্যাস ২১ দিন পর এই সাইলেজ পশুকে খাওয়ানোর পর প্রস্তুত হয়ে যাবে।
  8. মাটিতে পুঁতেও সাইলেজ করা যায়। এ জন্য উঁচু স্থান নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় পরিমাণ গর্ত করে। সাইলোর বা গর্তের তলায় পলিথিন দিলে আগে তা বিছিয়ে নিতে হবে। পলিথিন না দিলে পুরু করে খড় বিছাতে হবে। এরপর গর্তে চার-পাশে পলিথিন না দিলে ঘাস সাজানোর সঙ্গে সঙ্গে খড়ের আস্তরণ দিতে হবে। প্রতি স্তরে স্তরে ৩০০ কেজি ভুট্টা কুচি এবং ১৫ কেজি শুকনো খড় দিতে হবে। কয়েক ধাপে সমপরিমাণে মোলাসেস এবং পানিমিশ্রিত ঘাস পা দিয়ে ভালোভাবে চাপ দিয়ে কমপেক্ট করতে হবে। গর্তা পূর্রণ হয়ে গেলে শেষে উপরে আবার ডাবল করে পলিথিন দিয়ে শক্ত করে বেঁধে মাটি চাপা দিতে হবে।
  9. উক্ত প্রক্রিয়াটি ১-২ দিনের মাঝে শেষ করতে হবে। সাইলেজ আরও পুষ্টিসমৃদ্ধ করার জন্য অব্যবহৃত কলা, কলার খোসা, মিষ্টি আলু, আখের খোসা ও যুক্ত করা যায়।
  10. ভালোভাবে সাইলেজ তৈরি ও বায়ু মুক্ত অবস্থায় করলে সংরক্ষণ সর্বোচ্চ ১০-১২ বছর সংরক্ষণ করা যায় এবং পুষ্টিগুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে।
See also  সাইলেজ ও হে তৈরির পদ্ধতির ব্যবহার করে ঘাস সংরক্ষণ

(৬) সাইলেজকে সম্পর্ণ বাতাস মুক্তভাবে সংরক্ষণ করার কারণ কি?

সাইলেজকে সম্পর্ণ বাতাস মুক্তভাবে সংরক্ষণ করার কারণ কি
আধুনিক সাইলেজ তৈরির নিয়ম মেনে মাটিতে গর্ত করে তৈরি করা সাইলো পিট

সাইলেজ তৈরি পদ্ধতিতে ঘাস টুকরা-টুকরা করে কাাটা ও বায়ুরোধী করার উদ্দেশ্য গুলো হলো-

  • ঘাস কে কুচ কুচি করে কাটলে করলে গাজনের জন্য বেশি পরিমাণে গাছের সুগার অবমুক্ত হতে পারে ।
  • সঠিক নিয়মে বায়ুরোধী হলে সুষ্ঠুভাবে গাঁজন সম্পাদনের ফলে প্রয়োজনীয় ল্যাকটিক এসিড তৈরি হয়।
  • কোনো খাদ্য উপাদানের অপচয় হয় না।
  • সাইলেজ বাতাস মুক্ত পরিবেশে থাকলে এর পুষ্টি উপাদানের পরিমান অক্ষুন্ন থাকে। এবং ক্ষতিকর ইস্ট, মোল্ড, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ থেকে র্দীঘদিন রক্ষা করা যায়।
  • সাইলেজ বাতাস মুক্ত পরিবেশে থাকলে এটি পঁচে না।

(৭) ভালো মানের সাইলেজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি?

ভালো মানের সাইলেজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি

ভালো মানের সাইলেজ তৈরি করতে না পারলে লাভের পরিবর্তে ক্ষতির পরিমান বেশি হবে। এতে গবাদিপশু অসুস্থ হওয়া থেকে শুরু করে নানান ধরনের সমন্যা তৈরি হয়। ভালো মান বিবেচনায় রাখতে হবে।

একটি ভালো সাইলেজের বৈশিষ্ট্য হলো-

  • ড্রাই-মেটার ৩০%-৩৫% হতে হবে।
  • ময়েশ্চার কন্টেন্ট ৬৫%-৭০% হতে হবে।
  • ফাইনাল Ph লেভেল ৩.৭-৪.৭ হতে হবে।
  • কালার গোল্ডেন ব্রাউন হবে। অন্তত একটা ব্রাউনিশ ভাব থাকবে।
  • মুঠো করে চেপে ধরে ছেড়ে দিলে হাতে দুই চারটা টুকরা লেগে থাকলে বুঝবেন মান ভালো।
  • বেশী টুকরা হাতে লেগে থাকলে বুঝবেন ময়েশ্চার কন্টেন্ট বেশী এবং ড্রাই মেটার কম। আর তার মানে ভালো মানের নয়।
  • মিষ্টি ফারমেন্টেশনের গন্ধটা উপস্থিত থাকতে হবে।
  • কর্ণ সাইলেজে মিল্কিং কর্ণের টুকরা যথেষ্ট পরিমানে মিশ্রিত থাকতে হবে।

(৮) গরুকে সাইলেজ খাওয়ানোর নিয়ম

গরুকে সাইলেজ খাওয়ানোর নিয়ম

সাইলেজ স্বভাবিক ঘাসের মতোই সকল গবাদি পশুকে সাইলেজ খাওয়ানো যায়। সাইলেজ সবুজ ঘাসের চাহিদা পূরণ করে। সব বয়সের প্রাণীকে সহজে খাওয়ানো যায়। তবে ৬ মাসের কম বয়সের বাছুর কে সাইলেজ খাওয়ানো যাবে না, কারণ তখনই তাদের পাকস্থলি সাইলেজ হজম করার মত উপযুক্ত হয়না।

See also  সাইলেজ কি? সাইলেজ তৈরির পদ্ধতি বা কাঁচা ঘাস সংরক্ষণের পদ্ধতি

অল্প করে অভ্যাস করিয়ে বেশি করে খাওয়ানো যায়। এভাবে সংরক্ষিত সাইলেজ ঘাস প্রতি ১০০ কেজি দৈহিক ওজনের একটি গরুুর জন্য ১০ কেজি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়েও এটি খাওয়ানো যায়।

প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা সাইলেজ কাকে বলে? সাইলেজ কোন ধরনের খাদ্য? সাইলেজ ব্যবহারের সুবিধা কি? কাঁচা ঘাসের সাইলেজ তৈরির নিয়ম; ভুট্টার সাইলেজ তৈরির নিয়ম; সাইলেজকে সম্পর্ণ বাতাস মুক্তভাবে সংরক্ষণ করার কারণ কি? ভালো মানের সাইলেজের বৈশিষ্ট্যগুলো কি? পশুকে সাইলেজ খাওয়ানোর নিয়ম প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানতে পালাম।

সাইলেজ গরুর কাছে খুবই প্রিয় খাদ্য। এটি সহজে হজম হয়। এটি পুষ্টিকর এটি খেলে গরুর স্বাস্থ্য, ঘুম ভলো হয়, দুধ ও মাংস উৎপাদন বাড়ে। এটি কা*চা ঘাস সংরক্ষণের উত্তম পদ্ধতি।

তবে বৈজ্ঞানিক উপায়, সঠিক সাইলেজ তৈরির নিয়ম মেনে সাইলেজ তৈরি ও যত্নের তা সংরক্ষণ করতে হবে। নতুবা মানসম্মত সাইলেজ তৈরি হবে না, সাইলেজ পশু খেতে চাইবে না, পঁচে যাবে, বাজে গন্ধ করবে, স্বাব নষ্ট হয়ে যাবে, পুষ্টি মান ঠিক থাকবে না ইত্যাদি উত্যাদি।

নষ্ট হয়ে যাওয়া সাইলেজ

সঠিকভাবে সাইলেজ তৈরির নিয়ম নীতি ভালোভাবে জেনে নিয়ে, মান সম্মত সাইলে তৈরি করা অভিঙ্গতা অর্জ করে, পশুকে পরিচর্যার পাশাপাশি নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ সাইলেজ খাওয়ানো হলে গরুর মাংস উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত ঠিকাদান, কৃমিমুক্ত রাখা এবং দানাদার খাবারের সঙ্গে সাইলেজ খাওয়ানোর ফলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

সাইলেজের পুষ্টি এবং উপকারিতা জেনে খামারিরা নিজেরা এটি উৎপাদনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া দেশের কিছু কোম্পানি আধুনিক নিয়মে সাইলেজ উৎপাদন করে খামারিদের প্রয়োজনে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করছে। সাইলেজ অন্য খাবারের তুলনায় অনেকটা সাশ্রয়ী, বিশেষ করে শুকনো খড় খাওয়ানোর চেয়ে সাইলেজ খাওয়ানো অনেক ভালো এবং খামারিরা এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লাভবান হচ্ছে।

[সূত্র: মিশকাত বিডি ও ডাঃ মোঃ শাহীন মিয়া]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts