(১) মুরগির রোগ ও প্রতিকার
ক) রানীক্ষেত
টিকা দেওয়া হয় নাই এ রকম মুরগির ঝাঁকে ১০০ ভাগ মুরগিই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে এবং ১০-৯০ ভাগ মুরগি মারা যেতে পারে।
লক্ষণ: ঝিমানো, সবুজ পাতলা পায়খানা, মুখ দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া, ঘড়ঘড় শব্দ করা।
চিকিৎসা: আক্রান্ত খামারে টিকা দেওয়া থাকলে মৃত্যুর হার কম থাকে। এ ধরনের খামারে অ্যান্টিবায়োটিক পানিতে মিশিয়ে ৩-৫ দিন মুরগিকে খাওয়াতে হবে মুরগির ধকল থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়ায় জন্য ভিটামিনজাতীয় ওষুধে ভালো ফল পাওয়া যায়।
প্রতিরোধ: খামারের টিকা দিয়ে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
খ) এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা এভিয়ান ফ্লু বা বার্ড ফ্লু
এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি উচ্চ সংক্রমণশীল ভাইরাসজনিত মুরগিজাতীর পাখির রোগ এবং পূর্বে রোগটিকে ‘ফাউল প্লেগ’ও বলা হতো। বাংলাদেশে ২০০৭ সালের মার্চ মাসে প্রথম এ রোগ শনাক্ত করা হয়।
লক্ষণ:
- ডিমপাড়া মুরগি সর্বপ্রথম নরম খোসাবিশিষ্ট ডিম পাড়ে, কিন্তু এরপর হঠাৎ ডিম পাড়া বন্ধ করে দেয়।
- খুঁটি এবং গলকম্বল নীলাভ রং ধারণ করে এবং অর্থভাগে ছোট ছোট অথবা বড় ধরনের রক্তক্ষরণের চিহ্ন দেখা যায়।
- মাথা ফুলে যায় এবং পানি জমে থাকতে পারে।
- পালকবিহীন স্থানে রক্তক্ষরণ দৃশ্যমান হয় এবং ক্ষেত্র বিশেষে ৫০-১০০ ভাগ মৃত্যুহার দেখা যায়।
চিকিৎসা: এ রোগের কোনো ফলপ্রসূ চিকিৎসা নাই।
প্রতিরোধ: এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগ নিয়ন্ত্রণে যে সকল পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী ব্যবহার হয়ে আসছে তা হলো-
- দ্রুত রোগ শনাক্ত করা এবং দ্রুত আক্রান্ত মুরগি নির্মূল করা
- আক্রান্ত খামার জীবাণুমুক্ত করা ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা
- ভ্যাকসিন প্রদান করা।
গ) গামবোরো
গামবোরো ভাইরাসজনিত একটি ছোঁয়াচে রোগ। গামবোরো রোগ সাধারণত ৩-৬ সপ্তাহের মুরগির বাচ্চার তীব্র আকারে দেখা নেয়।
লক্ষণ:
- মুরগির পালক উসকো-খুসকো থাকে।
- মুরগির মধ্যে বিমানো ভাব দেখা যায় এবং তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং কাঁপতে থাকে।
- মাংসের উপর রক্তের ছিটা দেখা যায়।
চিকিৎসা: সাধারণত ভাইরাসজনিত রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।
প্রতিকার: গামবোরো রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা ব্যবহার করতে হবে।
(২) হাঁসের রোগ ও প্রতিকার
ক) ডাক প্লেগ
ডাক প্লেগ ভাইরাসজনিত একটি হেঁয়াচে রোগ। মৃত্যুর ৮০-৯০ ভাগ।
লক্ষণ:
- হাঁসের চোখ দিয়ে পানি ঘরে।
- চাল ধোয়া পানির মতো খোলা পায়খানা করে।
- মাঝে মাঝে নলাত, মাঝে মাঝে সবুজ পায়খানা করে।
- পা অবশ হয়ে যায় এবং এক জায়গায় চুপচাপ বসে থাকবে, ঝিমাবে।
চিকিৎসা: দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।
প্রতিকার: ডাক প্লেগের ভ্যাকসিন দিতে হবে।
খ) ডাক কলেরা
ডাক কলেরা ব্যাকটেরিয়া হলো জনিত রোগ।
লক্ষণ:
- তরল পায়খানা হবে।
- ঘন ঘন পায়খানা কৰে।
- মৃত্যুহার ৮০-৯০ ভাগ।
চিকিৎসা: অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
প্রতিকার: ডাক কলেরার ভ্যাকসিন দিতে হবে।
[সূত্র: এনসিটিবি]