Skip to content

কাঁঠাল গাছের বৈশিষ্ট্য এবং কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি ও কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা সমূহ

কাঁঠাল গাছের বৈশিষ্ট্য এবং কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি ও কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা সমূহ

নিম্নে কাঁঠাল গাছের বৈশিষ্ট্য এবং কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি ও কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা সমূহ তুলে ধরা হলো-

(১) কাঁঠাল গাছের বৈশিষ্ট্য

চিত্র- কাঁঠাল গাছ
চিত্র- কাঁঠাল গাছ

কাঁঠাল আামাদের জাতীয় ফল। এটি খুবই সুলত্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। অন্য সব ফলের চেয়ে কাঁঠাল আকারে বড়। কাঁঠাল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus.

  • কাঠাল একটি বি-বীজপত্রী, কাঠ ও চিরহরিৎ বৃক্ষ।
  • কাঁঠাল গাছের উচ্চতা ২১ মিটার পর্যন্ত হয়।
  • কাঠ শক্ত হলদে রঙের হয়। বীজ সাদা ও ফুল সবুজ রঙের হয়। পাতা সরল, ডিম্বাকৃতি এবং সবুজ।
  • বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে বা কলম পদ্ধতিতে চারা তৈরি করে রোপণ করা হয়ে থাকে। শ্রাবণ-ভাদ্র মাস কাঁঠালের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়।
  • কাঠাল সাধারণত বছরে একবার ফল দেয়। 

বাংলাদেশে কাঁঠালের অনুমোদিত জাত কম। কেবল বারি উদ্ভাবিত কয়েকটি জাত ও লাইন রয়েছে।

কোয়ার গুণের ভিত্তিতে কাঁঠালকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়-

  1. খাজা কাঁঠাল: এসব কাঠালের কোয়া শক্ত।
  2. আধারসা কাঁঠাল: এসব কাঁঠালের কোয়া মুখের দিকে শক্ত কিন্তু পিছনের দিকে নরম।
  3. গলা কাঁঠাল: এসব কাঁঠালের কোয়া নরম। মুখে দিলেই গলে যায়।

(২) কাঁঠালের গুরুত্ব

বাংলাদেশের সব জেলাতেই কাঁঠালের চাষ হয়। গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহের ভাওয়াল এলাকায় কাঁঠালেরবাগান করা হয়। সিলেট, চট্টগ্রাম ও রংপুর এলাকায় কাঁঠাল চাষ করা হয়। কাঁঠাল লাল মাটির উঁচু জমিতে ভালো জন্যে। এ উদ্ভিদের কাঠ ও ফলের প্রচুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কাঁঠাল কাঠ এবং পুষ্টির জন্য এর ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • কাঁঠাল একটি বহুবিধ ব্যবহার উপযোগী উদ্ভিদ।
  • পাকা কাঁঠালের রসাল কোয়া খুবই মিষ্টি। শর্করা ও ভিটামিনের অভাব মেটাতে পাকা কাঁঠালের জুড়ি মেলা ভার।
  • কাঁচা কাঁঠাল এবং কাঁঠাল বীজ সবজি হিসেবে ব্যবহার হয়।
  • কাঁঠাল কাঠ খুবই উন্নত মানের। এর রং গাঢ় হলুদ। এ কাঠ খুবই টেকসই এবং ভালো পলিশ নেয়।বাসগৃহের জানালা ও দরজা তৈরিতে এ কাঠ ব্যবহৃত হয়। ঘরের সব রকম আসবাবপত্র তৈরিতে কাঠাল কাঠ ব্যবহার করা যায়।
  • কাঁঠাল পাতা দুর্যোগকালীন সময়ে গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়।
See also  কাঁঠাল চাষে সেচ পদ্ধতি

(৩) কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি ও কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা সমূহ

ক) জমি নির্বাচন ও জমি তৈরি

  • বন্যামুক্ত সব ধরনের মাটিতে কাঁঠালের চাষ হয়। তবে পলি-দোআঁশ বা অল্প লালমাটির উঁচু জমিতে কাঁঠাল চাষ খুব ভালো হয়।
  • কাঁঠালের জমি কয়েকবার লাঙ্গল ও মই দিয়ে ভালোভাবে তৈরি করতে হয়।
  • চারা রোপণের একমাস আগে ১০ মিটার দূরে দূরে ১ মিটার x ১মিটার x ১ মিটার আকারে গর্ত তৈরি করতে হবে।
  • গর্ত তৈরির সময় উপরের ও নিচের মাটি আলাদা রাখতে হবে। এবার গর্তে জমাকৃত উপরের মাটি নিচে দিয়ে নিচের মাটির সাথে সার মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। সারের পরিমাণ হবে – পচা গোবর ২০ কেজি, হাড়ের গুঁড়া ৪০০ গ্রাম অথবা টিএসপি ১৫০ গ্রাম, ছাই ২ কেজি অথবা এমওপি ১৫০ গ্রাম।

খ) চারা রোপণ ও রোপণ পরবর্তী পরিচর্যা

চিত্র- কাঁঠালের চারা রোপণ
চিত্র- কাঁঠালের চারা রোপণ
  • বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে বা কলম পদ্ধতিতে চারা করে রোপণ করা হয়। চারা রোপণের জন্য শ্রাবণ-ভাদ্র মাস উপযুক্ত সময়।
  • চারা রোপণের পর গোড়ার মাটি কিছুটা উঁচু করে দিতে হয়।
  • খরা মৌসুমে প্রয়োজনে পানি সেচ দিতে হবে। মাঝে মাঝে গোড়ার মাটি খুঁচিয়ে আলগা করে দিতে হবে।

গ) সার প্রয়োগ

  • কাঠাল গাছে প্রতি বছর সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • ২-৫ বছর বয়সের গাছে গোবর সার ৩০ কেজি, ইউরিয়া ২০০ গ্রাম, টিএসপি ১৫০ গ্রাম এবং এমওপি ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে।
  • ফলবর্তী গাছে পচা গোবর ৫০ কেজি, ইউরিয়া ৮০০ গ্রাম, টিএসপি ৫০০ গ্রাম এবং এমওপি ৮০০ গ্রাম হারে প্রয়োগ করতে হবে।

ঘ) ফল সংগ্রহ

চিত্র- কাঁঠাল ফল
চিত্র- কাঁঠাল ফল
  • কাঁঠাল গাছে জাতভেদে ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ফুল আসে এবং ফল ধরার তিন মাসের মধ্যে কাঁঠাল পুষ্ট হয়।
  • ফল পরিপক্ক হলে গায়ের কাঁটাগুলো ভোঁতা হয়ে যায় এবং বোঁটার কষ পাতলা হয়। তাছাড়া টোকা দিলে টন টন শব্দ হয়।
See also  কাঁঠালের উপকারিতা, কাঁঠাল গাছের বৈশিষ্ট্য, কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা ও কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি

প্রিয় পাঠক বন্ধু, আমরা উপরোক্ত আলোচনাটিতে আমরা কাঁঠাল গাছের বৈশিষ্ট্য এবং কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি ও কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা সমূহ জানলাম, পরবর্তী পোষ্টে কাঁঠালের উপকারিতা সমূহ নিয়ে আলাদা একটি পোষ্ট আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব, ইংশাআল্লাহ। সাথেই থাকার জন্য, ধন্যবাদ।

[সূত্র: এনসিটিবি]

Leave a Reply

nv-author-image

inbangla.net/krisi

Everything related to animal and plants in the Bangla language!View Author posts