হাদিস শব্দের অর্থ কথা, কাজ, বাণী, বার্তা, সংবাদ ইত্যাদি। রাসুল (স:) এর নবুয়াতী জীবনের সকল বাণী, কাজ, মৌনসম্মতি এবং অনুমোদনকে হাদীস বলে। মূল বক্তব্য হিসাবে হাদীস তিন প্রকার। যথা- কাওলী হাদীস: রাসুল (স:) এর পবিত্র মুখের বানীই কাওলী হাদীস। ফিলী হাদীস: যে কাজ রাসূল (স:) স্বয়ং করেছেন এবং সাহাবীগণ তাRead more
হাদিস শব্দের অর্থ কথা, কাজ, বাণী, বার্তা, সংবাদ ইত্যাদি। রাসুল (স:) এর নবুয়াতী জীবনের সকল বাণী, কাজ, মৌনসম্মতি এবং অনুমোদনকে হাদীস বলে।
মূল বক্তব্য হিসাবে হাদীস তিন প্রকার। যথা-
- কাওলী হাদীস: রাসুল (স:) এর পবিত্র মুখের বানীই কাওলী হাদীস।
- ফিলী হাদীস: যে কাজ রাসূল (স:) স্বয়ং করেছেন এবং সাহাবীগণ তা বর্ণনা করেছেন তাই ফিলী হাদীস।
- তাকরীরী হাদীস: সাহাবীদের যে সব কথাও কাজের প্রতি রাসূল (স:) সমর্থন প্রদান করেছেন তাহাই তাকরীরী হাদীস।
রাবীদের সংখ্যা হিসেবে হাদীস তিন প্রকার। যথা-
- খবরে মুতাওয়াতির: যে হাদীস এত অধিক সংখ্যক রাবী বর্ণনা করেছেন যাদেও মিথ্যার উপর একমত হওয়া অসম্ভব।
- খবরে মাশহুর: প্রত্যেক যুগে অন্তত: তিনজন রাবী রেওয়ায়েত করেছেন,তাকে খবরে মাশহুর বলে, তাকে মুস্তাফিজ ও বলে।
- খবরে ওয়াহেদ বা খবরে আহাদ: হাদীস গরীব আজিজ এবং খবরে মাশহুর এ তিন প্রকারের হাদীদকে একত্রে খবরে আহাদ বলে, প্রত্যেকটিকে পৃথক পৃথকভাবে খবরে ওয়াহিদ বলে।
রাবীদের সিলসিলা হিসেবে হাদীস তিন প্রকার। যথা-
- মারফু হাদীস: যে হাদীসের সনদ রাসুল(স:) পর্যন্ত পৌছাইয়াছে তাকে মারফু হাদীস বলে।
- মাওকুফ হাদীস: যে হাদীসের সনদ সাহাবী পর্যন্ত পৌছাইয়াছে তাকে মাওকুফ হাদীস বলে।
- মাকতু হাদীস: যে হাদীসের সনদ তাবেয়ী পর্যন্ত পৌছাইয়াছে তাকে মাকতু হাদীস বলে।
রাবী বাদ পড়া হিসাবে হাদীস দুই প্রকার। যথা-
- মুত্তাছিল হাদীস: যে হাদীসের সনদের ধারাবাহিকতা সর্বস্তরে ঠিক রয়েছে কোথা ও কোন রাবী বাদ পড়ে না তাকে মুক্তাছিল হাদীস বলে।
- মুনকাতে হাদীস: যে হাদীসের সনদের মধ্যে কোন রাবীর নাম বাদ পড়েছে তাকে মুনকাতে হাদীস বলে।
মুনকাতে হাদীস তিন প্রকার। যথা-
- মুরসাল হাদীস: যে হাদীসে রাবীর নাম বাদ পড়া শেষের দিকে অথাৎ সাহাবীর নামই বাদ পড়েছে তাকে মুরসাল হাদীস বলে।
- মুয়াল্লাক হাদীস: যে হাদীসের সনদের প্রথম দিকে রাবীর নাম বাদ পড়েছে অথার্ৎ সাহাবীর পর তাবেয়ী তাবে তাবেয়ীর নাম বাদ পড়েছে তাকে মুয়াল্লাক হাদীস বলে।
- মুদাল হাদীস: যে হাদীসে দুই বা ততোধীক রাবী ক্রমান্বয়ে সনদ থেকে বিলুপ্ত হয় তাকে মুদাল হাদীস বলে।
বিশ্বস্ততা হিসেবে হাদীস তিন প্রকার। যথা-
- সহীহ হাদীস: যে হাদীসের বর্ণনাকারীদের বর্ণনার ধারাবাহিকতা রয়েছে, সনদের প্রতিটি স্তরে বর্ণনাকারীর নাম, বর্ণানাকারীর বিশ্বস্ততা, আস্তাভাজন, স্বরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর কোনস্তরে তাদের সংখ্যা একজন হয়নি তাকে সহীহ হাদীস বলে।
- হাসান হাদীস: সহীহ সবগুনই রয়েছে, তবে তাদের স্বরণ শক্তির যদি কিছুটা দুর্বলতা প্রমাণিত হয় তাকে হাসান হাদীস বলে।
- যায়ীফ হাদীস: হাসান, সহীহ হাদীসের গুন সমুহ যে হাদীসে পাওয়া না যায় তাকে যায়ীফ হাদীস বলে।
হাদীসের আরও কিছু প্রকার। যথা-
- আযীয হাদীস: যে হাদীস প্রত্যেক যুগে অন্তত: দুজন রাবী রেওয়ায়েত করেছেন, তাকে আযীয হাদীস বলে।
- গরীব হাদীস: যে হাদীস কোন যুগে মাত্র একজন রাবী বর্ণনা করেছেন। তাকে গরীব হাদীস বলে।
- হাদীসে কুদসী: যে হাদীসের মুল বক্তব্য আল্লাহ সরাসরি রাসূল (স:) কে ইলহাম বা স্বপ্ন যোগে জানিয়ে দিয়েছেন, রাসূল (স:) নিজ ভাষায় তা বর্ণনা করেছেন তাকে হাদীসে কুদসী বলে।
- মুদাল্লাছ হাদীস: যে হাদীসের সনদের দোষ ক্রটি গোপন করা হয় তাকে মুদাল্লাছ হাদীস বলে।
হাদীসের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কিছু সংজ্ঞা। যথা-
- সুনান: হাদীসের ঐ কিতাবকে সুনান বলা হয় যা ফিক্হ এর তারতীব অনুয়াযী সাজানো হয়েছে।
- সুনানে আরবায়া: আবুদাউদ শরীফ + নাসায়ী শরীফ + তিরমীযী শরীফ + ইবনে মাজায় শরীফ, এই চার হাদীস গ্রন্থকে এক সাথে সুনানে আরবায়া বলা হয়।
- মুসনাদ: হাদীসের ঐ কিতাবকে বলা হয় যা সাহাবায়ে কিরামের তারতীব অনুয়াযী লিখা হয়েছে।
- সহীহাইন: বুখারী শরীফ ও মুসলীম শরীফকে এক সাথে সহীহাইন বলা হয়।
- মুত্তাফাকুন আলাইহি: ইমাম বুখারী (রহ:) ইমাম মুসলিম (রহ:) উভয়ে একই সাহাবী হতে যে হাদীস স্ব-স্ব প্রান্তে সংকল করেছেন তাকে মুত্তাফাকুন আল্লাইহি বলে।
- জামে: যে গ্রন্থে হাদীস সমূহকে বিষয় বস্তু অনুসারে সাজানো হয়েছে এবং যার মধ্যে আকাইদ ছিয়ার তাফসির আহকাম, আদব, ফিতান, রিকাক ও মানাকিব এ আটটি অধ্যায় রয়েছে তাকে জামে বলা হয়। যেমন- জামে তিরমিযী।
- সনদ: হাদীস বর্ণনা কারীদের ধারাবাহিকতাকে সনদ বলে,
- মতন: হাদীসের মূল শব্দ সমূহকে মতন বলে।
- রেওয়ায়েত: হাদীস বর্ণনা করাকে রেওয়ায়েত বলে।
- দেরায়েত: হাদীসের মতন বা মূল বিষয়ে আভ্যান্তরীন সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে যুক্তির কষ্টিপাথরে যে সমালোচনা করা হয় তাকে দেরায়েত বলে।
- রিজাল: হাদীস বর্ণনাকারীর সমষ্টিকে রিজাল বলে।
- শায়খাইন: মুহাদ্দিসদের পরিভাষায় ইমান বুখারী (রহ:) ও মুসলিম (রহ:) কে শায়খাইন বলে।
- হাফিজ: যে ব্যাক্তি সনদও মতনের সকল বৃত্তান্ত সহ এক লক্ষ হাদীস মুখস্ত জানেন তাকে হাফিজ বলে।
- হুজ্জাত: যে ব্যাক্তি সদন ও মতনের সকল বৃন্তান্ত সহ তিন লক্ষ্য হাদীস মুখস্ত জানেন তাকে হুজ্জাত বলে।
- হাকিম: যে ব্যাক্তি সনদ ও মতনের সকল বৃত্তান্ত সহ সকল হাদীস মুখস্থ করেছেন তাকে হাকিম বলে।
সিহাহ সিত্তা: সিহাহ্ অর্থ বিশুদ্ব, সিত্তাহ অর্থ ছয়। সিহা সিত্তা এর আভিধানিক অর্থ হল ছয়টি বিশুদ্ব ইসলামী পরিভাষায় হাদীস শাসের ছয়টি নির্ভূল ও বিশুদ্ব হাদীস গ্রন্থকে এক কথায় সিহাহ্ সিত্তা বলা হয়। সিহাহ সিত্তাহ এর ৬ টি কিতাব হলো, সহীহ বুখারী + সহীহ মুসলিম + তিরমিযী শরীফ + নাসাঈ শরীফ + আবু দাউদ শরীফ + সুনানে ইবনে মাজাহ।
See less
নিম্ন লিখিত কারণে ওযু ভঙ্গ হয়- শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে। যে কোন অবস্থায় তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে। প্রস্রাব বা পায়খানা করলে। মুখ ভরে বমি হলে। পায়খানা প্রস্রাবের পথ দিয়ে কোন কিছু বের হলে। জ্ঞান হারালে। পাগল বা মাতাল হলে। নামাযের মধ্যে উচ্চস্বরে হাসলে। গুহ্যদ্বার দিযRead more
নিম্ন লিখিত কারণে ওযু ভঙ্গ হয়-
- শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।
- যে কোন অবস্থায় তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে।
- প্রস্রাব বা পায়খানা করলে।
- মুখ ভরে বমি হলে।
- পায়খানা প্রস্রাবের পথ দিয়ে কোন কিছু বের হলে।
- জ্ঞান হারালে।
- পাগল বা মাতাল হলে।
- নামাযের মধ্যে উচ্চস্বরে হাসলে।
- গুহ্যদ্বার দিয়ে কৃমি বের হলে ।
- স্বামী-স্ত্রীর গোপন অঙ্গ একত্রে মিলিত হলে।
See less