ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজিকে বাংলা ভাষার রক্ষাকর্তা বলা হয়। হাজার বছর আগে বাঙ্গালি জাতির মুখের ভাষা ‘বাংলা’কে কেড়ে নিয়েছিল দক্ষিণ ভারত থেকে আগত সেন রাজারা। সেন রাজাদের হিন্দু পণ্ডিতরা নির্দেশ জারি করেছিল, ‘যারা বাংলা ভাষা বলবে ও শুনবে তারা রৌরব নামক নরকে যাবে।’ ওই সময় তুর্কি বংশোদ্ভূRead more
ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজিকে বাংলা ভাষার রক্ষাকর্তা বলা হয়।
হাজার বছর আগে বাঙ্গালি জাতির মুখের ভাষা ‘বাংলা’কে কেড়ে নিয়েছিল দক্ষিণ ভারত থেকে আগত সেন রাজারা। সেন রাজাদের হিন্দু পণ্ডিতরা নির্দেশ জারি করেছিল, ‘যারা বাংলা ভাষা বলবে ও শুনবে তারা রৌরব নামক নরকে যাবে।’ ওই সময় তুর্কি বংশোদ্ভূত ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি নির্যাতিত বাঙালিদের মুক্ত করতে এগিয়ে আসেন এবং ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ১৮ জন ঘোড়সওয়ারি নিয়ে সেন রাজাকে পরাজিত করে বাংলাকে স্বাধীন করেন। বক্তারা বলেন, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয়ের মাধ্যম সেই দিন শুধু ভূমির বিজয় হয়নি, সঙ্গে মুক্ত হয়েছিল বাঙ্গালিদের মুখের ভাষা ‘বাংলা’।
ভাষাবিদ দীনেশ চন্দ্র সেন বলেন, “মুসলমান সম্রাটরা বর্তমান বঙ্গ-সাহিত্যের জন্মদাতা বললে অত্যুক্তি হয় না। বঙ্গ-সাহিত্য মুসলমানদেরই সৃষ্ট, বঙ্গ-ভাষা বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা।”
অধ্যাপক ও গবেষক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, “যদি বাংলায় মুসলিম বিজয় ত্বরান্বিত না হতো এবং এ দেশে আরও কয়েক শতকের জন্য পূ্র্বের শাসন অব্যাহত থাকত, তবে বাংলা ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যেত এবং অবহেলিত ও বিস্মৃত-প্রায় হয়ে অতীতের গর্ভে নিমজ্জিত হতো।”
মধ্যযুগে মুসলিম শাসকদের রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাষার যে সাহিত্যচর্চা শুরু হয়, তার মাধ্যমে বাংলা ভাষা একটি পরিপূর্ণ ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশের যোগ্যতা অর্জন করে।
বাংলা ভাষাকে কলুষিত করার চেষ্টা যুগে যুগে আরও হয়। ১৮০০ সনে ব্রিটিশরা কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করে বাংলা ভাষার আরবি ও ফারসি শব্দ বাদ দিয়ে সংস্কৃত শব্দ প্রবেশের উদ্দেশ্যে সাহিত্যচর্চা শুরু করে। তারা দেখাতে চায়—বাংলা ভাষার সঙ্গে মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই।
মুসলিমদের হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রচার করা হয়, বাংলা ভাষায় প্রথম কুরআন মাজিদ অনুবাদ নাকি গিরিশ চন্দ্র সেন করেছেন। অথচ ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে গিরিশ চন্দ্র সেনের অনুবাদের বহু আগে ১৮০৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা ভাষায় কুরআন মাজিদের আংশিক অনুবাদ করেন মাওলানা আমিরুদ্দিন বসুনিয়া। এরপর ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে মৌলবি নাঈমুদ্দিন পূরো কুরআনের বাংলা অনুবাদ সম্পন্ন করেন। অথচ এ ইতিহাস প্রচার করা হয় না।
[সূত্র: খন্দকার কামরুল হুদা, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও শেখ মুজিব, ১৯৯৫, পৃ. ৩২, বাংলাপিডিয়া]
See less
অক্ষর কাকে বলে: অক্ষর বলতে বর্ণ বা হরফকে বুঝায়। তবে প্রকৃত অর্থে অক্ষর ও বর্ণ পরস্পরের প্রতিশব্দ বা সমার্থক শব্দ নয়। ইংরেজিতে যাকে Syllable বলে আমরা জানি, তাই অক্ষর। যেমন – ইংরেজি Incident শব্দে “In-ci-de-nt” এ চারটি সিলেবল আছে। এগুলোই হলো অক্ষর। তবে আলাদাভাবে ” I-n-c-i-d-e-n-t” এগুলো অক্ষর নয়। এগুলRead more
অক্ষর কাকে বলে: অক্ষর বলতে বর্ণ বা হরফকে বুঝায়। তবে প্রকৃত অর্থে অক্ষর ও বর্ণ পরস্পরের প্রতিশব্দ বা সমার্থক শব্দ নয়। ইংরেজিতে যাকে Syllable বলে আমরা জানি, তাই অক্ষর। যেমন – ইংরেজি Incident শব্দে “In-ci-de-nt” এ চারটি সিলেবল আছে। এগুলোই হলো অক্ষর। তবে আলাদাভাবে ” I-n-c-i-d-e-n-t” এগুলো অক্ষর নয়। এগুলো বর্ণ বা হরফ। তেমনি বাংলাতে বন্ধন শব্দের বন্ + ধন্ এ দুটি অক্ষর।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এর মতে, “কোন শব্দে যখন যে ধ্বনিসমষ্টি এক সময়ে একত্রে উচ্চারিত হয়, তাহাকে অক্ষর বলে।”
মুহম্মদ আব্দুল হাই এর মতে, “নিঃশ্বাসের স্বল্পতম প্রয়াস একই বক্ষঃস্পন্দনের ফলে যে ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ একেবারে উচ্চারিত হয়, তাকেই সিলেবল বা অক্ষর বলে।”
শ্রী অমূল্যধন মুখোপাধ্যায়ের মতে, “বাগযন্ত্রের স্বল্পতম প্রচেষ্টায় উচ্চারিত ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকেই অক্ষর বলে।”
See less